প্রবন্ধ ১...
খাপ পেতেছেন গোষ্ঠমামা, অথ শব্দানুশাসন
ফারাকটা একেবারে আশমান ও জমিন, আরও যথাযথভাবে বললে, ইন্ডিয়া ও ভারত-এর মধ্যে। এক দিকে জয়পুরের দিগ্গি প্যালেসের লিটারারি মিট, অন্য দিকে দক্ষিণবঙ্গের শেষ সীমায় এক অজ ময়দানে এক মেঠো জনসমাবেশ। এক পরিসরে চোস্ত ইংরেজিতে আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর, আর অন্য ধারে লম্বা একটানা রাজনৈতিক বক্তৃতা, চাওয়া ও পাওয়ার ফিরিস্তি, কোনও অ্যাকাডেমিক নিরাসক্তির বিন্দুমাত্র দায় সেখানে ছিল না। দুই অবসরের বক্তাই নামী, তবে একেবারে ভিন্ন গোত্রের। এক আসরের বক্তা ভারতের অবিসংবাদিত এক সেরা বুদ্ধিজীবী আশিস নন্দী, সাবেকি কুলজি পরিচিতিতে তিনি নিজে তিলি, নবশাখ সম্প্রদায়ভুক্ত। অন্য আসরের বক্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, সাবেকি পদবি পরিচিতিতে অবশ্য ব্রাহ্মণকন্যা। এহেন সম্পূর্ণ বিপরীত দুই আসর ও বক্তার মধ্যে সাদৃশ্য আছে দু’টি জায়গায়। লোকপ্রসিদ্ধি অনুসারে দু’জনেরই বলার ও লেখার নিজস্ব ধরনধারণ আছে, আদৌ গতানুগতিক নয়। বর্তমান প্রসঙ্গে এর চেয়েও জরুরি হল দু’টি আসরেই সর্বভুক মিডিয়া বরাবরের মতো ছোঁক-ছোঁক করছিল, শুনছিল আর দেখছিল, আর মওকা খুঁজছিল ঠিক বেছে কোনও এক মোক্ষম বক্তব্য শোনা ও শোনানোর জন্য, একেবারে ‘গুড়গুড়গুড় গুড়িয়ে হামা খাপ পেতেছেন গোষ্ঠমামা’। শেষ পর্যন্ত কেউই মিডিয়াকে নিরাশ করেননি, কপিবুক অক্ষরে অক্ষরে মেনে খেলতে কেউই বড় একটা অভ্যস্ত নন। তাঁদের লোপ্পা শব্দ কথা, ল্যাজামুড়ো ছাড়াই মিডিয়ার শিরোনাম হয়ে উঠল, পালেও বাঘ পড়ল।
ব্যক্তি ও আসরে পার্থক্য আছে, সব বাঘও অবশ্যই সমান নয়। জয়পুরের আসরে দুর্নীতির সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল সম্পর্কিত নিছক একটি প্রশ্নের চটজলদি জবাবে দলিত ও অনগ্রসর শ্রেণির মধ্যে অধুনা দুর্নীতির ব্যাপক প্রসার নিয়ে আশিস নন্দী মন্তব্য করেছিলেন। মনে হয় না যে, দলিতদের কাছে দুর্নীতির অভ্যাস এত দিনের বঞ্চনার জগতে একটা স্বাভাবিক ও ন্যায্য সুযোগ— এটাই ছিল তাঁর বক্তব্যের অভিপ্রায়। কোনও কলেজের সেমিনারে উত্তরটি দেওয়া হলে একটু গাঁইগুঁইয়ের পরে দেওয়া সাধারণ ক্লারিফিকেশনেই সেটুকু শুধরে নেওয়া যেত। কিন্তু জয়পুর লিটারারি মিট তো মিডিয়ার কটকটে আলোকবৃত্তে, বাণিজ্যিক আসর জমাবার শর্তই তো তা-ই। ফলে হামলে-পড়া মিডিয়ার দাপটে তিল তাল হবেই, শোনার তাগিদ ও আলটপকা কথার