|
|
|
|
চাকরির টোপ দিয়ে প্রতারণা, ধৃত চাঁই-সহ ২ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ফাঁদ পেতে প্রতারণা চক্রের এক চাঁই-সহ দু’জনকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করেছে হাওড়া রেলপুলিশ। রেলপুলিশের অভিযোগ, মোটা বেতনের চাকরি দেওয়ার নাম করে ব্যারাকপুর, বালুরঘাট, কলকাতার বিভিন্ন যুবক-যুবতীর কাছ থেকে মোটা টাকা হাতাচ্ছিল গাইঘাটার বাসিন্দা সুজিত দাস (২৭)। মঙ্গলবার ভোরে তাকে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় একই অভিযোগে শুভঙ্কর অধিকারী নামে বালুরঘাটের এক বাসিন্দাকেও সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার ধৃতদের হাওড়া আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক শুভঙ্করকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত এবং সুজিতকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
কী ভাবে ধরা পড়ল সুজিত? রেল পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে হাওড়া স্টেশনের পুরনো কমপ্লেক্সে ফুড প্লাজার সামনে এক বয়স্ক দম্পতির সঙ্গে এক যুবককে দীর্ঘক্ষণ ঘোরাফেরা করতে দেখে সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ভরত মোহন্ত নামে ১৯ বছরের ওই যুবক জানান, সঙ্গের বয়স্ক দম্পতি তাঁর বাবা-মা। তাঁদের বাড়ি বালুরঘাটে। স্টেশনের ফুড প্লাজায় মোটা বেতনের চাকরি দেওয়ার নাম করে বালুরঘাটের মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা শুভঙ্কর অধিকারী তাঁর কাছ থেকে প্রথম দফায় ১৪ হাজারেরও বেশি টাকা নিয়েছে। ভরত ফুড প্লাজার ম্যানেজারের কাছে গিয়ে শুভঙ্করের কাছ থেকে পাওয়া চাকরির নিয়োগপত্র দেখিয়েছিলেন। কিন্তু ম্যানেজার তাঁকে বলেছেন, নিয়োগপত্রটি ভুয়ো। ভরতের দাবি, শুভঙ্কর আরও টাকা চেয়েছিল। সেই টাকা দিতে তাঁর বাবা ও মা বালুরঘাট থেকে হাওড়া স্টেশনে আসেন।
শুভঙ্কর ওই পরিবারটির থেকে ফের টাকা নিতে আসবে শুনে সাদা পোশাকের পুলিশ স্টেশন চত্বর ঘিরে ফেলে। শুভঙ্কর স্টেশনে ঢুকতেই তাকে গ্রেফতার করে জেরা শুরু করেন রেলপুলিশের কর্তারা। রেলপুলিশের দাবি, জেরার মুখে শুভঙ্কর জানায়, সে-ও এক জন চাকরিপ্রার্থী। গাইঘাটার বাসিন্দা সুজিত ফুড প্লাজায় চাকরির শর্ত হিসেবে তার থেকে ৬ হাজার টাকা নেয়। আর এক জন চাকরিপ্রার্থী জোগাড় করে তাঁর থেকে আরও ১৪ হাজার টাকা জোগাড় করতে বলে। তার পরামর্শ মতোই শুভঙ্কর ভরতের কাছ থেকে ওই টাকা হাতায়।
রেলপুলিশের এক কর্তা বলেন, জেরার মুখে সুজিতের মোবাইল নম্বর দেয় শুভঙ্কর। ছক কষে শুভঙ্করকে দিয়ে সুজিতকে ফোন করানো হয়। সেই মতো সুজিতকে শুভঙ্কর বলে, আরও কয়েক জন যুবক-যুবতী চাকরি চাইছে। ১০ হাজার টাকা অগ্রিম পাওয়া গিয়েছে। সুজিত যেন শিয়ালদহ স্টেশনে এসে ওই বেকার যুবক-যুবতীদের সঙ্গে কথা বলে টাকাটা নিয়ে যায়। ফাঁদে পা দেয় গাইঘাটার ওই যুবক। মঙ্গলবার সকালে শিয়ালদহ স্টেশনে আসতেই ধরা পড়ে। রেল পুলিশ জানায়, সুজিতের কাছ থেকে অনেকের বায়ো-ডাটা মিলেছে। মিলেছে বেকার যুবক-যুবতীদের ছবিও। জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনায় তিনটি অফিস রয়েছে সুজিতের। তদন্তকারীদের ধারণা, এই ঘটনার পিছনে বড় কোনও চক্র কাজ করছে। রেল পুলিশের দাবি, সুজিত স্বীকার করেছে, গত কয়েক বছরে কমবেশি ৫০ জন যুবক-যুবতীর সঙ্গে প্রতারণা করে সে ইতিমধ্যে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়েছে। |
|
|
|
|
|