অন্তঃসত্ত্বা বধূকে মার, অভিযুক্ত পুলিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চণ্ডীতলা |
এক অন্তঃস্বত্তা বধূকে মারধরের পর জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
আদালতের কোনওরকম নির্দেশ ছাড়া কী করে হাওড়ার জগৎবল্লভপুর থানার পুলিশ ওই বধূকে নিয়ে গেল, সেই প্রশ্ন তুলে চণ্ডীতলা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন বধূর শাশুড়ি।
প্রশাসন সূত্রের খবর, সাগর ঘোষ নামে চণ্ডীতলার দুধকুমড়া গ্রামের এক যুবক হাওড়ার জগৎবল্লভপুর থানা এলাকার এক তরুণীকে বিয়ে করেন সম্প্রতি। কিন্তু সেই বিয়েতে অমত ছিল তরুণীর অভিভাবকদের। এরপর জগৎবল্লভপুর থানায় মেয়ের বাবা তপন মাঝি অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবকের বিরুদ্ধে। যুবকের দাদা সোমনাথ ঘোষ বলেন, “বার বারই আমার ভাইকে ফোনে হুমকি দেওয়া হত মেয়ের বাড়ি থেকে। বিয়েতে আমাদের অমত ছিল না। মেয়েটি স্বেচ্ছায় বিয়ে করে ভাইকে। ওদের যখন বিয়ে হয় মেয়েটি সাবালিকা। হাওড়া কোর্টে ওরা রেজিস্ট্রি করে। এরপরেও পুলিশ তুলে নিয়ে গেল বৌমাকে।”
ওই বধূর বাবা তপন মাঝি অবশ্য বলেন, “আমার মেয়ে সাবালিকা আমি মানছি। কিন্তু ওকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করা হয়। আমি থানায় অপহরণের মামলা করি। পুলিশ কিছু অন্যায় করেনি।” যদিও ওই যুবকের মা গৌরীদেবীর পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, “বাড়িতে কেউ ছিল না। সে সময়ে জগৎবল্লভপুর থানার মেজবাবু অশোক খাঁ একটি গাড়িতে করে লোকজন নিয়ে হাজির হন। আমি বিষয়টি মিটিয়ে নিতে অনুরোধ করি। বলি, ওরা স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছে। কিন্তু আমার থেকে ২৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়। আমি প্রথমে রাজি হয়নি। তারপর ৫ হাজার টাকা দিতে রাজি হই। কিন্তু রফা না হওয়ায় বৌমা চুলের মুঠি ধরে জোর করে নিয়ে যাওয়া হল। ওর পেটে বাচ্চা রয়েছে। বৌমাকে ছেড়ে দিতে বললে ওই পুলিশ অফিসার হুমকি দিয়ে বলেন, তোর ছেলেকে পাতাল থেকে ধরে নিয়ে আসব।”
হাওড়া গ্রামীণ থানা এলাকার এক পুলিশ কর্তা বলেন, “ওই যুবকের বিরুদ্ধে জগৎবল্লভপুর থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে পুলিশের দায়িত্ব ছিল তাঁকে খুঁজে বের করে আদালতে পেশ করা। বুধবার ওই গৃহবধুকে আদালতে তোলা হয়। তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করানো হবে। গোপন জবানবন্দির জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে মারধর, টাকা চাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” হাওড়া জেলা পুলিশের তদন্তকারী অফিসারদের অভিযোগ, ওই ছেলেটিকে বেশ কিছু দিন ধরেই ধরার চেষ্টা হচ্ছিল। চণ্ডীতলা থানাকে জানিয়ে গেলে থানার সঙ্গে যোগসাজসে পালিয়ে যাচ্ছিল। তাই এ বার থানায় না জানিয়েই অভিযান হয়। পরে ওই বধূকে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানানো হয় টেলিফোনে। শ্রীরামপুরের এসডিপিও রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “ওই যুবকের বিরুদ্ধে থানায় মামলার সূত্রেই হাওড়ার পুলিশ বধূকে নিয়ে যায়। পুলিশের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখা হবে।”
|