রকমারি মানে বোঝা ও বোঝানোর দায় নানা গুণিতকে নানা দিকে ছড়িয়ে পড়ে, যখন যে বা যারা মানে করে, প্রসঙ্গচ্যুত, নিরালম্ব ও ভাসমান কথা হয়ে ওঠে তার বা তাদের। কথাকে ঘিরে কোনও না কোনও গোষ্ঠী আহত মর্যাদা জাহির করার রাজনীতিতে নেমে পড়ে, জেহাদ থানা-পুলিশ-মামলায় গড়ায়, এমনকী গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার হুমকিতে রূপান্তরিত হয়। শ্রীনন্দীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি হুলিয়া জারির উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে সুপ্রিম কোর্টও তাঁকে কড়কে দিয়েছেন, ভেবেচিন্তে কথা বলার অভ্যাস আয়ত্ত করতে বলেছেন। গ্রেফতারি বা মামলা-মোকদ্দমার পক্ষে সায় না দিয়েও দলিত বুদ্ধিজীবী কাঞ্চা ইলাইয়া বিক্ষুব্ধ, নারীবাদী মনোবীণাও অস্বস্তিতে; আশিস নন্দীর উদ্দেশ্য সৎ, কিন্তু বিশেষ বাক্যবন্ধ বা শব্দকথা ‘পলিটিকালি ইনকারেক্ট’ হয়ে পড়েছে।
এত সব বখেড়ায় বঙ্গনেত্রী মমতা নেই। আমরা জানি যে, তিনি যথেষ্ট ‘রাফ ও টাফ’। তাঁর বাগ্রীতি অনুসারে, দশ বার বলা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীর ‘ন্যায্য’ দাবি শোনেননি। তিনি আর কী করতে পারেন? তিনি কি মারবেন? মিডিয়া কথাটি লুফে নিল, নিদারুণ হুমকি বলে দেগে দিল, রে-রে রব উঠল, আনপার্লামেন্টারি ও অশালীন বলে তক্ষুনি ফুল মার্কস পেল। রাজনৈতিক বক্তৃতা চলছে তিন ঘণ্টা ধরে, সামনে ভোটার ও জনতা। মমতা নিজের রেটরিক অনুযায়ী নিজের অসহায়ত্ব ও উন্নয়নের জন্য আর্থিক দুর্গতির কথা বোঝাচ্ছেন, কল্পিত এক ক্রিয়াত্মক উপমার সাহায্যে আমজনতার কাছে তাঁর রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। পার্লামেন্টের বিধি ও ময়দানে জনসমাবেশে রাজনীতির ‘রেটরিক’ যে খাপে খাপে মিলবে, এই প্রত্যাশার ভিত্তিই বা কোথায়?
পাশ্চাত্যের গণতন্ত্রের আদিকল্প ও স্বর্গ-স্বপ্ন তো এথেনীয় নগররাষ্ট্র, তার রাজনৈতিক কালচার। ওই গণতান্ত্রিক কালচার শিখে তৈরি করতে হয়, সেটি পরিশীলিত, অনুশীলনসাপেক্ষ, সবাই অধিকারীও নয়, সক্ষমও নয়। রাজনীতি বলা, চর্চা করা ও বিশেষত বক্তৃতা দেওয়া একটি স্বতন্ত্র বিদ্যা, রাজনীতিবিদদের পয়সা খরচ করে আয়ত্ত করতে হয়, এই শাস্ত্রের জগদ্বিখ্যাত আদাবি কেতাব স্বয়ং অ্যারিস্টটল লিখেছিলেন। বিদ্যার নানা শাখাপ্রশাখা ছিল, একরাশ রচনা পাওয়া যায়। তবে বাস্তবে তো গড়বড় হত, সুযোগ বুঝলেই মহান বক্তা পেরিক্লিসের জায়গায় সুযোগসন্ধানী