নিশানায় আমেরিকা, উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রপুঞ্জ
বিশ্ব জুড়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে আবার পরমাণু পরীক্ষা উত্তর কোরিয়ায়
যাবতীয় আন্তর্জাতিক হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করেই তৃতীয় বার সফল ভাবে পরীক্ষামূলক পরমাণু বোমা বিস্ফোরণ ঘটাল উত্তর কোরিয়া। সরকারি সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, মঙ্গলবার যে পরমাণু বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটানো হল সেটির আকার বেশ ছোট। ওজন ছয় থেকে সাত কিলোটন। সেই বোমা বয়ে নিয়ে গিয়ে আমেরিকাতেও আঘাত হানতে পারবে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। এর আগেও দু’বার পরমাণু বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। প্রথমটি ২০০৬ সালে, দ্বিতীয়টি ২০০৯ সালে। ওই দু’টি বোমার চেয়ে অনেকটাই বেশি শক্তিশালী এই বোমাটি। অবশ্য ১৯৪৫ সালে হিরোশিমার উপর আমেরিকা প্রথম যে পরমাণু বোমাটি নিক্ষেপ করেছিল, তার চেয়ে কম শক্তিশালী এটি।
উত্তর কোরিয়া যে ফের পরমাণু পরীক্ষা চালাতে পারে তা নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছিল আমেরিকা। আজ কিম জং উন প্রশাসন জানায়, চিন সীমান্ত-সংলগ্ন পুংগিয়ে-রি এলাকায় পরমাণু বোমাটির বিস্ফোরণ সফল হয়েছে। এই ঘটনা স্বাভাবিক ভাবেই চাপ বাড়িয়েছে ওবামা প্রশাসনের উপর। উত্তর কোরিয়ার এই পদক্ষেপ ‘উস্কানিমূলক’ বলেই ভাবছেন ওবামা।
জাপানের রিখটার স্কেলে ধরা পড়েছে উত্তর কোরিয়ার ভূমিকম্প। ছবি: রয়টার্স
আমেরিকার ভূতত্ত্ব বিভাগ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে উত্তর কোরিয়ায় ৪.৯ রিখটার স্কেল কম্পন অনুভূত হয়। বিস্ফোরণের পরই ওই ভূ-কম্পন হয় বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। পরিবেশের উপর এই বিস্ফোরণের কোনও প্রভাব পড়বে না বলে সরকারি সংবাদমাধ্যম দাবি করলেও নিশ্চিন্ত হতে পারছে না জাপান।
তাই তেজস্ক্রিয়তার পরিমাণ মাপতে উত্তর কোরিয়ার বায়ুর নমুনা সংগ্রহ করেছে জাপানের বায়ুসেনা। তেজস্ক্রিয়তার পরিমাণ ছাড়াও ওই নমুনা বিশ্লেষণ করে জানা যাবে পরমাণু বোমাটি ইউরেনিয়াম না প্লুটোনিয়াম জাতীয়। একই তথ্য জানার চেষ্টা চালাচ্ছে আমেরিকাও।
আজ কিম জং উন প্রশাসন সরকারি ভাবে পরমাণু বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর কথা স্বীকার করে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর কোরিয়ার নিন্দায় মুখর হয়েছে সারা বিশ্ব। দুঃখপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান-কি-মুনও। উত্তর কোরিয়ার বন্ধু রাষ্ট্র চিন আন্তর্জাতিক হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে পরমাণু পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে বার বারই নিষেধ করেছিল।
দীর্ঘ দিনের বন্ধু উত্তর কোরিয়া সে কথায় বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেনি। বিশেষজ্ঞ কূটনীতিকরা মনে করছেন, এই অবস্থায় বেজিং যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। তাই সরকারি ভাবেই উত্তর কোরিয়ার তীব্র সমালোচনা করেছে তারা। তবে উত্তর কোরিয়ার এই পদক্ষেপ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি তার অন্য বন্ধু রাষ্ট্র রাশিয়া।
গত বছর ডিসেম্বরে উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে। সেই সময় থেকে উত্তর কোরিয়ার উপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। তা চলছে এখনও। তাই এর পর উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব, তা নিয়ে শিগগিরই আলোচনায় বসতে চলেছে নিরাপত্তা পরিষদ। ওবামা অবশ্য ইতিমধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “এ ভাবে উস্কানি দিয়ে সহজে পার পাবে না উত্তর কোরিয়া।’’ বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, একঘরে হয়ে থাকা উত্তর কোরিয়াকে আরও কঠোর শাস্তি দিতে হলে তার তেলের জোগান বন্ধ করার কথা ভাবতে পারে আন্তর্জাতিক মহল।
বিশেষজ্ঞদের মত, উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত। এর উপর আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ বাড়লে দেশে খাবারের অভাবও বাড়বে। পাল্লা দিয়ে খাদ্যসামগ্রীর দামও বাড়বে হু হু করে। দেশবাসীই সে ক্ষেত্রে চলে যেতে পারে কিম জং উনের বিপক্ষে। সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়াই হবে ২৯ বছরের শাসকের সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.