রাজ্য সরকারের অনুমোদিত বই জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (প্রাথমিক) দফতর থেকে না পৌঁছনোয় মালদহ জেলার বেশিরভাগ স্কুলে পঞ্চম শ্রেনির ক্লাস শুরু করতে পারেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ দিকে জানুয়ারি মাস শেষেও ক্লাস শুরু না হওয়ায় ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবক মহলে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ, পঞ্চম শ্রেনিতে পাঠরতদের অনুপাতে অর্ধেক বই জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিস থেকে সরবরাহ করা হয়েছে। ওই বই কোন ছাত্রকে দেওয়া হবে সেটা ভেবে বিলি করা হয়নি। সবার জন্য বই না পাঠানো হলে তাঁরা ক্লাস শুরু করতে পারবেন না বলেও জানিয়ে দেন।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) তৃপ্তি গুহ বলেন, “রাজ্যে ছাত্রছাত্রীদের বইয়ের যে রিকুইজিশন পাঠানো হয়েছিল সেখানে জেলার ১৭০টি নতুন স্কুল ও সংখ্যালঘু এমএসকে স্কুলের বইয়ের তালিকা পাঠানো হয়নি। কিন্তু বই বিলির করার সময় স্কুলগুলিতে সমস্যা দেখা দেয়। স্কুলগুলিতে দ্রুত বাকি বই পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।” জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আশীষ চৌধুরী বলেন, “পাঠ্যপুস্তকের অভাবের জন্য পঞ্চম শ্রেণির ক্লাশ শুরু করা যাচ্ছে না এটা কেউ এখনও জানায়নি। অভিযোগ পেলে নিশ্চই ব্যবস্থা নেওয়া হত।”
হবিবপুরের কেন্দপুকুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিপ্লব সরকার জানান, তাঁর স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৪০০ জন। ইংরেজি ৩০০, বাংলা ২০০, অঙ্ক ২০০, আমাদের পরিবেশ ২০০ কপি বই এসেছে। ৪০০ ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ওই ২০০ কপি বই কাকে দেওয়া হবে সেটা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। তাই তাঁরা বই বিলি করেননি। বিপ্লববাবু বলেন, “যে পড়ুয়া বই পাবে না তার অভিভাবক স্কুলে এসে ঝামেলা করবে। ওই কারণে পঞ্চম শ্রেণির বই দেওয়া হয়নি।” ডাল্লা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়দেব লাহিড়ি বলেন, “আমার পঞ্চম শ্রেনির ছাত্রছাত্রী ৩৫০ জন। পাঠ্যপুস্তক পেয়েছি ২০০টি। কেমন করে বই দেব! সমস্যার কথা সার্কেল ইন্সপেক্টরকে কয়েকবার বলেছি। কিন্তু তারপরেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” একই অভিযোগ সামু হেমব্রাম হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষক অর্নব সরকারের। হেডমাস্টার অ্যসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক চঞ্চল ঝা বলেন, “গ্রামের বেশিরভাগ স্কুলে বই পৌঁছয়নি। এটা হওয়ার কথা ছিল না। জেলা থেকে চলতি শিক্ষাবর্ষে পঞ্চম শ্রেণির জন্য বইয়ের যে বরাদ্দ চেয়ে পাঠানো হয় রাজ্য থেকে প্রকৃতি বিজ্ঞান ছাড়া বাংলা ও অঙ্ক বই বেশি পাঠানো হয়েছে।” |