অস্ট্রেলীয় ওপেন শেষ হল আমার মতে মেয়েদের ফাইনালে অপ্রত্যাশিত লাইন-আপ আর ছেলেদের মোটামুটি প্রত্যাশিতই লাইন-আপের মাধ্যমে। ছেলেদের ব্যাপারে বলতে পারি, মেলবোর্নের গ্র্যান্ড স্ল্যাম সংগঠকেরা একই দিনে দু’টো সেমিফাইনাল আয়োজনের রাস্তা অবশ্যই খুঁজে বার করুন এ বার। মারের বয়স ২৫ বছর। যে জন্য হয়তো জকোভিচের চেয়ে কম ‘রিকভারি’র সময় পেলেও সেটা ওর ওপর বেশি প্রভাব ফেলেনি। তবে ম্যাচটা পঞ্চম সেটে যদি গড়াত, তা হলে হয়তো মারের ক্লান্ত পায়ের সন্ধান পাওয়া যেত। বিশেষত নোভাক যেখানে বাড়তি গিয়ারে খেলেছে।
হার্ডকোর্টে নোভাককে সত্যিই ধরা যাচ্ছে না। নিঃসন্দেহে এই মুহূর্তে ও এক নম্বর। ২০১১ যেমন দুর্ধর্ষ গিয়েছিল, সেই তুলনায় গত বছর ওর একটাই গ্র্যান্ড স্ল্যাম পাওয়াটা নিশ্চয়ই ওকে হতাশ করেছে। এই মুহূর্তে ও কিন্তু সত্যিই খুব ভাল খেলছে। ফাইনালের প্রথম সেটে মারে যখন দুরন্ত খেলছিল, তখন নোভাকের অপেক্ষা করা আর লেগে থাকার ব্যাপারটা আমার খুব ভাল লেগেছে। এবং যেই একটা সুযোগ পেয়েছে, সেটাকে কাজে লাগিয়ে ম্যাচে ফিরেছে। মারের হতাশ হওয়ার অনেক কারণ আছে। ও অপেক্ষাকৃত ভাল একজন প্লেয়ারের কাছে হেরেছে। যে ওর থেকে খেলাটা ছিনিয়ে নিয়েছে। অতীতে জেতার মতো অবস্থায় থেকেও গেম খোয়ানোর নজির আছে মারের। কিন্তু রবিবার সেটা হয়নি। প্লেয়ারদের নিংড়ে নেওয়া র্যালিগুলোতে মারে যেন নিজের প্রতিবিম্বের সঙ্গেই খেলেছে। তবে দিনের বিচারে নোভাক রবিবার বেশি ভাল ছিল।
নোভাক-মারের রাইভ্যালরি আগামী কয়েক বছর চলবে। এর পাশাপাশি ফেডেরারের এখনও গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার ক্ষমতা থাকায় এবং নাদাল খুব শিগগির পেশাদার সার্কিটে ফিরছে বলে এটাকেই ছেলেদের বিশ্ব টেনিসের স্বর্ণযুগ বলা যায়। আগাসির কথাটা একেবারে ঠিক। মেয়েদের সার্কিটের ছবিটাও খুব খারাপ নয়। স্লোয়ান স্টিফেন্স আমাকে সত্যিই মুগ্ধ করেছে। আমার কোনও সন্দেহ নেই যে, সেরেনাকে হারানোই এ বার মেলবোর্নে সবচেয়ে কঠিন কাজ ছিল। ফলে, আমেরিকান কিংবদন্তিকে আফ্রিকান-আমেরিকান টিনএজারের হারিয়ে দেওয়াটা ওই তরুণীর ক্ষমতার চূড়ান্ত বার্তা বইকী। শারাপোভা ফাইনালে উঠবে আমার ধারণা ছিল। সুতরাং রাশিয়ান সুন্দরীকে হারানোর জন্য লি না-র পুরো কৃতিত্ব প্রাপ্য। ফাইনালে আজারেঙ্কাকে আমি ভাগ্যবতীই বলব যে, লি না নিজের প্রথম সেটের অনবদ্য পারফরম্যান্সকে চোট পেয়ে গিয়ে পরের সেটগুলোয় টেনে নিয়ে যেতে পারেনি। তার জন্য অবশ্য আজারেঙ্কার কোনও দায় নেই। পেশাদার হিসেবে ও প্রতিদ্বন্দ্বীর সমস্যার পুরো ফায়দা তুলে নিজের খেতাব অটুট রেখেছে। |