অভাব মহিলা অফিসারের
ধর্ষণের পরে অভিযোগ নেওয়ায় সঙ্কট
র্ষণের একটি অভিযোগ নেওয়ার জন্য এক থানার মহিলা পুলিশ অফিসারকে প্রায় রাত বারোটা পর্যন্ত থাকতে হল অন্য এক থানায়। কারণ, যে থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে কোনও মহিলা পুলিশ অফিসারই নেই। রবিবার, হেস্টিংস থানার ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের করতে গিয়ে সমস্যা শুরু হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই দিন সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ হসপিটাল রোডে প্রকাশ্য রাস্তার পাশে একটি মেয়ের চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে পুলিশের টহলদার ভ্যান দাঁড়িয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাস্তার পাশে একটি বড় শুকনো নর্দমা রয়েছে। সেখান থেকেই আওয়াজটি আসে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে, এক নাবালিকার উপরে অত্যাচার করছে বছর পঞ্চাশের এক প্রৌঢ়। ঘটনাস্থলেই গ্রেফতার করা হয় ওই প্রৌঢ়কে। পুলিশ জানায়, ওই প্রৌঢ়ের নাম গণেশ গোস্বামী। বারাণসীর বাসিন্দা হলেও সে এখন ভবঘুরে। পুলিশ ওই কিশোরীকেও নিয়ে আসে থানায়। পুলিশ জানায়, ওই কিশোরী ভবঘুরে, সামান্য মানসিক ভারসাম্যহীনও। ওই নাবালিকার বয়ানের ভিত্তিতে পুলিশ ওই প্রৌঢ়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছে। ডাক্তারি পরীক্ষার পরে ওই মেয়েটিকে একটি বেসরকারি হোমে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনার অভিযোগটি নিতে গিয়ে বিপদে পড়েন হেস্টিংস থানার অফিসারেরা। কিশোরীর কাছ থেকে পুরো ঘটনা জানতে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়ে যান তাঁরা। অভিযোগ নেওয়ার জন্য ময়দান থানা থেকে এক মহিলা পুলিশ অফিসারকে নিয়ে আসা হয় বলে থানা সূত্রের খবর। পুলিশ জানিয়েছে, যেহেতু ওই কিশোরীর উপরে শারীরিক নির্যাতন হয়েছে, তাই অভিযোগ নেওয়ার আগে গোটা বিষয়টি জানা দরকার ছিল। সাধারণত, ধর্ষণের মতো অভিযোগগুলি মহিলা অফিসারেরাই নিয়ে থাকেন। কোনও থানায় মহিলা অফিসার না থাকলে পাশের থানা থেকে মহিলা অফিসারকে আসতে হয় অভিযোগ নেওয়ার জন্য।
পুলিশ অফিসারদের কথায়, এমন নির্যাতনের অভিযোগ নেওয়ার আগে অভিযোগকারী মহিলাদের আলাদা ঘরে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সুবিধা হয়। আর এমন কিছু বিষয় রয়েছে, যে ব্যাপারে প্রশ্ন করতে গেলে পুরুষ পুলিশ অফিসারদের অসুবিধা হয়। সে ক্ষেত্রে, তাঁদের সামনে অভিযোগ নেওয়া হলেও মহিলা অফিসারের উপস্থিতিটা জরুরি। কিন্তু কলকাতার বিভিন্ন থানায় খোঁজ করতে গিয়ে দেখা গেল, অনেক থানাতেই কোনও মহিলা অফিসার নেই। কিছু থানায় মহিলা কনস্টেবল রয়েছেন। কিন্তু কনস্টেবলরা কোনও অভিযোগ নিতে পারেন না।
লালবাজার থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই মুহূর্তে কলকাতায় মোট ৬৫টি থানা রয়েছে। সেখানে সব মিলিয়ে মোট পুলিশকর্মীর সংখ্যা ২৬ হাজারের কাছাকাছি। আর তার মধ্যে মহিলা পুলিশ রয়েছেন মাত্র ১০ শতাংশ। খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, হেস্টিংস, শেক্সপিয়র, বড়বাজার, নিউ আলিপুর, চেতলা, এমনকী শহরের প্রাণকেন্দ্র নিউ মার্কেট থানাতেও কোনও মহিলা অফিসার নেই। আবার পার্ক স্ট্রিট, ময়দান, কালীঘাট, আলিপুর, বৌবাজার, হেয়ার স্ট্রিট, চারু মার্কেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গার থানাগুলিতে মাত্র এক জন করে সাব-ইনস্পেকটর রয়েছেন। এই সংখ্যাটিও খুব নগণ্য বলে পুলিশের একাংশের মত। তাঁদের বক্তব্য, মহিলা পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো খুব প্রয়োজন। এক জন করে মহিলা অফিসারের বদলে প্রতি শিফ্টে এক জন করে মহিলা পুলিশ থাকলে সুবিধা হয়।
এ প্রসঙ্গে যুগ্ম-কমিশনার (সদর) জাভেদ শামিম বলেন, “আমাদের সব থানাতেই মহিলা অফিসার রয়েছেন। একটি-দু’টিতে নেই। এই মুর্হূতে কলকাতা পুলিশে ১০ শতাংশ মহিলা পুলিশ রয়েছেন। আরও মহিলা পুলিশ নিয়োগের কাজ খুব তাড়াতাড়িই শুরু হবে। প্রক্রিয়া চলছে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.