এক মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে মহিলা খোলা রাস্তার পাশে প্রসব করলেন। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটে শামুকতলার ডাঙ্গি এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা শিশুপুত্র ও মাকে উদ্ধার করে শামুকতলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করেন। কিছু ব্যক্তি ওই শিশুটিকে নিয়ে যেতে চাইলে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বাধা দেন।
খবর পেয়ে এ দিন হাসপাতালে যান আলিপুরদুয়ার-২ বিডিও সজল তামাং, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুভাষ কর্মকার, শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাহা বিয়াম কিস্কু, উপপ্রধান সুকুমার ঘোষ। প্রশাসনের নির্দেশে গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ওই প্রসূতি ও সদ্যোজাতের জন্য খাবার, পোশাক, ফল কিনে দেওয়া হয়। দিলীপ দেবনাথ নামে এক কাপড় ব্যবসায়ী সদ্যোজাতে পোশাক দেন। কয়েক মাস ধরে ওই অন্তঃসত্ত্বাকে হাতিপোতা সহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। পাঁচ দিন আগে ডাঙ্গি বাজারে এক হোটেলের বারান্দায় আশ্রয় নেয়। ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছে দেখে দিলীপ দেবনাথ নামে ওই হোটেল ব্যবসায়ী মহিলাকে কম্বল দেন। তিনি খাবারের ব্যবস্থাও করেন। বুধবার দোকানের পেছনে ভবঘুরেকে কাতরাতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই সময় তিনি সন্তান প্রসব করেন। প্রসূতি ও সদ্যোজাতকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ফুটফুটে ছেলেকে দেখতে ভিড় জমে। কয়েক জন হাসপাতালে ঢুকে শিশুটি নিয়ে যেতে চেষ্টা করে। চিকিৎসক শৌভিক দাস বাধা দিলে তারা পালায়।
বিডিও সজল তামাং বলেন, “মহিলার যেন অসুবিধা না হয় সেটা দেখা হচ্ছে। মহিলার পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় বিভিন্ন নাম বলছে। ঠিকানাও ঠিক মতো জানাতে পারছে না। শেষ পর্যন্ত ঠিকানা উদ্ধার করা সম্ভব না হলে মা ও শিশুকে হোমে পাঠানো হবে।” ওসি প্রবীণ প্রধান জানান, যে ব্যক্তিরা হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল তাদের খোঁজ চলছে। মহিলা কোথা থেকে এসেছে সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শামুকতলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক শৌভিক দাস বলেন, “মা ও শিশু সুস্থ আছে।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলা তাঁর নাম ঠিক বলতে পারছেন না। ঠিকানা জানতে চাইলে অসমের এলাকার নাম বলছেন। আলিপুরদুয়ার-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অর্চনা দাস বলেন, “মহিলার যেন সমস্যা না হয় সেটা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।” |