|
|
|
|
ধর্ষণ, গ্রেফতার সৎ বাবা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাটোয়া |
স্ত্রীর প্রথম পক্ষের মেয়েকে ধর্ষণ করে রেললাইনের পাশে ফেলে রেখে গিয়েছিল সৎ বাবা। পুলিশ প্রথমে শিশুটির পরিচয় জানাতে পারেনি। কিন্তু বিজ্ঞাপনে ছবি দেখে আসল বাবা খবর দিলেন পুলিশে।
একরত্তি মেয়েটাকে দেখার পরে স্বামীর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন করিনা বিবি। পরপর চড়-থাপ্পড় মেরে হাঁফাচ্ছিলেন। মহিলাকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী কবিরুদ্দিন শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ গুরুতর, মহিলার প্রথম পক্ষের শিশুকে ধর্ষণ করে খুনের চেষ্টা করেছিল সে।
গত ২৪ ডিসেম্বর বর্ধমানে কাটোয়ার গোয়াই গ্রামে রেললাইনের পাশের ঝোপ থেকে তিন বছরের শিশুকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন এক মহিলা। তিনিই তাকে কাটোয়া হাসপাতালে নিয়ে যান ও পুলিশে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। ডাক্তারি পরীক্ষাতেও ধর্ষণের প্রমাণ মেলে। পরিচয় না মেলায় ৪ জানুয়ারি শিশুটিকে বর্ধমান শহরে শিশুবিকাশ কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “শিশুটির পরিচয় জানতে পুলিশ সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেয়। প্রচারপত্র ছড়ানো হয়। শিশুটিকে নানা জায়গায় নিয়ে যাওয়াও হয়।”
সপ্তাহখানেক আগে মুর্শিদাবাদের সুতির আহিরণ গ্রাম থেকে বর্ধমানে গিয়ে শিশুটির বাবা মেয়েকে শনাক্ত করেন। তিনিই জানান, স্ত্রী করিনা বিবির সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ হয়েছে কয়েক মাস আগে। তাঁদের মেয়ে করিনার কাছেই ছিল।
কিছু দিন আগে করিনার বিয়ে হয় মুর্শিদাবাদের শক্তিপুরের কাটাইকোনার বাসিন্দা কবিরুদ্দিনের।
করিনা বিবি পুলিশকে জানান, বিয়ের পরে তাঁরা দিল্লি যান।
সেখান থেকে ফিরে ২৪ ডিসেম্বর বিকেলে কাটোয়া পৌঁছন। মেয়ে কান্নাকাটি শুরু করায় কবিরুদ্দিন তাকে নিয়ে বিস্কুট কিনতে যান। ঘণ্টা দেড়েক পরে ফিরে জানান, মেয়ে হারিয়ে গিয়েছে। খোঁজাখুঁজি করে মেয়েকে না পেয়ে তাঁরা মুর্শিদাবাদ চলে যান।
করিনার অভিযোগ, “কবিরুদ্দিন বলেছিল, সে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছে। তারা জানিয়েছে, মেয়ে মারা গিয়েছে। পুলিশই মেয়েকে কবর দিয়েছে। আমি তার কথা বিশ্বাস করেছিলাম।” ২৬ ডিসেম্বর তাঁরা ফের দিল্লি চলে যান।
পুলিশ জানায়, আসল বাবার থেকে মেয়েটির পরিচয় জেনে করিনা বিবি ও কবিরুদ্দিনের খোঁজ শুরু হয়। জানা যায়, তাঁরা কালনার বুলবুলিতলায় রয়েছেন। মঙ্গলবার পুলিশ সেখানে যায়। মেয়ের ছবি দেখাতেই করিনা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সে দিনই ওই দম্পতিকে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান শিশুবিকাশ কেন্দ্রে। জেলার এক পুলিশকর্তা বলেন, “মেয়েকে দেখার পরেই ওই মহিলা স্বামীর গালে পরপর চড় মারেন। একই ঘটনা ঘটে কাটোয়া থানাতেও।”
পুলিশের দাবি, জেরায় কবিরুদ্দিন জানায়, শিশুটিকে সে সহ্য করতে পারছিল না। তাই স্টেশন থেকে বেরিয়ে ফাঁকা জায়গায় যায়। সেখানে নির্যাতনের পরে শিশুটি অজ্ঞান হয়ে পড়লে মারা গিয়েছে ভেবে ঝোপে ফেলে পালায়। বুধবার ধৃতের পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় কাটোয়া আদালত। গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয় করিনা বিবির।
মেয়েকে ফিরে পেতে তিনি আদালতে আবেদন করেছেন।
|
(শিশুটির বাবা-মায়ের নাম পরিবর্তিত) |
|
|
|
|
|