নিউ টাউনের ইকো পার্কের মধ্যেই এ বার তৈরি হচ্ছে ইকো ডাইভার্সিটি পার্ক। বাংলার গাছ-গাছালি থেকে শুরু করে জীব বৈচিত্রকে চেনা যাবে এখানে। হিডকোর দাবি, শহরে এ রকম পার্ক এই প্রথম। এমনকী, দেশেও ইকো ডাইভার্সিটি পার্ক বেশি নেই। হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন, “এই পার্কটি তৈরি করার বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যেই পরিবেশ দফতরের বায়ো ডাইভার্সিটি বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের পরিকল্পনাতে ইকো পার্কের ভিতরেই এই নতুন ধরনের পার্ক তৈরি হবে। আজকের প্রজন্মরে কাছে বাংলার জীববৈচিত্র ও ইকো সিস্টেমকে তুলে ধরতেই এই নতুন ধরনের পার্ক তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতাও তৈরি করবে এই ইকো ডাইভার্সিটি পার্ক।”
গত বছর ডিসেম্বর মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ইকো পার্কের উদ্বোধন করে নাম দিয়েছিলেন ‘প্রকৃতি তীর্থ’। উদ্বোধনের পর থেকেই সেখানে মানুষের ঢল নামে। বিশেষ করে ইংরেজি নববর্ষের দিন বা ছুটির দিনে এখানে ভিড় করে সাধারণ মানুষ। ৪৮০ একর জমির উপরে এই পার্কের ২০০ একর জলাশয়ে রয়েছে বোটিংয়ের সুবিধা। আছে গোলাপ থেকে শুরু করে নানা ধরনের ফুলের বাগানও। দেবাশিসবাবু জানান, ইকো পার্কে প্রচুর কমবয়সী ছেলেমেয়েরা ভিড় করছেন। এই ভিড় দেখেই আমরা ইকো পার্কের মধ্যে ইকো ডাইভার্সিটি পার্ক তৈরির চিন্তা করি। এখানে বাংলার গাছপালা থেকে শুরু করে ঘাস, পাখি, পোকামাকড়, মাছের সঙ্গে দর্শকদের পরিচয় করানো হবে। কোন গাছের কত বয়স বা কোন পাখি বাংলার কোথায় পাওয়া যায়, তা-ও জানতে পারবেন দর্শকেরা। দেবাশিসবাবু জানান, শহরে বা শহরতলিতে বড় হওয়া ছেলেমেয়েরা অনেকেই গ্রামবাংলার পরিবেশ সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। বাংলার জীব বৈচিত্র সম্পর্কেও ধারণা কম। তাই ইকো ডাইভার্সিটি পার্ককে ইকো পার্কের মধ্যেই তৈরি করা হবে। আজকের প্রজন্মকে শুধু বাংলার জীব বৈচিত্র সম্পর্কে ধারণা দেওয়াই নয়, এই জীববৈচিত্র ও পরিবেশকে কী ভাবে বাঁচিয়ে রাখতে হবে, সে সম্পর্কে সচেতনতাও তৈরি করবে এই পার্ক। পশ্চিমবঙ্গের বায়ো ডাইভার্সিটি বোর্ডের চেয়ারম্যান অশোককান্তি স্যানাল বলেন, “সুন্দরবন থেকে দার্জিলিং, সারা রাজ্যের ইকো সিস্টেমকে তুলে ধরাই হবে এই বায়ো ডাইভার্সিটি পার্কের মূল উদ্দেশ্য। এখানে নানা ধরনের গাছপালা থাকবে। নানা মডেল ও উন্নত মানের প্রযুক্তির সাহায্যে বিষয়টি তুলে ধরা হবে।”
হিডকোর আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ইকো ডাইভার্সিটি পার্কটি তৈরি হবে পার্কের জলাশয়ের কাছেই, ফুড স্টলের সামনে। পার্কে তৈরি হবে একতলার একটি কাঠের বাড়ি। সেখানে থাকবে জীব বৈচিত্রের নানা নিদর্শন। দেবাশিসবাবু জানান, ইকো পার্ক তৈরির সময়ে যেমন পরিবেশবান্ধব বিষয়টি খেয়াল রাখা হয়েছিল, ইকো ডাইভার্সিটি পার্ক তৈরির সময়েও সে দিকটিই প্রাধান্য পাবে। যেমন রেললাইন তৈরির জন্য বাতিল করা স্লিপার দিয়ে তৈরি করা হবে কাঠের বাড়িটি। হিডকো জানিয়েছে, রেললাইনের স্লিপার এখন কংক্রিটের তৈরি হচ্ছে। ফলে কাঠের সব স্লিপারই এখন বাতিল। |