|
|
|
|
লোক টানার লড়াই দুই বাম দলের মধ্যে |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
যাকে বলে ‘ফ্রেন্ডলি ফাইট’! তবে ভোটের নয়। জনসভার!
সপ্তাহান্তের কলকাতায় পিঠোপিঠি সমাবেশকে ঘিরেই জমে উঠেছে বামফ্রন্টের ঘরোয়া লড়াই! বেশ কিছু দিন পরে শহিদ মিনার ময়দানে হতে চলেছে বামেদের সভা। শনিবার বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের। পর দিন, রবিবার সিপিএমের। আর তা নিয়েই একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে দুই শরিক। প্রথমটির মুখ্য বক্তা প্রবীণতম বাম নেতা অশোক ঘোষ। দ্বিতীয়টিতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে বামফ্রন্টের এখনও পর্যন্ত ব্রিগেড সমাবেশের পরিকল্পনা নেই। কলকাতা জেলা কমিটির শহিদ মিনার সমাবেশকেই মিনি ব্রিগেডের চেহারা দিতে চাইছে সিপিএম। বক্তা তালিকায় যেমন বুদ্ধবাবু, বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রের মতো ‘হেভিওয়েট’ নেতারা, তেমনই রবিবারের সমাবেশের প্রস্তুতি হিসাবে লাগাতার ছোট ছোট সভায় রাজ্য কমিটি থেকে পলিটব্যুরোর ভিন্ রাজ্যের নেতাদের পর্যন্ত নামিয়ে দিয়েছেন কলকাতা সিপিএমের নেতৃত্ব। রাজ্যর নানা কাজকর্মে শহরের জনমানসে অসন্তোষ থাকলেও সাংগঠনিক ভাবে দল সে ভাবে চাঙ্গা হতে পারছে না বলে আলিমুদ্দিনের কাছে সম্প্রতি হলুদ কার্ড দেখতে হয়েছে কলকাতা জেলা সিপিএমকে। বিমানবাবুদের সামনে শহিদ মিনার ময়দান উপচে দিয়েই নিজেদের সাংগঠনিক কৃতিত্ব প্রমাণ করতে চান কলকাতার সিপিএম নেতৃত্ব!
বাম শরিক ফব-র সামনে অনেকটা পঞ্চায়েত ভোটের আগে অস্তিত্ব বজায় রাখার লড়াই। ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে ৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বসছে তাদের রাজ্য সম্মেলন। সেই উপলক্ষেই শহিদ মিনারের সমাবেশ। যা ‘সফল’ করে তারা শাসক দলের পাশাপাশি বামফ্রন্টের মধ্যে বড় শরিককেও পঞ্চায়েতের আসন বণ্টনের আগে বার্তা পাঠাতে চায়। ফব-র রাজ্য কমিটির সর্বশেষ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার সাংগঠনিক জেলা কমিটিকে শনিবারের সমাবেশে লোক আনার দায়িত্বের বাইরে রাখা হয়েছে। ফব-র সাংগঠনিক বিন্যাস অনুযায়ী বাকি ১৯টা জেলা কমিটি লোক দেবে কলকাতার সমাবেশের জন্য। জেলা নেতৃত্ব যেমন অঙ্গীকার করেছেন, সেই মতোই লোক আনার ‘টার্গেট’ বেঁধে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। দলের রাজ্য কমিটির এক সদস্যের কথায়, “এমন ভাবে এই সমাবেশ করতে চাইছি, যাতে ২৪ ঘণ্টা পরে নতুন করে ভিড় নিয়ে কেউ আলোচনা না করে!”
সিপিএমের কলকাতা জেলা নেতৃত্বের আক্ষেপ, রাজধানী শহরে দল বা ফ্রন্টের কোনও কর্মসূচি হলেই তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা তাতে যোগ দেন। তাই আলাদা করে কলকাতা জেলা কমিটির কৃতিত্ব আর চোখে পড়ে না। এ বার সেই আক্ষেপ মেটানোর সুযোগ! কলকাতা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, “আটের দশকে কলকাতা জেলার ডাকে ব্রিগেড সমাবেশ পর্যন্ত হয়েছে। এ বার শহিদ মিনারের সমাবেশের জন্য বাড়ি বাড়ি প্রচার হয়েছে, সই সংগ্রহ হয়েছে। আশা করছি, স্মরণীয় জমায়েত হবে।” কলকাতার জমায়েত মাথায় রেখেই ত্রিপুরায় বিমানবাবু, মহম্মদ সেলিমদের জন্য প্রচার কর্মসূচি সাজানো হয়েছে। শহরে জমায়েত করলেও পঞ্চায়েত ভোটের আগে দুই বাম দলের চোখ অবশ্য থাকবে গ্রামের দিকেও। |
|
|
|
|
|