|
|
|
|
বিয়ের আসর বসাবেন? ঢুকে পড়ুন পুরসভার পার্কে |
অনুপ চট্টোপাধ্যায় |
কাউন্সিলর সঞ্চিতা মণ্ডল জানেন না। জানেন না মেয়র পারিষদ (পার্ক ও উদ্যান) দেবাশিস কুমার। এমনকী, খোদ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়েরও গোচরে নেই। অথচ, কলকাতা পুরসভা থেকে ঢিল-ছোড়া দূরত্বে, মধ্য কলকাতার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারের মাঠে রীতিমতো মণ্ডপ সাজিয়ে বসল বিয়ের আসর। যদিও কলকাতা পুরসভার নিয়মে পার্কের মধ্যে বিয়েবাড়ি পুরোপুরি নিষিদ্ধ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এমনটা প্রায়ই হয়। বিয়ের মরসুমে মাঠটি ভাড়া দেয় মাঠের ওই অংশে থাকা একটি ক্লাব। সেই ভাড়ার একটা টাকাও পুরসভার ভাঁড়ারে জমা পড়ে না। পুরসভা সব জেনেও চুপচাপ থাকে। তবে, এই খবর জানাজানি হতেই রাতে পুরসভার পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে ওই ক্লাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। |
সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে সেজে উঠেছে বিয়েবাড়ি। বুধবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী |
বুধবার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে গিয়ে দেখা যায়, খেলাধুলোর মাঠের মধ্যেই বসে গিয়েছে জমজমাট বিয়ের আসর। পুরো মণ্ডপ জুড়ে আলোর রোশনাই। চার দিকে সাজানো রয়েছে খাবারের সম্ভার। মণ্ডপে ঢোকার আগে রাস্তার পাশেই সুদৃশ্য প্রবেশদ্বার। তাতে লেখা রয়েছে, ‘রে’জ ওয়েডিং।
বিয়েবাড়ির এক অতিথি জানান, ওই পুর-উদ্যানে চলছে বৌবাজারের বাসিন্দা দেবাশিস রায়ের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান। গেটে অতিথি সামলানোর কাজে পুলিশকেও দেখা গেল।
শুনে মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার অবাক। বললেন, “তাই নাকি? পার্কের ভিতরে বিয়ে হচ্ছে?” তাঁর কথায়, “এটা সম্পূর্ণ বেআইনি কাজ। এর জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ওই এলাকার কাউন্সিলর, তৃণমূলেরই সঞ্চিতা মণ্ডল। তিনি পুরসভার পরিবেশ দফতরের মেয়র পারিষদও। থাকেনও ওই এলাকায়। তবে তিনিও নাকি ব্যাপারটা জানতেন না। প্রশ্ন করতেই বললেন, “ওখানে ছাত্র সমিতি নামে একটা ক্লাব খেলাধুলো করে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে।”
অভিযুক্ত ক্লাবের সভাপতি অশোক ঘোষও বিয়ের খবর জানেন না। তিনি বলেন, “সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার সময়ে দেখলাম পার্কে একটা বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে। কে বা কারা করছে, তা জানি না।” তাঁদের ক্লাবের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ নিয়ে অশোকবাবু বলেন, “করুক না। তা হলে তো পুরো বিষয়টাই জানা যাবে।”
যাঁর মেয়ের বিয়ে, অর্থাৎ দেবাশিস রায় নামে কাউকে চেনেন কি না জানতে চাইলে অশোকবাবুর জবাব, “চিনি না।” সন্ধ্যায় বিয়েবাড়িতে গিয়েও দেবাশিসবাবুর খোঁজ করা হয়েছিল। দেখা মেলেনি।
পুরো বিষয়টা নিয়ে মেয়র বলেন, “কিছুই জানি না। খোঁজ নিতে হবে।” রাতে পুরসভার ডিজি (পার্ক ও উদ্যান) দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “মুচিপাড়া থানায় ‘ছাত্র সমিতি’ ক্লাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” |
|
|
|
|
|