|
|
|
|
লক্ষ্য কাজে গতি ও স্বচ্ছতা |
কাজ দেখতে পঞ্চায়েত স্তরে হবে পরিদর্শন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কাজকর্ম খতিয়ে দেখতে এ বার গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিগুলি পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। পঞ্চায়েতের পরিকাঠামো, প্রকল্প রূপায়ণে সাফল্য বা ব্যর্থতা, তার পিছনে কী কারণ রয়েছে, কর্মীদের বাৎসরিক উপস্থিতির হার-সহ মোট ৩৯টি বিষয় খতিয়ে দেখা হবে। পঞ্চায়েত সমিতির পরিদর্শন করবেন মহকুমা শাসক থেকে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটরা। গ্রাম পঞ্চায়েত পরিদর্শন করবেন বিডিও, যুগ্ম বিডিও বা ব্লক অফিসের অন্য আধিকারিকেরা। প্রতি বছরই এই ধরনের পরিদর্শন হওয়ার কথা থাকলেও এতদিন তা যথাযথ ভাবে হত না। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই এ বার এই পরিদর্শন কর্মসূচিতে গুরুত্ব দিচ্ছে জেলা প্রশাসন।
এর লক্ষ্য কী? প্রশাসনিক কর্তাদের মতে, পঞ্চায়েতের কাজে গতি আনা এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখা। পঞ্চায়েতের কাজকর্ম নিয়ে হামেশাই নানা অভিযোগ ওঠে। তার মধ্যে বেশ কিছু গুরুতর। এই ধরনের পরিস্থিতি এড়াতেই খতিয়ে দেখা হবে পঞ্চায়েতগুলির কাজকর্ম। সঠিক সময়ে প্রকল্প রূপায়ণ হচ্ছে কি না, কোন খাতে কত টাকা পড়ে রয়েছে, কর্মীদের হাজিরা, পরিকল্পনায় ঘাটতি রয়েছে কিনা সবই খতিয়ে দেখা হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরে ২৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ২৯টি পঞ্চায়েত সমিতি রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালে একবার জেলা জুড়ে এমন পরিদর্শন হয়েছিল। ২০০৯ সালে মহকুমাশাসকদের বলা হয়েছিল তাঁরা যেন মহকুমার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি পরিদর্শন করিয়ে রিপোর্ট তৈরি করেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে এক একটি পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত ১০-১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ২-৩টি পরিদর্শন করেই দায়িত্ব সারেন সকলে। ফলে, পঞ্চায়েতগুলির কাজের মানের তেমন উন্নতি হয়নি। অথচ যত দিন যাচ্ছে নতুন নতুন প্রকল্প আসছে। কাজ বাড়ছে পঞ্চায়েতের। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজের মানোন্নয়ন না হলে উন্নয়ন ব্যাহত হবে।
লক্ষ্যণীয় আরও একটি বিষয়। ২০১০ সাল থেকে ‘সশক্তিকরণ’ প্রকল্প চালু হয়েছে জেলায়। এ ক্ষেত্রে একটি পঞ্চায়েত কাজের নিরিখে পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতে ৪০-৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেতে পারে। তা দিয়ে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত নিজের ইচ্ছে মতো উন্নয়ন পরিকল্পনা ও রূপায়ণ করতে পারে। জেলার ২৯০টির মধ্যে ১৭২টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হলেও সকলে প্রকল্পের শর্ত পূরণ করতে পারেনি। মাত্র ১২৬টি পঞ্চায়েত সব শর্ত মেনে কাজ করতে পেরেছে। বাকি পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে কোথাও পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে, কোথাও বা আর্থিক তছরুপের জন্য বিরূপ মন্তব্য রয়েছে অডিটে, কোনও পঞ্চায়েত আবার প্রকল্পের অর্থ খরচে ব্যর্থ। কেন এমন ঘটনা ঘটছে? প্রশাসন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েতের কাজকর্মের নিয়মিত নজরদারি না হওয়ায় কর্মীরা কাজে ঢিলেমি দেন। অনেকে দুর্নীতিপ্রবণ হয়ে ওঠেন। নিয়মিত পরিদর্শন হলে এ সবে রাশ টানা যায়। পঞ্চায়েতের উপরও ভাল কাজ করার চাপ তৈরি হয়। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার মতে, “অডিটের থেকেও এই পরিদর্শন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অডিট কেবলমাত্র খরচের গরমিল ধরে নোট দেয়। কিন্তু প্রশাসনিক এই পরিদর্শন, একটি পঞ্চায়েতের যাবতীয় কাজ দেখে ব্যবস্থা নিতে পারে।” |
|
|
|
|
|