নির্মীয়মাণ কারখানায় বিক্ষোভ বুদবুদে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
বুদবুদে নির্মীয়মাণ সার কারখানার এক আধিকারিককে ঢুকতে বাধা দিয়ে সোমবার বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় জমিদাতা বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, মুনাফার লোভে বাইরে থেকে লোক এনে কাজ করাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন জমিদাতারা। তা ছাড়া, কারখানায় গাড়ি ভাড়া দিয়ে জমিদাতা পরিবারের অনেকে আয় করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি বাইরে থেকে গাড়ি আনায় ক্ষতি হচ্ছে তাঁদের। বিক্ষোভের জেরে প্রায় দু’ঘণ্টা বাইরে আটকে থাকেন এক আধিকারিক। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় দু’পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুদবুদের পণ্ডালি মৌজায় ৪১৯ একর জমিতে সার কারখানা গড়ার কাজ করছে একটি বেসরকারি সংস্থা। বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, জমিদাতাদের অধিকাংশই কোনও কাজ পাননি। অথচ বাইরে থেকে লোক এনে নির্মাণকাজ করাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। প্রায় ছ’শো জমিদাতা পরিবার একটি সংস্থা গড়ে কারখানায় গাড়ি সরবরাহ করে। |
ক্ষুব্ধ জমিদাতারা। —নিজস্ব চিত্র। |
গড়ে প্রতি দিন ৬-৭টি গাড়ি কারখানা ভাড়া নেয়। বিক্ষোভকারীদের পক্ষে কিষাণ কর্মকারের অভিযোগ, “সম্প্রতি বাইরে থেকে ৯টি গাড়ি এনেছেন কর্তৃপক্ষ। আমাদের সুযোগ না দিয়ে সেই গাড়ি ব্যবহার করছেন কর্তৃপক্ষ।” এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ কয়েকশো বাসিন্দা কারখানার গেটে বিক্ষোভ শুরু করেন। কারখানার ভাইস প্রেসিডেন্ট সুবালক সরকার তখন ভিতরে ঢুকছিলেন। তাঁর গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা তাঁর গাড়ি ঘিরে স্লোগান দিতে থাকে।
বুদবুদ থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। প্রথমে বিক্ষোভকারীদের অনড় থাকলেও শেষ পর্যন্ত পুলিশের মধ্যস্থতায় দু’পক্ষ আলোচনায় বসেন। পরে কিষাণবাবু বলেন, “আপাতত সমস্যা মিটেছে। আমাদের কাছে বাড়তি গাড়ি নেওয়ার আশ্বাস মিলেছে।”
বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কর্তৃপক্ষ। তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক জানান, ২০১০-এর মাঝামাঝি কারখানার নির্মাণকাজ শুরু হয়। জমিদাতারা জমির দাম পেয়ে গেলেও বর্গাদার ও খেতমজুরদের ক্ষতিপূরণ নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় বাসিন্দারা মাঝে-মাঝেই কারখানার গেটে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। সেই সমস্যা অনেকটা মিটলেও সব জমিদাতা পরিবারের এক জনকে কারখানায় কাজ দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। এখন আবার গাড়ি নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ হচ্ছে। ওই আধিকারিকের বক্তব্য, “বারবার নানা অছিলায় বিক্ষোভ মোটেও কাম্য নয়। এতে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।” |