|
|
|
|
কলেজ দখল নিয়ে ধুন্ধুমার শান্তিপুর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শান্তিপুর |
নির্বাচনের আগে শান্তিপুর কলেজে গণ্ডগোল নতুন নয়। তবে এ বার তার মেয়াদ দশ দিন ছাড়িয়েছে। বুধবার তা চরম আকার নিল।
পরিস্থিতি সামাল দিতে আসা পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া হল ইট। হাতাহাতিতে জখম হয়েছেন দুই কংগ্রেস নেতা। তাঁদের শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
প্রতিবাদে ছাত্র পরিষদ ও কংগ্রেস কর্মীরা শহরের বাইগাছি মোড় ও কংগ্রেস কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জেলা পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমন মিশ্র বলেন, “পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোঁড়ে। কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে।” |
বোমার টুকরো দেখে দিশেহারা দুই স্কুলছাত্রী। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, চলতি মাসের ১৯ তারিখে কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন। তার আগে ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কলেজের দখল রাখতে মরিয়া। উভয়পক্ষই চাইছে কেউ যেন মনোনয়নপত্রই জমা দিতে না পারে। তা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে চলতে থাকা দফায় দফায় সংঘর্ষ চূড়ান্ত রুপ নেয় বুধবার। কংগ্রেস নেতাদের দাবি, এ দিন সকাল নাগাদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ তাঁদের উপর চড়াও হয়। আক্রান্ত হন শান্তিপুর শহর কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তরুণ ভট্টাচার্য ও কাউন্সিলর যতন সরকার। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তরুণবাবু বলেন, “কয়েকদিন ধরে এক নাগাড়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ আমাদের সমর্থকদের মারধর করছিল। এ দিন মারামারির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলেই যেতেই আমার উপর চড়াও হয় কংগ্রেস সমর্থকেরা।” নেতারা আক্রান্ত হতেই ক্ষুব্ধ কংগ্রেসকর্মীরা জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। একটি বাসও ভাঙচুর করে বিক্ষোভরত কংগ্রেসকর্মীরা। জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ বাঁধে। ঘণ্টা তিনেকের এই অশান্তিতে শহর জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে চম্পট দেন। শহরের দু’টি স্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যেও ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কংগ্রেস ও তৃণমূল উভয় পক্ষই একে অপরের ঘাড়ে এই ঘটনার দায় চাপাতে ব্যস্ত। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি জয়ন্ত পাল বলেন, “ছাত্র পরিষদ আমাদের নির্বাচনে লড়তে দিতে চাই না। কংগ্রেস কাউন্সিলরের নেতৃত্বে ওরা আমাদের উপর চড়াও হলে ছাত্রদের প্রতিরোধের মুখে কেউ অল্প আঘাত পেতে পারেন।” আর ছাত্র পরিষদের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অর্ঘগণ বলেন, “বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজের কায়দায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সন্ত্রাস চালিয়ে কলেজের দখল নিতে চাইছে।” এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “জেতার সম্ভাবনা নেই এমন কলেজগুলিতে পুলিশের সাহায্যে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।” রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা বলেন, “শান্তিপুরে কংগ্রেস লাগাতার সন্ত্রাস চালাচ্ছে। পুরো বিষয়টি জানার পর স্থির হবে দলীয় কর্মসূচী।” |
|
|
|
|
|