ক্লিওনের মতো ধুরন্ধররা কৌশলী বাগ্বিধির দ্বারা নাগরিকদের মাথায় টুপি পরিয়ে ক্ষমতা দখল করত, দেশ ও দশের সর্বনাশ হত। আধুনিক ইউরোপীয় গণতন্ত্র এই রেটরিকের আদিকল্পে অনুপ্রাণিত, তার গণপরিসর বার্ক বা ডিজরেলির মতো বক্তার আদর্শে উদ্বুদ্ধ, আবার পাওয়েলের মতো ডেমাগগ বা কুশলী বক্তৃতাবাজদের ভয়ে সদা শঙ্কিত, ডেমাগগদের আচার-আচরণ ও বক্তৃতাবিধির মধ্যেই উদারনীতিবাদ খুঁজেছে গণতন্ত্রের মৃত্যু, চরম স্বৈরতন্ত্রের উত্থান। যুক্তির বদলে আবেগকে উসকানি দেওয়াই ক্লিওন থেকে হিটলারের মতো ডেমাগগদের বাগ্বিধি। গণতান্ত্রিক আলোচনার পরিসর এই মান্য যুক্তিবাদী বক্তা ও কুশলী ডেমাগগদের টানাপোড়েন দিয়েই নিয়ন্ত্রিত, অতএব সাধু সাবধান।
আমাদের ভারতীয় ঐতিহ্যেও সাধুকে বার বার সাবধান করা হয়েছে, কিন্তু কোনও মহাজনপদের রাজনীতির পরিসরে নয়, সমাজের নানা ব্যবহারে, ভাষা ও ব্যাকরণের সূত্রে। ভাষাচিন্তার মহান গ্রন্থ ‘মহাভাষ্যে’ পতঞ্জলি তো বার বার নির্দেশ দিয়েছেন শিষ্ট ভাষার চরিত্র কী, ‘অথ শব্দানুশাসন’ দিয়েই তো তাঁর আলোচনা শুরু। সুর ও অসুর, ব্রাহ্মণ ও অব্রাহ্মণ, বৈদিক ও অবৈদিক, উত্তর ও দক্ষিণের নানা পার্থক্যকে ছাপিয়ে এক মান্য শিষ্টসম্মত ভাষার আকারের অনুপুঙ্খ তাত্ত্বিক ভিত্তি তিনি তৈরি করেছিলেন। নানা স্বরে, উচ্চারণে ও লোকব্যবহারে ওই শিষ্টতা কী ভাবে বার বার ভেঙে যায়, তার বিচিত্র উদাহরণও তিনি দিয়েছিলেন। গোত্রে গোত্রে, বর্ণে বর্ণে, ব্রাহ্মণ-অব্রাহ্মণের পরিবার ও সমাজভেদ যেন বার বার তাঁর শিষ্ট ভাষার ছককে ভিতর থেকে নড়িয়ে দিত। কিন্তু এ সবই সমাজনীতিতে, আচরণ ও ব্যাকরণে প্রযুক্ত, হোম করার মন্ত্রোচ্চারণে সিদ্ধ ও নিহিত; রাজনৈতিক বক্তা বা পরিসর তৈরি করার কোনও ছক তাঁর ভাবনায় নেই।
এই শিষ্ট-অশিষ্টের থাকবন্দি সমাজে ঢুকে পড়ে ডিরোজিয়োর শিষ্য ইয়ং বেঙ্গলরা, পাবলিক বক্তৃতা দিয়ে সমাজ-সুধার করাই তাঁদের কাজ। তাঁদের উত্তরসূরি হিসেবে আমরা শুনি সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিপিনচন্দ্র পালের স্বদেশি বক্তৃতা, গত শতকের বাঙালিজীবনে পান্তির মাঠ, অ্যালবার্ট হল আর শ্রদ্ধানন্দ পার্কের রমরমার শেষ ছিল না। কথকদের একপাশে ঠেলে দিয়ে সামনে চলে আসেন পাবলিক বক্তা। মফস্সল ও গ্রামে-গঞ্জে তাঁদের কদর বাড়তেই থাকে, জনপরিসরে অভিনন্দিত হন গাঁধী ও জওহরলাল, সরোজিনী নাইডু ও চিত্তরঞ্জন দাশ, মহম্মদ আলি জিন্না ও ভীমরাও অম্বেডকর। গড়ে ওঠে বক্তৃতা