পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশ কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগে এসএফআইয়ের উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক সহ সংগঠনের তিন নেতাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার দুপুরে রায়গঞ্জের সুর্দশনপুর এলাকা থেকে ওই ছাত্র নেতাদের ধরা হয়। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম প্রাণেশ সরকার, সোলেমান আলি ও বিট্টু সরকার। প্রাণেশবাবু এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক। এ ছাড়াও তিনি সিপিএমের রায়গঞ্জ লোকাল কমিটির সদস্য। সোলেমানবাবু সংগঠনের জেলা কমিটির সদস্য। জেলা কমিটির অপর সদস্য বিট্টুবাবু রায়গঞ্জ আইটিআই কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক। তাঁদের বাড়ি রায়গঞ্জের রবীন্দ্রপল্লি, পশ্চিম কর্ণজোড়া ও কালীবাড়ি এলাকায়। ধৃতদের এদিন রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হলে বিচারক অঞ্জনকুমার সেনগুপ্ত তাঁদের আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
সরকারি আইনজীবী নীলাদ্রি সরকার বলেন, “সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, পুলিশ কর্মীদের কাজে বাঁধা দেওয়া ও তাঁদের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ৪২৭, ৩৫৩ ধারা সহ ১৪৩, ৩৪১, ১৮৬ ও ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।” অভিযুক্তদের আইনজীবী সঞ্জীব নাগ অবশ্য বলেন, “পুলিশ রাজনৈতিক চাপে তিন এসএফআই নেতাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে।” রায়গঞ্জ থানার আইসি দীনেশ প্রামাণিক ওই বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। তিনি জানান, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের ৩০ নভেম্বর রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ মহাবিদ্যালয়ের উন্নয়নের দাবিতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একদল সমর্থক অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি জমা দিতে যায়। ওই সময় এসএফআই সমর্থকদের সঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। ঘটনায় প্রাণেশবাবু ও তৃণমূল নেতা অরিন্দম সরকার সহ দু’পক্ষের ৯ জন জখম হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে এসএফআই সমর্থকরা আগ্নেয়াস্ত্র সহ এক বহিরাগত যুবককে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। অভিযোগ, ওই যুবককে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময়ে এসএফআই সমর্থকরা পুলিশ কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। সেই সময়ে তারা পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। দুই পুলিশ কর্মী জখম হন।
সোমবার রায়গঞ্জ জেলা আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি রফিকুল ইসলাম এবং সিপিএমের রায়গঞ্জ লোকাল কমিটির সম্পাদক নীলকমল সাহা বলেন, “এসএফআই সমর্থকরা ঘটনার দিন আগ্নেয়াস্ত্র সহ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক সমর্থককে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু পুলিশ ওই যুবককে ছেড়ে দিলে ছেলেরা রুখে দাঁড়ায়। ওই সময় পুলিশ নিজেই গাড়ি ভাঙচুর করে এসএফআই নেতাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অজয় সরকার ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, “পুলিশের উপরে হামলা চালিয়ে এখন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।” |