যুবতী পরিচারিকার অস্বাভাবিক মৃত্যুতে বুধবার জলপাইগুড়ির সমাজপাড়া এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। এ দিন বিকালে এলাকার একটি আবাসন থেকে ওই পরিচারিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম সিলিকা মুর্মু। বয়স আনুমানিক ৩০। তিনি আবাসনের অবাঙালি ব্যবসায়ী নন্দকিশোর শর্মার বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। তাঁর বাড়ি থেকে সিলিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতার বাড়ি অসমে বলে জানা গিয়েছে। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি অচিন্ত্য গুপ্ত বলেন, “একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।” তদন্তের আগে কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, আবাসনের নীচে নন্দকিশোরবাবুর একটি দোকান রয়েছে। তাঁর দাবি, এ দিন দুপুরে তাঁরা দোকানে ছিলেন। একমাত্র মেয়ে স্কুলে ছিল। বিকেলে বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে দেখেন ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। কলিং বেল বাজিয়ে কোনও সাড়া না পেয়ে বাড়ির ফোন নম্বরে রিং করেন তিনি। তাতেও সাড়া না মিললে প্রতিবেশীদের ডাকেন। দরজা ভেঙে তাঁরা গলায় ফাঁস লাগানো সিলিকার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে। নন্দকিশোরবাবু জানান, বছর খানের আগে শামুকতলার বাসিন্দা বাহা ওঁরাওয়ের বাড়ি থেকে সিলিকাকে পরিচারিকার কাজের জন্য জলপাইগুড়ি আনা হয়। সিলিকার বাড়ির ঠিকানা ব্যবসায়ী জানেন না বলে দাবি করেছেন।
প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করছে পুলিশ। তবে যুবতীর বাড়ি কোথায়? শামুকতলার যে ব্যক্তি তাঁকে কাজে পাঠিয়েছিলেন তাঁর পরিচয় নিয়ে ধন্দে রয়েছে পুলিশ। নন্দকিশোরবাবু বলেন, “গত বছর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ায় একজন পরিচারিকা খুঁজছিলাম। সে সময়ে এক পরিচিতের মাধ্যমে শামুকতলায় যোগাযোগ হয়। সেখানেই বাহা নামের এক ব্যাক্তির বাড়ি থেকে সিলিকাকে কাজে নিয়ে আসি।” এ দিন শামুকতলার বাহা নামের ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে জানা যায়, যুবতীর বাড়ি অসমে।
গত অক্টোবর মাসে সিলিকা মাইনে নিয়ে বাড়ি গেলেও তিন দিন পরেই জলপাইগুড়িতে ফিরে আসেন। ২৯ জানুয়ারি ফের বাড়ি যান তিনি। গত শনিবার জলপাইগুড়ি ফিরে আসেন। নন্দকিশোরবাবু বলেন, “বাড়ির লোকেদের দেখতে ইচ্ছে করছে বলে প্রতিবারই সিলিকা বাড়ি যেত। আবার ২-৩ দিন পরেই ফিরে আসত।” সিলিকাকে জোর করে জলপাইগুড়িতে পাঠানো হয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। শামুকতলার যে ব্যক্তি তাঁকে কাজে পাঠিয়েছিলেন তাদের সঙ্গে যুবতীর কী সম্পর্ক? কাজের টাকা কে নিত? এ সবই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। |