শোনার কালচার, মাঠ উপচে উঠল কি না, কত লোক হয়েছিল, সেই সব হিসেবনিকেশ সংবাদপত্রে সে দিনই শুরু হয়েছিল। এই সব বক্তার বাগ্রীতি আলাদা, পারস্পরিক মতামতে প্রায়ই মিল নেই, কিন্তু গড়ে ওঠা জাতীয়তাবাদী মঞ্চে এঁরা সবাই পাশ্চাত্যের উদারনৈতিক ‘রেটরিক’ তত্ত্বে বিশ্বাসী; সমর্থন আদায়ের প্রয়োজনে যে মাঝে মাঝে ‘ডেমাগগ’দের দিকে ঝুঁকবেন না, তারও গ্যারান্টি দেওয়া যাবে না। রাজনীতিতে প্রবুদ্ধ জনমত দরকার, গণবক্তৃতা প্রবুদ্ধ জনমত তৈরি করার প্রধান মাধ্যম, ভাষার মাধ্যমে আপামর জনগণের মধ্যে যুক্তিসিদ্ধ মতৈক্য গড়া যায়। বোঝা ও বোঝানোর একটি সর্বব্যাপী বৃত্ত তৈরি করবেন প্রবুদ্ধ বক্তারা, তাতে যোগ দেবেন যুক্তিবোধে দীক্ষিত আমজনতা, কারণ যুক্তি সর্বজনীন, শুধু গণপরিসরে খোলসা করে বললেই হল।
এইখানেই থাকবন্দি সমাজের বুড়োটে মনীষী পতঞ্জলি সন্দেহে মাথা নাড়তেন। ভাষা ও যুক্তির জগতে অত সহজেই দুই-দুইয়ে চার হয় না। অবশ্যই তাত্ত্বিক চিন্তা ও লোকব্যবহার অন্বিত, কিন্তু যুক্তির বিন্যাস ও প্রকাশ দু’টি পরিসরে ভিন্ন। যুক্তিও দ্বি-ধারবিশিষ্ট তরবারি, কেবল কাকে ও কী নয়, কোন দিক দিয়ে কাটা হচ্ছে তা-ও বিচার্য। শব্দও কোনও একটি বেড়াজালে চিরতরে আবদ্ধ থাকবে, তারও নিশ্চয়তা নেই, শব্দের ব্যবহার সদাপরিবর্তনশীল। ‘হরিজন’ শব্দ মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর বড় প্রিয়, তাঁর সেবাধর্মের কেন্দ্র। অম্বেডকরের শব্দটায় আপত্তি ছিল, বিতর্ক উঠেছিল। এই সে দিনই কাগজে পড়লাম যে, সরকারি নথিপত্রে বা চিঠিতে শব্দটির ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছে, পাবলিকে না বলাও ভাল, আপত্তি উঠবে। শব্দের রাজনীতি, উঠতি জনগোষ্ঠীর আত্মমর্যাদার প্রশ্ন একটা মান্য শাব্দিক ঐতিহ্যকেই বাতিল করল। বর্মা কমিশনের প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে যৌনকর্মীদের একটি সংস্থা জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছেন, তাঁদের বৃত্তির উপস্থাপনা যথাযথ হয়নি, তাঁরা শঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ।
