অচলাবস্থা কাটল না পাথর শিল্পাঞ্চলে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট |
দুর্ঘটনায় মৃত ও জখম যুবকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে সোমবার দুপুরে অবরোধ উঠে গেলেও অচলাবস্থা কাটেনি পাথর শিল্পাঞ্চলে। ক্ষতিপূরণ ও পাথর শিল্পাঞ্চলে বেশ কিছু সমস্যা সমাধানের দাবিতে রামপুরহাট থানার বড়পাহাড়ি, বারমেশিয়া, দিঘলপাহাড়ি-সহ সংলগ্ন ঝাড়খন্ডের শিকারিপাড়া, পিনারগড়িয়া, সারাসডাঙা, নুরাইতলা এলাকায় আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাথর শিল্পাঞ্চল বন্ধ রাখার ডাক দিল একটি আদিবাসী সংগঠন। অচলাবস্থা কাটাতে পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতি প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে। এ দিকে, এই অচলাবস্থার জেরে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে পাথর শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ২৫ হাজার পরিবার কর্মহীন পড়বে বলে দাবি মালিক সমিতির। |
ট্রাকের ছাদে ঘুম চালক ও কর্মীর। —নিজস্ব চিত্র। |
গত ২৩ জানুয়ারি রামপুরহাট-দুমকা রোডে তুম্বনি মোড় লাগোয়া এলাকায় ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে বিকুল সোরেন নামে এক যুবকের। জয়কান্ত সোরেন নামে আর এক যুবক কলকাতায় চিকিৎসাধীন। ভারত জাকাত আদিবাসী মাঁরাও নামে আদিবাসী সংগঠনের নেতা অর্জুন হাঁসদা ও মৃতের আত্মীয় পৃথ্বী মুর্মুর দাবি, “মালিক সমিতির একটি পাথর বোঝাই ডাম্পারের ধাক্কায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাই দু’জনের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।” এই দাবিতে রবিবার বড়পাহাড়ি, দিঘলপাহাড়ি, বারমেসিয়া-সহ সমস্ত ক্রাসার, খাদান বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি রামপুরহাট-দুমকা সড়কে, রামপুরহাট থানার বড়মেশিয়া মোড়ের কাছে অবরোধ হয়েছিল। ওই সময় অন্য গাড়িগুলি চলাচল করতে পারলেও পাথর বোঝাই করতে আসা প্রায় শ’চারেক গাড়ি রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে পড়ে। আলোচনা করেও সমস্যা মেটেনি। আন্দোলনকারীরা তাঁদের দাবিতে অনড় থাকে। ফলে পাথর বোঝাই করতে আসা গাড়ির চালক ও কর্মীরা রাতভর ভোগান্তির শিকার হন। অবস্থার পরিবর্তন হয়নি সোমবারও।
প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবিতে মালিক সমিতির সদস্যরা কালীডাঙা গ্রামের কাছে পাল্টা অবরোধে বসেন। মালিক সমিতির পক্ষে আহাসান আলি, শাহিদ শেখ, মিলন শেখদের দাবি, “কেউ দুর্ঘটনায় মারা গেলে তার দায় মালিক সমিতিকে নিতে হবে কেন। যেখানে দুর্ঘটনার কথা বলা হয়েছে, সেখানে তো গাড়ি ধরা পড়েনি। অথচ অন্যায় দাবি করা হচ্ছে কেন। নিয়ম মেনেই ব্যবসা চলছে।” এ দিন দুপুরে রামপুরহাট থানার আইসি জয়ন্তকুমার ঘোষ দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। দুপুর ১টা নাগাদ ৩ ফেব্রুয়ারি দু’পক্ষ মহকুমাশাসকের অফিসে ফের আলোচনায় বসতে রাজি হয়। রামপুরহাট মহকুমাশাসক রত্নেশ্বর রায় বলেন, “উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।” |