বাড়বে মন্ত্রীদের অনুপস্থিতি, আশঙ্কা
বিধানসভায় মন্ত্রীর হয়ে বলবেনও পরিষদীয় সচিব
প্রথমে বলা হয়েছিল, মন্ত্রীর সঙ্গে বিধায়ক-সচিবদের যোগাযোগের সেতু হিসেবে কাজ করবেন পরিষদীয় সচিব। বুধবার আরও এক ধাপ এগিয়ে রাজ্য সরকার জানিয়ে দিল, এ বার থেকে বিধানসভায় মন্ত্রীদের হয়ে তাঁরা বক্তব্যও পেশ করতে পারবেন। এতে বিধানসভায় মন্ত্রীদের হাজিরা আরও কমবে বলে বিভিন্ন মহলের আশঙ্কা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারে ৪৪ জন মন্ত্রী। তাঁদের কাজে সাহায্যের জন্য পরিষদীয় সচিবের পদ বানিয়েছে রাজ্য, যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। সম্প্রতি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে ১৩ জন বিধায়ককে ১৩ জন মন্ত্রীর পরিষদীয় সচিব হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের দেওয়া হয়েছে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা। এ দিন তাঁদের এক্তিয়ার বাড়িয়ে দ্বিতীয় সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে: সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী অথবা মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন থাকলে কোনও পরিষদীয় সচিব রাজ্য বিধানসভায় মন্ত্রীর প্রতিনিধিত্ব করতে বা তাঁর হয়ে বক্তব্য পেশ করতে সব সময় তৈরি থাকবেন। বিধানসভার বিভিন্ন কমিটিতেও তাঁদের একই ভূমিকা নিতে হবে।
পরিষদীয় সচিবদের এই বর্ধিত ক্ষমতাদানে আইনগত কোনও বাধা নেই বলে মনে করেন বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিম। যদিও এতে অন্য আশঙ্কা দেখছেন তিনি। হালিমের কথায়, “বিধানসভায় মন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে পরিষদীয় সচিবেরা সদস্যদের প্রশ্নের উত্তর দিতেই পারেন। এর মধ্যে আইনগত বিরোধ নেই। তবে সাধারণ ভাবে মন্ত্রীদের প্রবণতা হল সভায় না-থাকা। এ বার সেই প্রবণতা আরও বাড়তে পারে।” প্রশাসনের একাংশেরও বক্তব্য, বাম আমল থেকে বিধানসভায় মন্ত্রীদের হাজিরা কম থাকার প্রবণতা চলছে। এ নিয়ে প্রাক্তন স্পিকারের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে একাধিক মন্ত্রীকে। সরকার বদলালেও ছবিটা বদলায়নি। প্রশ্নোত্তর পর্বে হামেশাই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী অনুপস্থিত থাকেন। এখন পরিষদীয় সচিবদের বাড়তি অধিকার দেওয়ায় মন্ত্রীদের অনুপস্থিতির হার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে প্রশাসনের এই মহলের অভিমত।
সরকার পক্ষের কী বক্তব্য? স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দেশের যেখানে পরিষদীয় সচিবের পদ রয়েছে, সেখানে তাঁদের অন্যতম কাজই হল, বিধানসভায় মন্ত্রীদের হয়ে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া। পশ্চিমবঙ্গেও তাই হবে।” বিমানবাবুর মতে, “পরিষদীয় সচিবেরাও মন্ত্রগুপ্তির শপথ নিয়েছেন। ফলে বিধানসভায় উত্তর দিতে তাঁদের আইনি বাধা নেই।” প্রাক্তন স্পিকার পরিষদীয় সচিব নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। “এত দিন তো পদটা ছিল না। তাতে কোনও দফতরের কাজ কি আটকে থেকেছে? বরং পরিষদীয় সচিব নিয়োগ করে নতুন কিছু মানুষকে গাড়ি, ভাতা ও কর্মচারী দেওয়ায় খরচ বাড়ল,” মন্তব্য হালিমের। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে পরিষদীয় সচিবদের আর যে সব দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা হল, মন্ত্রীদের পরিকল্পনা তৈরি ও সমন্বয়ে সহায়তা করবেন তাঁরা। মন্ত্রী-সচিবদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলবেন। বিধানসভা কমিটির বৈঠকে যোগ দেবেন। পরিষদীয় মন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে পরিষদীয় সচিবেরা বিধানসভায় প্রতিনিধিত্বকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। মুখ্যমন্ত্রী বা দফতরের মন্ত্রী চাইলে তাঁরা দফতরের ফাইলও দেখতে পারবেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.