|
|
|
|
ডিআরএম দফতরে ভাঙচুর, কর্তাদের হেনস্থা শিয়ালদহে |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
প্রতিবন্ধী এক মহিলা রেল কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর জেরে বুধবার শিয়ালদহ ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারের দফতরে তুলকালাম কাণ্ড হয়। কাজের চাপ বাড়িয়ে দেওয়ায় ওই মহিলা আত্মঘাতী হয়েছেন, এই অভিযোগ করে কর্মীদের একটি অংশ ডিআরএম দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে রেল কর্তাদের আটকে রাখেন। নিগ্রহও করেন। দফতরের দরজা, জানলার কাচ ভাঙচুর হয়। আরপিএফ এসে রেল কর্তাদের উদ্ধার করে। রেল কর্তৃপক্ষের তরফে এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
কাজ বন্ধ করে কর্মীদের এই অহেতুক বিক্ষোভে বিরক্ত রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী বলেছেন, “যারা এই বিক্ষোভ ভাঙচুর করেছেন, তাঁরা কেউই কাজ করেন না। কাজ না করে বিক্ষোভ দেখানো বরদাস্ত হবে না।” প্রতিমন্ত্রী বলেন, “শিয়ালদহের ডিআরএম যথেষ্ট অভিজ্ঞতা সম্পন্ন, কাজের লোক। মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে হেনস্থা করা হবে, এটা মানা যায় না। ওই কর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” রেল প্রতিমন্ত্রীর অভিযোগ, “বিক্ষোভকারীদের পিছনে তৃণমূল সমর্থিত কর্মীরাও আছে। ওঁরা কত বিক্ষোভ দেখাবে দেখান। রেলের কাজে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে আমারও যত দূর যেতে হয় যাব।” |
শিয়ালদহ ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারের দফতরের সামনে কর্মীদের বিক্ষোভ। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র। |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে মঞ্জু সিংহ রায় (৫০) নামে এক রেল কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। রাজারহাটে নিজের বাড়ি থেকে ওই মহিলার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি শিয়ালদহ ডিআরএম দফতরের পার্সোনেল বিভাগের কর্মী ছিলেন। বুধবার সকালে অফিসে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই কর্মীদের একাংশ পার্সোনেল দফতরের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কাজের চাপ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্যই ওই মহিলা আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে রাজারহাট থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তাঁর চিকিৎসাও চলছিল। এর আগে আরও এক বার তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।
বিক্ষোভ শুনে শিয়ালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার সুচিত্র দাস হস্তক্ষেপ করেন। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তিনি আলোচনা করেন। পরে রেলের দুই ইউনিয়নের নেতাদের ডেকেও কথা বলেন। প্রতিশ্রুতি দেন, তদন্ত করে দেখে কাজের চাপ সত্যিই বেশি থাকলে কমানোর ব্যবস্থা করা হবে। এর পরে বিষয়টি মিটেও যায়। কিন্তু তার পরে আবার কিছু কর্মী এসে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু করে। ওই সময় ডিআরএম-সহ কয়েক জন রেল কর্তাকে হেনস্থা করা হয়। আরপিএফ ও পুলিশ সূত্রে খবর, রেলেরই তিন-চার জন কর্মী ওই বিক্ষোভে পিছন থেকে নেতৃত্ব দেন। কেউই ডিআরএম দফতরের কর্মী নন। রেলের কোনও স্বীকৃত ইউনিয়নেরও সদস্য নন।
ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত হবে বলে শিয়ালদহের ডিআরএম জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, “এর আগে ওই কর্মী দু’বার স্বেচ্ছাবসর নিতে চাইলেও আমরা নিতে দিইনি।” তবে কাজের চাপ যে একটু বেশি এটা তিনি মেনে নিয়েছেন। কারণ হিসাবে তাঁর ব্যাখ্যা, “গত বছর পে কমিশনে কর্মীদের বকেয়া টাকার হিসেব চলছে। সে জন্য কাজের একটু চাপ বাড়তে পারে। তবে সেটা মৃত্যুর কারণ হতে পারে না।” |
|
|
|
|
|