|
|
|
|
হাফিজ-মালিক যোগ নিয়ে সরব কেন্দ্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিককে নিয়ে অস্বস্তির মধ্যেও আখেরে লাভই দেখছে মনমোহন সিংহের সরকার।
পাকিস্তানে গিয়ে আফজল গুরুর ফাঁসির প্রতিবাদে লস্কর-প্রধান হাফিজ সইদের সঙ্গে রবিবার এক মঞ্চে ধরনায় বসেছিলেন ইয়াসিন মালিক। কাশ্মীরের এই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার পাকিস্তান সফর নিয়ে ইতিমধ্যেই বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের চাপানউতোর শুরু হয়েছে। কারণ মালিককে পাসপোর্ট দিয়েছিল বিদেশ মন্ত্রক। এখন তারা বলছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বললেই তা বাতিল করা হবে। আফজল গুরুকে ফাঁসি দিয়ে জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে বিজেপির হাওয়া কেড়ে নিতে চেয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু মালিককে নিয়ে ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার সুযোগ পেয়ে গিয়েছে বিজেপি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কিন্তু মনে করছে, জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের নেতা ইয়াসিনের এই আচরণে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের মুখোশ খুলে পড়েছে। কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বরাবরই বলে এসেছেন, ভারত বা পাকিস্তান, দু’দেশই তাদের কাছে সমান। তারা শুধু ‘আজাদ কাশ্মীর’ চায়। |
|
|
হাফিজ সইদ |
ইয়াসিন মালিক |
|
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, ইয়াসিন মালিক যে ভাবে মুম্বই-হামলার মূল ষড়যন্ত্রী ও লস্কর-প্রধান হাফিজের সঙ্গে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে ধরনায় বসেছেন, তাতে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, তাঁরা আসলে লস্কর-ই-তইবা ও জইশ-ই-মহম্মদেরই ‘বি-টিম’। ইয়াসিনের আগে দুই হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি এবং মিরওয়াইজ উমর ফারুখও পাকিস্তানে গিয়ে হাফিজের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানে গিয়ে তাঁরা পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন প্রধান সৈয়দ সালাউদ্দিনের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন। তাই কাশ্মীরিদের সামনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে পাক-মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলির ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি স্পষ্ট বলে দাবি করছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা। তাঁদের মতে, এর ফলে উপত্যকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ধাক্কা খাবে।
ইয়াসিন আজ সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, তিনি হাফিজের সঙ্গে দেখা করেননি! তাঁর যুক্তি, “আমি যে ধরনায় বসেছিলাম, সেখানে বহু মানুষ ছিলেন। তা হলে শুধু বিশেষ এক জনের সঙ্গে মঞ্চে বসার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে?” স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা অবশ্য এই যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, হাফিজের সঙ্গে কারও তুলনা চলে না। মুম্বই-হামলার প্রধান ষড়যন্ত্রী হাফিজ। অথচ তাকে কাশ্মীরের আন্দোলনের হোতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন ইয়াসিন মালিক!
বিজেপি প্রশ্ন তুলছে, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পাকিস্তানে গিয়ে এই সব করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে কেন? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, মালিক দেশে ফিরলেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৬ ফেব্রুয়ারি। কাজেই তার আগেই তাঁকে ফিরতে হবে। তাঁর পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করাও এখন সময়ের অপেক্ষা বলেই ইঙ্গিত দিচ্ছে কেন্দ্রের একটি সূত্র। এ দেশের নাগরিক বিদেশে গিয়ে ভারত-বিরোধী কাজকর্ম করলে তাঁর বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হয়েছে। সেই অনুযায়ী বিদেশ মন্ত্রকের কাছে সুপারিশ পাঠানো হবে। ইয়াসিনের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩১ মার্চ। তার পরে সেই পাসপোর্ট নবীকরণ হবে না বলেই এখনও পর্যন্ত ইঙ্গিত মিলেছে কেন্দ্রের তরফে। আরও দুই হুরিয়ত নেতার পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। |
|
|
|
|
|