ভোটে ত্রিপুরা
রাহুলকে পাল্টা কটাক্ষ সিপিএমের
নির্বাচনী প্রচারে এসে কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী ত্রিপুরার বামেদের যে ভাবে সমালোচনা করেছেন, তার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর। বামফ্রন্ট সরকার দুর্নীতিতে নিমজ্জিত, রাহুলের এই অভিযোগ খণ্ডন করে বিজনবাবুর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘যদি রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় প্রকল্প-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে টাকা নিয়ে নয়ছয় করত, তা হলে কিসের ভিত্তিতে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার ত্রিপুরার বামফ্রন্ট সরকারকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২৭টি পুরস্কার দিয়েছেন?’’
চিনের কমিউনিস্টদের প্রসঙ্গ টেনে রাহুল গাঁধী কয়েকটি নির্বাচনী জনসভায় দেশিয় বামপন্থীদের তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। সে প্রসঙ্গে বিজনবাবুর কটাক্ষ, ‘‘রাহুলের কমিউনিজম এবং সমাজতন্ত্রের ধারণাটা পরিষ্কার নয়। এ বিষয়ে আরও পাঠ নিয়ে এখানে আসা উচিত ছিল ওঁর। আমরা তো বাজার অর্থনীতি এবং ভারতীয় সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে থেকেই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সমাজের পরিবর্তন তথা উন্নতি চাইছি।’’ তাঁর কথায়, ‘বাজারের বাস্তবতা’ সিপিএম স্বীকার করে বলেই তো পরিকাঠামোগত উন্নয়ন-সহ বৃহত্তর উৎপাদন ক্ষেত্রে বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগকে (এফডিআই) দল স্বাগত জানিয়েছে। তাঁর কথায়, কিন্তু এ ক্ষেত্রে কিছু কিছু বিষয়ে দলের আপত্তি রয়েছে। যেমন কৃষি, শিক্ষা, দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত গবেষণা, প্রযুক্তি, অস্ত্র উৎপাদন ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাঁরা বিদেশি পুঁজির বিরোধী। এ ছাড়াও, ক্ষুদ্র শিল্পে বা খুচরো ব্যবসায় বিদেশি পুঁজির অবাধ প্রবেশে তাঁদের আপত্তি আছে।
চিনের অর্থনীতির বিষয়টাও রাহুলের কাছে পরিষ্কার নয় বলে বিজনবাবু মনে করেন। চিনে তো দেশের অর্থনীতির ৭০-৭২ শতাংশ রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, বাকি ২৮-৩০ শতাংশের জন্য এফডিআই-এর দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। তাও রাষ্ট্রীয় নির্দেশে পছন্দের তালিকা অনুযায়ী সেখানে এফডিআই বিনিয়োগ সম্ভব। সেটা হয়তো রাহুলের জানা নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন। কিন্তু ভারতে কী হচ্ছে? বিজনবাবুর মতে, ‘‘ভারত সরকার চাইছে, লাভজনক ক্ষেত্র-সহ প্রতিটা ক্ষেত্রই বিদেশি পুঁজি নিয়ন্ত্রণ করুক। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই ৫১ শতাংশ এফডিআই-কে স্বাগত জানানো হয়েছে। ভারতের বাজার বিশ্ব পুঁজিপতিদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাক সেটা সিপিএম চায় না।’’ সিপিএম চায়, এফডিআইয়ের উপর ‘নিয়ন্ত্রণ’ বজায় রেখে ‘নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে’ ছাড়পত্র দেওয়া হোক।
কেন্দ্রীয় সরকার তথা কংগ্রেসের আর্থিক নীতির তীব্র সমালোচনা করে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘‘ভারতের বামপন্থীদের বদলানো বলতে রাহুল কী বোঝাতে চেয়েছেন তা আমার জানা নেই। আসলে কংগ্রেস চায়, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সমালোচনা না করা হোক।’’ যে কোনও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি তথা অর্থনীতির সমালোচনা সিপিএম করবে, এটাও তিনি পরিষ্কার জানান। এ দিকে, কংগ্রেসের অভিযোগ, সিপিএম চিনের দালালি করে। এই অভিযোগকেও নস্যাৎ করে বিজনবাবুর মন্তব্য, ‘‘অভিজ্ঞতার নিরিখে তো বোঝা যাচ্ছে দেশের কোন রাজনৈতিক দল কার দালালি করছে। ভারতের বৈদেশিক নীতি, অর্থনীতি কী ভাবে আমেরিকার স্বার্থে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে তা আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে কিছু দিনের মধ্যে।’’
এ দিকে, আজ বিকেল পাঁচটায় ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার পর্ব শেষ হল। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোট। তবে তার আগেও বিভিন্ন জায়গা থেকে ছোট ছোট সংঘর্ষের খবর আসছে। আজ খয়েরপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুদীপ রায়বর্মণ অভিযোগ করেন, ‘‘খয়েরপুর বাজার সংলগ্ন এলাকায় কংগ্রেসের একটি নির্বাচনী প্রচারের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
এ ছাড়া, আর কে নগর এলাকায় বিকাশ শীল এবং হরিপদ দে নামে দুই কংগ্রেস সমর্থককে শাসক দলের কর্মীরা মারধর করেছে। দোকানপাট গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ এরই প্রতিবাদে আজ বিকেলে খয়েরপুরের কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা গাড়ি করে এসে আগরতলার পশ্চিম থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের তরফে দোষীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেওয়ার পর কংগ্রেস সমর্থকরা বিক্ষোভ তুলে নেন। এ দিকে, কংগ্রেস এবং সিপিএমউভয় দলই ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে সুষ্ঠু, অবাধ, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.