|
|
|
|
|
উত্তুরে বৃষ্টির প্রভাবেও রাজ্যে
শীত ফেরার আশা নেই
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
কাশ্মীর থেকে নেমে আসা একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝার জেরে বর্ষার আমেজ উত্তর ভারতে। সঙ্গে দিনের বেলায় প্রচণ্ড ঠান্ডাও। মৌসম ভবন জানিয়েছে, আগামী দিন কয়েকের মধ্যে এই বায়ুপ্রবাহ মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, বিহার, ঝাড়খণ্ড হয়ে ঢুকবে পশ্চিমবঙ্গে। যার জেরে আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখা যাবে। বৃষ্টি হতে পারে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে। তবে তার জেরে উত্তর ভারতের মতো ঠান্ডা পড়বে না বলেই জানিয়েছেন আবহবিদেরা।
কী এই পশ্চিমি ঝঞ্ঝা? আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা বায়ুপ্রবাহই হল পশ্চিমি ঝঞ্ঝা। যা আফগানিস্তান, পাকিস্তান হয়ে কাশ্মীরে ঢোকে। তার পর নেমে আসে দেশের সমতলের দিকে। এই বায়ুপ্রবাহের প্রভাবেই শীতকালে বৃষ্টি-তুষারপাত হয়। মৌসম ভবন জানিয়েছে, এমনই একটি ঝঞ্ঝা ও তার প্রভাবে পশ্চিম রাজস্থানে তৈরি হওয়া আরও একটি ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবেই উত্তর ভারত জুড়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড, হিমাচলে তো ভারী বৃষ্টি হচ্ছেই, রেহাই মিলছে না পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশেরও। দেশের সমতলে কোনও কোনও এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০-৫০ মিলিমিটারের কাছাকাছি বৃষ্টি হয়েছে। মৌসম ভবনের এক আবহবিদ জানিয়েছেন, দেশের সমতলে সব থেকে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে, ৫৪.৭ মিলিমিটার। |
|
পড়ছে গরম। বাড়ছে অস্বস্তি। শহরের রাস্তায়। —নিজস্ব চিত্র। |
পুণের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া পূর্বাভাস দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল মেধা খোলে জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টা উত্তর ভারত জুড়ে বৃষ্টির দাপট চলবে। আগামিকাল, শুক্রবার থেকে তা পূর্ব দিকে সরে যেতে পারে। মেধা বলেন, “ঝঞ্ঝাটি পূর্ব দিকে সরে গেলে উত্তরপ্রদেশের পূর্র্বাঞ্চল, বিহার, ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। একই পরিস্থিতি হবে মধ্যপ্রদেশের একাংশ ও ছত্তীসগঢ়েও। বিহার, ঝাড়খণ্ড পেরিয়ে পশ্চিমি ঝঞ্ঝাটি পরে পশ্চিমবঙ্গেও ঢুকবে।”
আবহবিদেরা বলছেন, জোরালো বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর ভারত জুড়ে দিনের তাপমাত্রা অনেকটা কমে গিয়েছে। ভরদুপুরেও হাড় কাঁপানো ঠান্ডা মালুম হয়েছে। হরিয়ানা, দিল্লিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৪-৫ ডিগ্রি নীচে নেমে গিয়েছে। মৌসম ভবন এ দিন এক বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, আগামী দিন দুয়েকের মধ্যে উত্তর-পশ্চিম ভারত ও সংলগ্ন মধ্যপ্রদেশে রাতের তাপমাত্রাও কমতে পারে।
এ রাজ্যের পরিস্থিতি কী?
হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, দক্ষিণবঙ্গ থেকে শীত বিদায় নেওয়ার পালা শুরু হতেই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের পারদ এখন ঊর্ধ্বমুখী। এ দিন মহানগরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এই সময়ের স্বাভাবিক। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির মতো তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে উপরে রয়েছে উত্তরবঙ্গেও। আবহবিদদের ব্যাখ্যা, সাধারণত জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকেই দক্ষিণবঙ্গে শীতের বিদায় বেলা শুরু হয়ে যায়। এ বার পশ্চিমী ঝঞ্ঝার দাপটে তা আরও কিছুটা গতি পেয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে বৃষ্টির প্রভাবে তাপমাত্রার তেমন হেরফের হবে না বলেই তাঁরা জানিয়েছেন। |
উত্তরের ধারা-পাত |
স্থান |
বৃষ্টি* |
সিমলা |
৭৫.৬ |
দেরাদুন |
৭১.৫ |
লখনউ |
৫৪.৭ |
কারনাল |
৩৯.২ |
দিল্লি |
২৩.৬ |
* বৃষ্টি মিলিমিটারে |
|
কেমন কাটবে আগামী কয়েক দিন?
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ এ দিন বলেন, “আগামী ৪৮ ঘণ্টা পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে আকাশ মেঘলা থাকবে। বীরভূম, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদে হাল্কা বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকবে।” |
|
|
|
|
|