শুল্ক বাড়িয়েও তেমন রাশ টানা যাচ্ছে না সোনার আমদানিতে। তাই এ বার আর কী ভাবে তা করা যায়, তার সন্ধানে নেমেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এ বিষয়ে, শীর্ষ ব্যাঙ্কের বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ, বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির মাধ্যমে সোনা আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হোক। সরাসরি কমানো হোক তার আমদানি। সেই সঙ্গে তাদের প্রস্তাব, গঠন করা হোক বুলিয়ন কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া। সোনা আমদানি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব বর্তাক ওই নিগমের উপরেই।
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, নিগমের শেয়ার মূলধন হবে হাজার কোটি টাকা। শুরুতে এর ৫১% মূলধন জোগাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বাকি ৪৯% আসবে বিভিন্ন আর্থিক সংস্থার কাছ থেকে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক চায়, সোনার কয়েন আমদানিতে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক ও অন্য আমদানি সংস্থার উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হোক। কিন্তু আখেরে এই প্রস্তাব কার্যকর হলে, তা কতটা ফল দেবে? জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান পঙ্কজ পারেখ বলেন, “আমদানি হওয়া সোনার ৩৯ শতাংশই গোল্ড কয়েন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সোনায় লগ্নির লক্ষ্যে সাধারণ খুচরো লগ্নিকারীরা গোল্ড কয়েন কেনেন। যেমন, ধনতরাস বা নববর্ষে তা কেনার হিড়িক পড়ে যায়। অথচ ওই কয়েন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঘরে বা ব্যাঙ্কের লকারে জমে থাকে। দেশের আর্থিক শ্রী বৃদ্ধির কাজে লাগে না। তাই কয়েন আমদানি কমলেই সিংহ ভাগ সমস্যার সমাধান হবে বলে আমার ধারণা।”
অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ট্রেড ফেডারেশনের চেয়ারম্যান বাছরাজ বামালুয়া বলেন, “আমদানি শুল্ক বাড়ায় চাহিদা তো কমেইনি। বরং আমাদের হিসাব মতো ২০১২ সালে প্রায় ৩০০ টন সোনা চোরা পথে ঢুকেছে। শুল্ক বাড়লে যে চোরা পথে আমদানি বাড়ে, তা স্বীকার করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওই বিশেষজ্ঞ কমিটিও।”
উল্লেখ্য, গত ২১ জানুয়ারি সোনায় আমদানি শুল্ক ৪% থেকে বাড়িয়ে ৬% করেছে কেন্দ্র। গত এক বছরে শুল্ক ১% থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬%। কিন্তু তা সত্ত্বেও সোনার চাহিদা কমেনি। সরকারি হিসাবে সোনার আমদানি কিছুটা কমেছে। ২০১১ সালে আমদানি হয়ছে প্রায় ৭৫০ টন। তার আগের বছর যা ছিল ৯৬৯ টন। তবে সোনা ব্যবসায়ী মহল সূত্রে খবর, সেই ‘ঘাটতি’ পুষিয়ে দিয়েছে চোরা পথে আমদানি। সম্প্রতি বিশ্ব বাজারে সোনার দাম হ্রাসও চাহিদা না কমার অন্যতম কারণ বলে তাঁদের দাবি। |