|
|
|
|
জাল সই কাণ্ড |
শেষ পর্যন্ত পুলিশে অভিযোগ পুরকর্তার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ে অবশেষে জাল সই কাণ্ডে পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন মেদিনীপুরের পুর কর্তৃপক্ষ। সোমবার রাতে মেদিনীপুর কোতয়ালি থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে। উপপুরপ্রধান যে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন, সেখানে অমিতাভ মল্লিক ওরফে লাল্টু নামে এক জনের নাম রয়েছে। পুরপ্রধানের অভিযোগপত্রে অবশ্য এই ব্যক্তির পাশাপাশি প্রাক্তন উপপুরপ্রধান সুভাষময় ঘোষ, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর কৃষ্ণা ঘোষ (সুভাষময়বাবুর স্ত্রী) এবং উৎপল চট্টোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ মামলাও শুরু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত অবশ্য কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
অবৈধভাবে জলের সংযোগ দেওয়ার জন্য পুরসভার স্ট্যাম্প এবং রসিদ জাল করার অভিযোগ ঘিরেই ক’দিন ধরে শোরগোল চলছে মেদিনীপুরে। জলের সংযোগের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অর্থ দিলেও তা পুরসভার জমা পড়েনি। এমন অভিযোগ এসেছিল ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। কংগ্রেস-তৃণমূল দু’দলের নেতৃত্ব এ জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করান ওয়ার্ড কাউন্সিলর কৃষ্ণাদেবীকে। কাউন্সিলরের অবশ্য বক্তব্য, “জলের সংযোগ দেওয়ার সময় কাউন্সিলর শুধু নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট দেন। বাকি কাজ পুরসভা করে। মানুষকে ভুল বোঝাতে এই অপপ্রচার।”
মেদিনীপুর পুরসভা কংগ্রেস ও তৃণমূলের দখলে। পুরপ্রধান পদে রয়েছেন তৃণমূলের প্রণব বসু। উপ-পুরপ্রধান পদে কংগ্রেসের এরশাদ আলি। অবৈধ ভাবে জলের সংযোগ দেওয়ার জন্য দু’জনেরই সই জাল করা হয়েছে। তবে, দু’জনেই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে গড়িমসি করছিলেন বলে অভিযোগ। পুরপ্রধান এবং উপ-পুরপ্রধানের এই অবস্থান ঘিরে দুই দলের অন্দরেও নানা প্রশ্ন ওঠে। কংগ্রেস এবং তৃণমূল নেতৃত্বউভয়ই এই কাণ্ড থেকে নিজ-নিজ দলকে দূরে সরিয়ে রাখতে তৎপর হন। বিশেষ করে সামনে পুরসভা নির্বাচন রয়েছে। এই অবস্থায় দলের কারও গায়ে ‘দুর্নীতির ছাপ’ পড়লে যে নির্বাচনে তার প্রভাব পড়বে, তা বুঝেই এই পদক্ষেপ। পুরপ্রধান বলেন, “সোমবার রাতে অভিযোগ জানিয়েছি। সই জাল করে পুরসভার প্রাপ্য লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এটা দুষ্টচক্রেরই কাজ।” অন্য দিকে, উপপুরপ্রধান এরশাদ আলি বলেন, “সোমবার রাতে আমিই অভিযোগ জানাই। তারপর পুরপ্রধান অভিযোগ জানিয়েছেন বলে শুনেছি।”
১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং প্রাক্তন উপপুরপ্রধান সুভাষময়বাবু ছাড়া পুরপ্রধান বাকি যে দু’জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন, তাঁদের মধ্যে উৎপলবাবু পুরসভার লাইসেন্সপ্রাপ্ত ঠিকাদার। অবৈধভাবে বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে যাঁকে আগেই ছ’মাসের জন্য সাসপেন্ড করেছে পুরসভা। অন্য জন অমিতাভ মল্লিক, ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত। অভিযোগ, এই ব্যক্তিই সই জাল করে অর্থ আদায় করেছেন। পুরপ্রধানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রাক্তন উপপুরপ্রধান সুভাষময়বাবুর প্রতিক্রিয়া, “তদন্ত হলে এই কাণ্ডের সঙ্গে কে কে জড়িত, তা মানুষের কাছে স্পষ্ট হবে।” |
|
|
|
|
|