|
|
|
|
ব্যবসায়ীদের বাধায় থমকে উড়ালপুলের কাজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
শেষ পর্যায়ে পৌঁছে ঝাড়গ্রাম শহরে উড়ালপুল তৈরির কাজ থমকে গেল। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাংশের বাধায় উড়ালপুলের দক্ষিণ প্রান্তের গার্ড ওয়াল তৈরির কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে রেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থাটি। রেলের তরফে ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক ও পুলিশ কর্তৃপক্ষের কাছে সমস্যা মেটানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনিক স্তরে এখনও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
ঝাড়গ্রাম শহরের নতুনডিহি রেলওয়ে ক্রসিং সংলগ্ন ৫ নম্বর রাজ্য সড়কে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু হয় ২০১১ সালের অগস্টে। উড়ালপুল তৈরির জন্য রেল ও রাজ্য সরকার মোট ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। পরে প্রকল্প ব্যয় কিছুটা বাড়ে। পুরো কাজটার দায়িত্ব নেয় রেল। রেলের তরফেই টেন্ডার ডেকে কলকাতার একটি ঠিকাদার সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়। গত দেড় বছরে উড়ালপুল তৈরির ৮৫ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। অ্যাপ্রোচ রাস্তা তৈরির জন্য উড়ালপুলের দু’টি প্রান্তে রাস্তার দু’পাশে গার্ড ওয়াল তৈরির কাজ বাকি ছিল। উড়ালপুলের উত্তর প্রান্তে বাছুরডোবার দিকে গার্ড ওয়াল তৈরির কাজ প্রায় শেষের মুখে। কিন্তু দক্ষিণ প্রান্তে জুবিলি বাজারের দিকে মূল রাস্তায় ব্যবসায়ীদের একাংশের বাধায় গার্ড ওয়াল তৈরির কাজ বন্ধ রয়েছে। ওই রাস্তায় এক পাশে পূর্ব দিকের দোকানগুলি রয়েছে সরকারি জায়গায়। পশ্চিম পাশের দোকানগুলি রয়েছে ব্যক্তিগত রায়তি জমিতে। অভিযোগ, রায়তি জমির উপর থাকা দোকানগুলির একেবারে গা-বরাবর উড়ালপুলের গার্ড ওয়াল তৈরির জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই দিকে লিঙ্ক রোড করার মতো জায়গা নেই। এই কারণেই জটিলতা দেখা দিয়েছে। |
|
ঝাড়গ্রামে বন্ধ সেই উড়ালপুলের কাজ। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মূল নকশায় বলা ছিল, উড়ালপুলের তলায় দু’পাশে দশ ফুট করে চওড়া সংযোগকারী রাস্তা থাকবে। এখন দেখা যাচ্ছে, রায়তি জমিতে থাকা দোকানগুলির গা-ঘেঁষেই উড়ালপুলটি তৈরি করা হয়েছে। এখনই ওই দিকের দোকানগুলিতে যেতে সমস্যা হচ্ছে। অ্যাপ্রোচ রাস্তার জন্য গার্ড ওয়াল তৈরি করা হলে বেশ কিছু দোকানে ঢোকার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। সমস্যা না-মিটিয়ে জোর করে কাজের চেষ্টা হলে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ‘ঝাড়গ্রাম মেন রোড ব্যবসায়ী সমিতি’র সম্পাদক সন্তোষ সোমানি। তাঁর বক্তব্য, “উড়ালপুলের মূল নকশা অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে না। আমাদের নকশার প্রতিলিপিও দেখতে দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের দাবি, মূল নকশা অনুযায়ী কাজ করতে হবে। আমরা উন্নয়ন-কাজ কখনই বন্ধ করতে চাই না। কিন্তু জবরদস্তি কাজ হলে আমরা আইনি পথে যেতে বাধ্য হব।”
এই সমস্যার বিষয়টি নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে দফায় দফায় রেল ও পূর্ত দফতর-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে স্মারকলিপি দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ পাওয়ার পর মাসখানেক আগে রেল ও পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ার ও অধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন মহকুমাশাসক। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গার্ডওয়াল তৈরির জন্য ফের যৌথ ভাবে সমীক্ষা করেছিল রেল, পূর্ত ও ভূমি দফতর। এরপর দিন পনেরো আগে উড়ালপুলের দক্ষিণ প্রান্তে কাজ শুরু করতে গিয়ে বাধা পান ঠিকাদার সংস্থার লোকেরা।
রেল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসনকেই বিষয়টি দেখতে বলেছেন। ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক বাসব বন্দ্যোপাধ্যায় ছুটিতে থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক তথা ঝাড়গ্রামের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ইন্দ্রদেব ভট্টাচার্য বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” |
|
|
|
|
|