ভাঙড়-কাণ্ডে জামিন সিপিএম নেতার
ভাঙড়ে তৃণমূলের দায়ের করা এফআইআর ‘পাল্টা’, বলল কোর্ট
দালতে ফের ধাক্কা খেল শাসক দল।
সিপিএম বিধায়ক আব্দুল রেজ্জাক মোল্লা ভাঙড়ে আক্রান্ত হওয়ার পরে তাঁর গাড়ির চালক পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেন তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলামের নামে। কয়েক ঘণ্টা পরেই রেজ্জাক-সহ কয়েক জনের নামে পুলিশের কাছে এফআইআর করেন তৃণমূলের এক গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতি। সোমবার এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ তৃণমূল নেতার করা এফআইআরটিকে ‘পাল্টা’ বলে মন্তব্য করলেন।
এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তুষার ঘোষ কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানান। ডিভিশন বেঞ্চ কোনও শর্ত ছাড়াই তুষারবাবুর আগাম জামিন মঞ্জুর করে। তাঁর আগাম জামিনের রায় দিতে গিয়েই বেঁওতা গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতি তৃণমূল নেতা বিমল নস্করের দায়ের করা এফআইআরের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে ডিভিশন বেঞ্চ।
গত ৬ জানুয়ারি বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা ভাঙড়ে আক্রান্ত হন। তাঁর দাঁত নড়ে যায়, ঠোঁটে সেলাই করতে হয়। তাঁর গাড়িতে ভাঙচুরও করা হয়। পরে হাসপাতালে পরীক্ষা করে দেখা যায়, প্রবীণ বিধায়কের মেরুদণ্ডের হাড়ে চিড় ধরেছে। রেজ্জাকের গাড়ির চালক অমর ঘোষ এফআইআর-এ অভিযোগ করেন, ভাঙড়ের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক আরাবুল ইসলাম নিজে রেজ্জাক মোল্লাকে আক্রমণ করেছেন। এর প্রায় এক সপ্তাহ পরে পুলিশ আরাবুলকে গ্রেফতার করে। কিন্তু বিধায়ককে মারধরের ঘটনায় পাঁচ দিনের মাথায় জামিন পান তিনি।
এ দিন জামিনের আবেদন জানিয়ে সিপিএমের তুষার ঘোষের আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য জানান, সত্তরোর্ধ্ব বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লাকে আক্রমণ করার ৪৮ ঘণ্টা পরেও পুলিশের তদন্ত শুরু না করায় এবং প্রধান অভিযুক্ত (আরাবুল) এলাকায় থাকা সত্ত্বেও তাঁকে গ্রেফতার না করায় আলিপুরে জেলাশাসকের দফতরে সিপিএম একটি অবস্থান সমাবেশের ডাক দেয়। সেই সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য ওই এলাকার সদস্য-সমর্থকেরা কয়েকটি গাড়ি ভাড়া করে আলিপুরে যাচ্ছিলেন। তখন ওই গাড়িগুলি আক্রান্ত হয়। বোমা ছোড়া হয় এবং বেশ কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সিপিএমের কয়েক জন গুরুতর ভাবে আহত হন। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরে লেদার কমপ্লেক্স থানায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে এফআইআর করে অভিযোগ করা হয়, সিপিএম সদস্যেরা বোমা মারে ও আরাবুলকে গুলি করে। তারাই গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই এফআইআর-এ অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে তুষারবাবুর। তৃণমূলের তরফে দায়ের করা এই এফআইআরটিকেই ‘পাল্টা’ বলে মনে করে ডিভিশন বেঞ্চ।
বিকাশবাবুর অভিযোগ, বিধায়কের উপর হামলার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী গাড়ির চালক এফআইআর করার পরেও প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়নি। পরে গ্রেফতার করা হলেও তিনি ক’দিনের মধ্যেই জামিন পেয়ে যান। অথচ নিজেদের ভাড়া করা গাড়িতে আগুন ধরিয়েছে, এমন অবাস্তব অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে। এর পরেই ডিভিশন বেঞ্চ তুষারবাবুর আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে। তৃণমূল নেতাদের এফআইআরটিকে বেঞ্চ ‘পাল্টা’ বলার অর্থ, আইনের চোখে এটি সাজানো অভিযোগ।হাইকোর্টের বক্তব্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জবাব, “আইন আইনের পথে চলবে।” এ দিন, আরাবুল ইসলাম জেলা আদালতে জামিনের আবেদন করেছেন। রেজ্জাক মোল্লাকে আক্রমণের মামলায় জামিন পেলেও বামনঘাটায় গাড়ি পোড়ানো ও বোমা মারার ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে জামিন পাননি আরাবুল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.