|
|
|
|
আট মাস নিখোঁজ যুবক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কৃষ্ণনগর |
আট মাস পেরিয়েছে।
রানাঘাট স্টেশনে এক মহিলার সঙ্গে দেখা করতে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি বছর বাইশের শুকদেব বিশ্বাস। অথচ কী ভাবে, কোথা থেকে, কেনই বা সে তার হাঁসখালির বাড়িমুখো হল না আর, পুলিশ সে ব্যাপারে আতান্তরে। তবে মজার ব্যাপার, তা নিয়ে রেল পুলিশের মাথাব্যাথা তো দূরের কথা বরং পরিবারের লোকজন তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে খোঁজ করতে গেলে পাল্টা শুনতে হয়েছে ‘পূর্ণ বয়স্ক যুবক, হারিয়ে গেলে খোঁজ পাওয়া যায়?’
শুকদেব বিশ্বাস |
২৭ জুন, বর্ষার এক সন্ধেয় রানাঘাট স্টেশনে যে মহিলার সঙ্গে শুকদেব দেখা করতে গিয়েছিলেন পুলিশ তাঁকে বার দুয়েক জেরা করেছে। তবে ওইটুকুই। তদন্তে আপাত ভাবে দাঁড়ি পড়ে গিয়েছে এখানেই। ওই যুবকের দিদি কাবেরী বিশ্বাস অবশ্য মনে করেন “তদন্তটা আর এগিয়ে নিয়ে যেতেই চাইছে না পুলিশ।” তাঁর যুক্তি, “শুকদেবের মোবাইলটা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এবং তা ওই মহিলার এক পরিচিতের কাছ থেকেই। তবু পুলিশের এক বারও ওই মহিলা কিংবা তাঁর বন্ধুকে জেরা করার কথা মনেই হল না। এরপরেও মনে করতে হবে পুলিশ তদন্তে আগ্রহী!” ওই মহিলা ও তাঁর এক বন্ধুর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ‘অপহরণের’ অভিযোগও দায়ের হয়েছে। কিন্তু গ্রেফতার তো দূরের কথা।
পুলিশের পাল্টা যুক্তি, ওই মোবাইলটি যে শুকদেবের তার প্রমাণ কী? পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, হাঁসখালির ওই নিখোঁজ যুবক মুম্বইতে কাজ করতেন। দু’জনের সম্পর্ক মেনে নিয়েছিলেন দু-বাড়ির লোকও। তা হলে সমস্যা কোথায়?
ওই মহিলা ডেকে পাঠানোয় ২৭ জুনই মুম্বই থেকে ফিরেছিল শুকদেব। কাবেরী বলেন, “ওই দিন ভাই হাওড়া স্টেশনে নামার পর থেকে আমি সঙ্গে ছিলাম। ওকে শিয়ালদহ থেকে ট্রেনেও তুলে দিয়েছি। ভাই ফোন করে বলে যে, রানাঘাট স্টেশনে ওই মহিলার সঙ্গে দেখা হয়েছে। ফোনে ভাইয়ের সঙ্গে আমার ওই শেষ কথা। তার পর থেকে ভাই নিখোঁজ। কোনও ভাবে আর যোগাযোগ করা যায়নি।” এর পর ৩ জুলাই রানাঘাট জিআরপি থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। হাঁসখালি থানাতেও ডায়েরি করা হয়। কাবেরীর দাবি, “তদন্তকারী অফিসারকে বার বার অনুরোধ করায় তিনি আমাকে বলেন, “তদন্ত করতে খরচ আছে। নানা জায়গায় যাতায়াত করতে হবে। খরচটা কে দেবে?”
রানাঘাট জিআরপি থানা সূত্রে দাবি, শুকদেব বিশ্বাস নামে ওই যুবক রানাঘাট স্টেশন থেকেই অপহরণ করা হয়েছে তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই দিন ওই যুবক স্টেশন থেকে হাঁসখালিই ফিরে গিয়েছিলেন। আর মোবাইল? পুলিশের নির্বিকার উত্তর: “বাজারে তো অনেক পুরোনো মোবাইল বিক্রি হয়। ওই যুবকের হাতে ওই মোবাইলটা কী ভাবে এল সেটাও তো আগে তদন্ত করে জানতে হবে।”
কিন্তু কবে? কেউ জানে না। |
|
|
|
|
|