|
|
|
|
ইম্ফল-জিরিবাম রেল প্রকল্পে দ্বন্দ্ব উন্নয়ন ও প্রকৃতির |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
কোনটি বেশি প্রয়োজন, রেলপথ না অরণ্য? আপাতত এই দ্বন্দ্বেই ঝুলে রয়েছে জিরিবাম থেকে ইম্ফল পর্যন্ত প্রস্তাবিত ব্রডগেজ রেলপথটি। ১২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথের অনেকটাই যাবে গভীর অরণ্যের বুক চিরে। তাই রেলপথ পাততে হলে কাটতে হবে পাহাড়। নষ্ট হবে অরণ্যভূমি। আপত্তি উঠেছে বন দফতর ও পরিবেশপ্রেমীদের পক্ষ থেকে। কিন্তু উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়েছে, রেলপথ পাততে গেলে এই রাস্তা ভিন্ন গতি নেই।
ইম্ফল-জিরিবাম ব্রডগেজ লাইনের জন্য মঞ্জুর হয়েছে ৩০৫৬ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। লাইন পাততে গেলে ৪৯১ হেক্টর বনাঞ্চল সাফ করতে হবে। এ নিয়েই বন মন্ত্রকের উপদেষ্টা কমিটি বৈঠকে বসতে চলেছে। তার আগে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের অভিমত জানতে চাওয়া হয়েছিল। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, মণিপুরের ৭৬ শতাংশ এলাকাই অরণ্যাঞ্চল। সে ক্ষেত্রে সড়ক বা রেলপথ বসাতে গেলে বনাঞ্চলের উপরে কোপ পড়বেই। ব্রডগেজের জন্য যে মানচিত্র তৈরি হয়েছে, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগতভাবে সেই নকশার কোনও বিকল্প নেই। রেলপথ পাতার জন্য যে পরিমাণ সবুজ ধ্বংস হবে, তার দ্বিগুণেরও বেশি ৯৮৪ হেক্টর জমিতে সবুজায়নের প্রকল্পও নেওয়া হচ্ছে।
রেল বিভাগ মেনে নিয়েছে, ইম্ফল-জিরিবাম ‘জাতীয় প্রকল্প’-র জন্য বনাঞ্চল ও পাহাড় কাটার কাজ চলছে ২০১০ সাল থেকেই। রেলের বক্তব্য, এই প্রকল্পটির জাতীয় গুরুত্ব রয়েছে। জনস্বার্থে দ্রুত যাতায়াতের জন্য, অরণ্য ও পাহাড়ের বুক চিরে এই রেলপথ বসাবার কাজ দ্রুত শেষ হওয়া প্রয়োজন। প্রতিকূল আবহাওয়া, জঙ্গি হানা ও দুর্গম পাহাড়-জঙ্গলের মধ্য দিয়ে লাইন পাতা সহজ কাজ নয়। তাই ধাপে ধাপে এগোচ্ছে কাজ। বিলম্বও হচ্ছে। ইম্ফল অবধি কাজ শেষ হলে মায়ানমার সীমান্তের মোরে শহর অবধি লাইন পাতার কাজ শুরু হবে।
মণিপুর বনদফতরও, রাজ্যবাসীর সার্বিক উন্নতির স্বার্থে এই রেলপথ পাতার পক্ষেই সায় দিয়েছে। রাজ্য সরকারের বক্তব্য, কম খরচে অনেক বেশি পরিমাণ পণ্য ও যাত্রী পরিবহণের ক্ষেত্রে এই রেলপথের কোনও বিকল্প নেই। বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও এই রাস্তায় ট্রেন চলাচল শুরু হওয়া আশু প্রয়োজন। |
|
|
|
|
|