নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ডানলপ-কর্তৃপক্ষকে ১০ কোটি টাকা জমা দিতে শুক্রবার পর্যন্ত সময় দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। না-হলে ডানলপ-কর্তৃপক্ষের আবেদন খারিজ হয়ে যাবে এবং অফিসার লিকুইডেটর ডানলপের সম্পত্তি বিক্রির কাজ শুরু করে দেবেন বলে বুধবার বিচারপতি গিরীশচন্দ্র গুপ্ত ও বিচারপতি তরুণ দাসের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে। ওই সম্পত্তি বিক্রি করে ১৬টি পাওনাদার সংস্থা ও শ্রমিকদের বকেয়া টাকা মেটানো হবে। এর আগে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় লিকুইডেটর নিয়োগ করার ব্যাপারে যে-রায় দিয়েছিলেন, তার উপরেই স্থগিতাদেশ চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন ডানলপ-কর্তৃপক্ষ।
সোমবার ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছিল, বুধবারের মধ্যে ডানলপ কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে ১০ কোটি
টাকা জমা দিলে তবেই সিঙ্গল
বেঞ্চের রায়ের উপর স্থগিতাদেশের ওই আবেদন বিবেচনা করা হবে। কিন্তু এ দিন ডানলপ কর্তৃপক্ষ টাকা জমা দিতে পারেননি।
এ দিন ওই আপিল মামলার শুনানি চলাকালীন রাজ্য সরকার হাইকোর্ট-কে জানিয়ে দেয়, ডানলপকে বাঁচাতে হলে অফিসার লিকুইডেটরের মাধ্যমেই সংস্থার সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করতে হবে।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্র জানান, সমস্ত বকেয়া পাওনা মিটিয়ে ডানলপকে বাঁচানোর অন্য কোনও পথ নেই।
ডিভিশন বেঞ্চ যে ১০ কোটি টাকা জমা দিতে বলেছে, সেই ব্যাপারে ডানলপ-কর্তৃপক্ষ আদালতে জানান, তাঁরা এক সঙ্গে ১০ কোটি টাকা
জমা না-দিয়ে দফায় দফায় ওই টাকা জমা দেবেন। ডানলপের পক্ষে আইনজীবী অতনু রায়চৌধুরী
জানান, আজ, বৃহস্পতিবারের মধ্যে ২ কোটি, আগামী এক মাসের মধ্যে
৩ কোটি টাকা ও পরবর্তী ৬০
দিনের মধ্যে ৫ কোটি টাকা তাঁরা জমা দিতে পারেন।
কিন্তু হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই ভাবে দফায় দফায় ১০ কোটি টাকা জমা দেওয়ার আর্জি খারিজ করে দেয়। ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন জানিয়ে দিয়েছে, আগামী শুক্রবারের মধ্যে এক সঙ্গে ১০ কোটি টাকা জমা না-দিলে ডানলপ-কর্তৃপক্ষের ওই আবেদন খারিজ করে দেওয়া হবে এবং অফিসিয়াল লিকুইডেটর ডানলপের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রির
কাজ শুরু করবেন।
তবে একই সঙ্গে এ দিন বিচারপতি গিরীশ গুপ্ত জানিয়েছেন, সম্পত্তি বিক্রি করে সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি মনে করেন না। আগের শুনানির দিনই তিনি মন্তব্য করেছিলেন, এক রুইয়া যাবে আর এক রুইয়া আসবে। এ দিন তিনি জানান, বিক্রি করে প্রায় কোনও কারখনারই সমস্যা মেটেনি, কারখানার পুনরুজ্জীবন হয়নি এবং দেখা গিয়েছে, কারখানার জায়গায় ‘রিয়েল এস্টেট’ হয়েছে এবং শ্রমিকেরা অনেক ক্ষেত্রেই ন্যায্য বকেয়া পাননি।
এর আগে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রায়ে যে-ভাবে নানা পদ্ধতিতে ডানলপ কর্তৃপক্ষ কোম্পানির সম্পদ সরিয়ে ফেলেছেন, সে কথা বলেছেন। সরিয়ে ফেলা ওই সম্পদের মূল্য প্রায় ২৩০০ কোটি টাকা বলে ওই রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। শ্রমিকদের পাওনা প্রায় ৮০ কোটি টাকা। সিঙ্গল বেঞ্চ মনে করেছে, অফিসিয়াল লিকুইডেটর এক মাত্র
ওই সরিয়ে ফেলা সম্পদ উদ্ধার করতে ও কারখানার বকেয়া মিটিয়ে
সুরক্ষা দিতে পারে। |