তাই ভাষা আর শব্দরুচি ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে ঐকমত্য ভঙ্গুর, গণতন্ত্রের প্রসারে আরও নড়বড়ে হয়েছে। রুচি ও ভাষার নিয়ন্ত্রণ আলগা করে সমাজবিবর্তনে নতুন গোষ্ঠীরা মাঝে মাঝে ঢুকবেনই, তাঁদের প্রতিনিধিরা দিগ্গি প্যালেসের কাছে পরিচয়পত্র দেখাতে নারাজ হবেন, ওখানে ঢোকার জন্য তাঁরা আমন্ত্রণ কোনও দিনই পান না, পত্র দেখাবেন কী করে? জোর যার মুলুক তার ছাড়া আর তাঁদের গত্যন্তর কী? এ দিকে বাংলার রাজনীতিতে আকাঁড়া প্রাকৃত বাংলা শব্দের ব্যবহার হঠাৎ বহুগুণে বেড়ে গেছে, সেই সব শব্দ ব্যবহারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিপুণ। ওই ভাষা নিম্নবিত্তের, মেঠো ও জেটো, আমাদের মতো ভদ্রলোকের পরিচিত কিন্তু কানে বাজে। সভা-সমিতি বা যুব উৎসবের মতো পরিসরটি পাড়ার ক্লাবের ফাংশনের ঢঙে মমতা নিজেই নিয়ন্ত্রণ করেন, একেবারে ক্যাডারদের ’পরে নির্ভর নন। মঞ্চে আচরণও স্টেজ-মাফিক, ক্যামেরার জন্য তৈরি। মঞ্চে তুলে আমলাদের বেমক্কা প্রশ্ন করা হয়, পুতুলের মতো তাঁরা এদিকে ওদিকে মাথা নাড়েন। শিল্প-মিট-এ জাঁদরেল শিল্পপতিরা স্যুট পরে বাংলা গান গান, মমতা গলা মেলান। তাঁর ও তাঁর অনুগামীদের পাবলিকভাষাও এই সব আচরণের অনুষঙ্গেই ঋ
দ্ধ। বোদ্ধাদের বিচারে এই সব আচরণ, রুচি ও সৌজন্যের বিপর্যয়, বালখিল্য, গণতান্ত্রিক সূত্রেই হয়তো বা আরও বিপদজনকভাবে ডেমাগগসুলভ, স্বৈরতন্ত্র কায়েম হওয়ার লক্ষণ। অন্য পক্ষের বিচারে, হেটো-মেঠো নিয়ে ছুতমার্গ করলে চলবে না, ওই সব আচরণই মিডিয়া মনোরঞ্জক, মাথাগোনা ভোটের রাজনীতিতে কার্যকর। আর হুমকি দেওয়া, গরম খাওয়ানো তো রাজনীতির অঙ্গ, আগে তৎসম শব্দতেও ভাল মতো দেওয়া হত। বঙ্গরাজনীতির ক্লাসিক হুমকি দেওয়ার কৃতিত্ব খোদ বামপন্থী প্রমোদ দাশগুপ্তের— ‘পুলিশের গুলিতে কি নিরোধ লাগানো আছে, গুলি ছোটে অথচ নকশাল মরে না!’ মমতার শাসনকালে অবশ্য কিষেণজি নিহত হয়েছেন, কিন্তু ওই রকম মোক্ষম রাজনৈতিক হুমকির বাক্যবন্ধ তৈরি করতে মমতা আজও পারেননি। ভবিষ্যতে কী হবে অবশ্যই বলা যায় না।
ভাষার দাপট, রুচির প্রতিযোগিতা আর মিডিয়ার নজরদারিতে হরিপদদের কথা বলা আর মানে করার দিগ্দারি ঘুচে যাওয়ার উপক্রম, হাতের কাছে পছন্দ মতো নোটবই পাওয়া যায়। তবে কারও ভাবার কুঅভ্যাস আজও বজায় থাকলে শোনা ও শোনানোর সুযোগ ইতিউতি খুঁজে দেখবার বদ ইচ্ছে চাগাড় দেবে, সুযোগ পাওয়া মুশকিল। অসংখ্য বলার মধ্যে ঠিক স্বর শুনতে চাই, তবেই তো মনের মতো করে শোনাতে পারি। কান পেতে থাকার অভ্যাসই ঠিক করতে পারে কোন শব্দটা শুনব, কোনটাকে বাছব? ওই তৈরি কানে ধরা পড়া বাছাই করা শব্দই ঠিক করবে, কখন কোনটা বলব, আর কখন নিছক চুপ করে থাকাটাকেই সূচিতীক্ষ্ণ ও বাঙ্ময় করে তুলব।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.