নাম জড়াল তৃণমূল নেতার সমবায়ের ঘর দখলের নালিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
ডিএসপি কর্মীদের একটি সমবায় সমিতির নির্মীয়মাণ অফিসঘর দখলের অভিযোগ উঠেছে একটি সংস্থার বিরুদ্ধে। বছরখানেক আগে তৃণমূলের কয়েকজন সদস্য-সমর্থক পতাকা টাঙিয়ে ওই ঘর দখলের চেষ্টা করেছিল। তৃণমূলের নাম করে এমন বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না, বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায় এ কথা জানানোর পরে তখন ঘর দখলমুক্ত হয়েছিল। তবে এ বার ফের স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার নেতৃত্বে ঘর দখল হয়েছে বলে অভিযোগ।
ডিএসপি সূত্রে জানা যায়, নয়ের দশকের শুরুর দিকে নিজের কর্মীদের বসবাসের জন্য সিটিসেন্টার লাগোয়া এলাকায় ডিএসপি দেড়শো একর জমি লিজ দেয়। প্রায় দু’হাজার কর্মী বাড়ি করেছেন সেখানে। এর বাইরেও কিছুটা জায়গা রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় পৌনে দু’একর জমিতে স্কুল গড়ার দাবি করেছে আবাসিকদের সংগঠন ‘দুর্গাপুর সেইল এমপ্লয়িজ প্রাইমারি কমন সার্ভিস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’। তারই এক প্রান্তে সমবায় সমিতির অফিস ঘর নির্মাণের কাজ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। |
সেই অফিসঘর। —নিজস্ব চিত্র। |
সমবায় সমিতির সম্পাদক মনোজকুমার চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, শনিবার পুরসভার ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা পরিমল অগস্তি ও কিছু যুবক জোর করে ওই নির্মীয়মাণ অফিসঘরের দখল নেন। এর পরেই সেখানে ‘বিবেকানন্দ সাংস্কৃতিক পরিষদ’-এর ব্যানার লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরিমলবাবুই ওই পরিষদের সভাপতি। রবিবার সেখানে একটি স্বাস্থ্যশিবিরের আয়োজন হয়। তাতে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা শহরের মেয়র অপূর্ববাবু। মনোজবাবু বলেন, “সমবায় সমিতির তরফে পুরসভায় ‘হোল্ডিং ট্যাক্স’ দেওয়া হয়। ডিএসপি-র কাছে ‘গ্রাউন্ড রেন্ট’ও জমা দেওয়া হয়। সেখানে এ ভাবে সমিতির নির্মীয়মাণ অফিসঘর দখল একেবারে বেআইনি।” পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে মনোজবাবু অবিলম্বে ওই ঘর দখলমুক্ত করার আর্জি জানান।
তৃণমূল নেতা পরিমলবাবু অবশ্য জোর করে ঘর দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ঘরগুলি সমাজবিরোধীদের আখড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। নানা অসামাজিক কাজকর্ম চলছে। তাই এলাকাবাসীর মতামত নিয়ে আমরা ঘরগুলি ব্যবহার করে সামাজিক নানা কাজকর্মে উদ্যোগী হয়েছি।”
বিধায়ক তথা মেয়র অপূর্ববাবু বলেন, “স্থানীয় মানুষ ওই শিবিরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছেন। তাঁদের ডাকেই গিয়েছিলাম।” ঘর দখলের অভিযোগ উড়িয়ে তাঁর দাবি, ওই সমবায়ের কাজকর্ম নিয়ে পুরসভার কাছে আবাসিকদের তরফে বহু অভিযোগ জমা পড়েছে। সেলের কাছ থেকে লিজ নেওয়া জমি ওই সমিতি এক প্রোমোটার সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ায় উদ্যোগী হয়েছে বলেও অভিযোগ। বন্ধ পড়ে থাকা ঘর সমাজবিরোধীরা ব্যবহার করছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। মেয়রের বক্তব্য, “সামাজিক কাজকর্ম হলে বিতর্কের কী আছে? প্রায় দু’শো বয়স্ক আবাসিক স্বাস্থ্যশিবিরে এসেছিলেন। তাঁরা প্রত্যেকেই এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।” পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে পুরসভার সাহায্য নেওয়া হবে। |