নিখোঁজ হওয়ার চার মাস পরে পুলিশ হাওড়ার জগদীশপুর থেকে উদ্ধার করল এক যুবকের বস্তাবন্দি কঙ্কাল। পুলিশের দাবি, শনিবার লিলুয়ার জগদীশপুরে প্রস্তাবিত হোসিয়ারির পার্কের জলাজমি থেকে যে কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে, তা সমীর তিরকে(১৮)-র। বাড়ি লিলুয়ার তাঁতিপাড়ায়। পুলিশের অভিযোগ, সোনা ও হিরের গয়নার লোভে বন্ধুরাই সমীরকে খুন করে ওই জায়গায় ফেলে দেন। অভিযুক্ত ওই বন্ধুদের পাড়ার লোকই সন্দেহের বশে ক’দিন আগে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের জেরা করে সমীর খুনের মূল চক্রী অন্য দুই যুবকের সন্ধান পাওয়া যায়। কিন্তু সমীরের খোঁজ মিলছিল না। বৃহস্পতিবার ওই দুই যুবক গ্রেফতারের পরে রহস্যের কিনারা হয়। শনিবার জগদীশপুরের জলাজমি থেকে মিলল সমীরের কঙ্কাল। হাড়গোড় ফরেন্সিক তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
সমীর পুণেতে সোনা ও হিরের অলঙ্কার তৈরির দোকানে কাজ করতেন। মাস চারেক আগে তিনি ফিরে এলেও নিজের বাড়িতে না থেকে মদন রায় নামে তাঁর এক বন্ধুর বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। কিছু দিন পরে পুণের পুলিশ লিলুয়ায় আসে সমীরের খোঁজে। অভিযোগ, সমীর যে দোকানে কাজ করতেন, সেখান থেকে সোনা ও হিরের গয়না চুরি করে পালিয়ে এসেছেন। |
উদ্ধার হওয়া কঙ্কাল।—নিজস্ব চিত্র |
সমীরের কয়েক জন বন্ধুর আচরণে সন্দেহ হয় পাড়ার লোকের। মঙ্গলবার এলাকার লোকজন সমীরের তিন বন্ধুর কাছে সমীরের খোঁজ জানতে চান। পাড়ার লোকের দাবি, বন্ধুরা চাপের মুখে জানিয়ে দেন, সমীর পুণে থেকে চুরি করে যে সব গয়না এনেছেন, তার কিছুটা বিক্রি করে তাঁরা টাকা পেয়েছেন। সেই টাকাই তাঁরা খরচ করছেন। কিন্তু সমীরের খোঁজ তাঁরা দিতে পারেননি। সমীরের বাবা পিয়াস তিরকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সমীরের তিন বন্ধু বাপন মাল, বিশ্বজিত মণ্ডল এবং কার্তিক নাথকে সমীরকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করে।
পুলিশের দাবি, জেরার মুখে বাপন ও কার্তিক স্বীকার করেন, সমীরকে খুন করে সোনা ও হিরের গয়না হাতানোর ছক কষেছিলেন সঞ্জীব ধাড়া ও মদন রায় নামে অন্য দুই বন্ধু। ১২ জুলাই মদ খাইয়ে সমীরকে বেহুঁশ করে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। পরে মৃতদেহটি বস্তায় ভরে হাসিয়ারি পার্কের জলাজমিতে ফেলে দিয়ে আসেন সঞ্জীব।
পুলিশ জানায়, এ দিন ভোর থেকে ধৃতদের নিয়ে হোসিয়ারি পার্কের জলাজমিতে তল্লাশি করা হয়। তিন ঘণ্টা পরে বস্তাবস্তি হাড়গোড় উদ্ধার হয়। হাওড়া পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডের দাবি, “ধৃতরা খুনের কথা স্বীকার করেছেন। কোথায় মৃতদেহ ফেলা হয় তা-ও দেখিয়ে দিয়েছেন।” |