চিতাবাঘের দেহ উদ্ধার চা বাগানে
ট বছরের একটি স্ত্রী চিতাবাঘের মৃতদেহ উদ্ধার হল চা বাগান এলাকা থেকে। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির অর্ড চা বাগান থেকে চিতাবাঘের দেহটি বনকর্মীরা উদ্ধার করেন। বিষক্রিয়ায় সেটির মৃত্যু হয়েছে বলে বন দফতরের সন্দেহ। স্ত্রী চিতাবাঘটিকে পরীক্ষা করে বনাধিকারিকরা জানান সম্প্রতি চিতাবাঘটি শাবক প্রসব করেছে। চা বাগানের আশেপাশেই সেগুলি রয়েছে বলে তাঁদের ধারণা। সে কারণে ওই এলাকা তথা পানিঘাটা রেঞ্জের আধিকারিককে বিষয়টি নজরে রাখতে বলা হয়েছে। তা ছাড়া লাগোয়া এলাকা গোর্খা টেরিটরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অধীনে হওয়ায় তাদের বন বিভাগেও খবর দেওয়া হয়েছে। বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “কী ভাবে চিতাবাঘটি মারা গিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” তিনি জানান, বিষ প্রয়োগে চিতাবাঘের মতো বণ্যপ্রাণের মৃত্যুর ঘটনা এড়াতে বাসিন্দাদের সচেতন করা হয়। তবে তা অনেক ক্ষেত্রেই ফলপ্রসূ হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে বনকর্তারা জানতে পেরেছেন সোমবার রাতে চিতাবাঘটি চিৎকার করেছে। সকাল ১০ টা নাগাদ বাগানে চিতাবাঘের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে বাসিন্দারা বনকর্মীদের খবর দেন। বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, এর আগে ২০০৯ সালে ত্রিহানা চা বাগানে বিষক্রিয়ায় একটি চিতাবাঘের মৃত্যু হয়েছিল।
মঙ্গলবার অর্ড চা বাগানে বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
ময়নাতদন্ত থেকেও বিষয়টি বনকর্তাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছিল। গৃহপালিত পশু মেরে খেয়ে চিতাবাঘ অনেক সময় তার একাংশ ফেলে রেখে যায়। বাসিন্দারা তাতে কীটনাশক মিশিয়ে রাখেন বলে অভিযোগ। তবে এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। এদিন চিতাবাঘটি কোথায় মারা গিয়েছে তা বনকর্তারা অনেকেই স্পষ্ট করে জানতেন না। সুকনায় বনবিভাগের অফিসে বৈঠকে যোগ দিয়ে গিয়ে মন্ত্রী বিষয়টি তাঁদের কাছে জানতে চান। অথচ কেউ পরিষ্কার করে তাঁকে বলতে পারেননি। এক বনাধিকারক জানান, ত্রিহানা চা বাগানে চিতাবাঘটির দেহ পাওয়া গিয়েছে। পরে জানা যায়, সেটির দেহ উদ্ধার হয়েছে অর্ড চা বাগান থেকে। সুকনা বণ্যপ্রাণ স্কোয়াডের রেঞ্জ ওয়ার্ডেন কাঞ্চন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অর্ড চা বাগান থেকে পাওয়া চিতাবাঘের মৃতদেহটি ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ভিসেরা পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।”
অন্য দিকে আজ, বুধবার থেকে বাঘ সুমারি শুরু হচ্ছে বক্সা ব্যাঘ্র সরক্ষণ প্রকল্পের এলাকায়। ২০১০ সালে সেখানে শেষ সুমারি হয়েছিল। তাতে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে বলে দাবি করে বনদফতর। যদিও বাঘের ছবি সুমারির কাজে যুক্ত বনকর্মীরা কেউ পাননি। পায়ের ছাপ, মল পরীক্ষা করেই তা জানা গিয়েছে বলে তাঁরা দাবি করেন। বনমন্ত্রী জানান, এ বছর বক্সা ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের কোর এলাকাগুলিতে ঢুকবেন বন কর্মীরা। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যদেরও রাখা হচ্ছে। ১৫ দিন ধরে বাঘ গণনা চলবে। শেষ সুমারিতে এখানে ১৯ টি বাঘ রয়েছে বলে তথ্য মিলেছিল। জবর দখল হয়ে যাওয়া বনাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা উদ্ধারে তিনি তৎপর বলে জানান হিতেনবাবু। তাঁর কথায়, গজলডোবা, বৈকুন্ঠপুর এলাকায় বনাঞ্চলের জমি দখল করে বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। তাঁদের পুনর্বাসন দিয়ে বিকল্প জায়গায় সরানোর চেষ্টা হচ্ছে। তা ছাড়া ওই এলাকায় গাছ লাগানোর মতো বন দফতরের বিভিন্ন প্রকল্পে ওই বাসিন্দাদের সামিল করা হবে। বন বিভাগের নিরাপত্তা কর্মী, রেঞ্জ অফিসার এবং বিট অফিসারের পদে ৩০ শতাংশ পদ ফাঁকা রয়েছে। সে কারমেও বিভিন্ন কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে সমস্যা রয়েছে। অর্থ দফতরের অনুমোদন পেলে ওই পদগুলিতে কর্মী-আধিকারিক নিয়োগ করা হবে বলে জানান বনমন্ত্রী। ডুয়ার্সে বনাঞ্চলে ট্রেনের ধক্কায় বণ্যপ্রাণীর মৃত্যু নিয়েও শীঘ্রই রেলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। বনমন্ত্রীর কথায়, সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত প্রস্তাবিত রেলপথের কাজ নিয়ে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল আসবে। তারা বক্সা ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের এলাকায় যাবেন। বন দফতরের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। রেল লাইনে হাতির মৃত্যু ঠেকাতে কী করণীয় তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.