পঞ্চায়েত ভোট
মানুষের রায় বানচাল করতে পারে সরকার, আশঙ্কা বুদ্ধের
তৃণমূল সরকার পঞ্চায়েত ভোটে মানুষের রায় বানচাল করার চেষ্টা করতে পারে বলে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আশঙ্কা। দমদমে শনিবার দলের এক কর্মিসভায় বুদ্ধবাবু তাঁর এই আশঙ্কার কথা জানিয়ে প্রয়োজনে জন-প্রতিরোধের ডাক দিয়েছেন।
কর্মিসভায় বুদ্ধবাবু বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটে মানুষের রায় বানচাল করার চেষ্টা করবে রাজ্য সরকার। কিন্তু আমরা এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না। আপনাদের পঞ্চায়েত ভোটে লড়াই করার মানসিক প্রস্তুতি শুরু করে দিতে হবে।” যে ভাবে সরকার চলছে তাতে গণ-প্রতিরোধ ছাড়া উপায় নেই তা জানিয়ে বুদ্ধবাবু বলেন, “মানুষকে পাশে নিয়েই প্রতিরোধ করতে হবে। ভোটে মানুষের রায় পেতে প্রতিটি বাড়িতে যেতে হবে।” এর আগে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র প্রয়োজনে গণ-প্রতিরোধের কথা বলেছেন। এ বার বুদ্ধবাবু বললেন। অর্থাৎ পঞ্চায়েত ভোটে কোনও বাধার সম্মুখীন হলে গণ-প্রতিরোধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আলিমুদ্দিন।
বৈঠকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শনিবার দমদমে। —নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল অবশ্য বুদ্ধবাবুর কথায় গুরুত্ব দিচ্ছে না। রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “এ সব অর্থহীন কথার কোনও গুরুত্ব নেই। ঝিমিয়ে পড়া কর্মীদের চাঙ্গা করতে বুদ্ধবাবু এ কথা বলেছেন।” তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, “রাজ্য সরকার কী করে মানুষের রায় বানচাল করবে?”
প্রসঙ্গত, এ দিনই মধ্যমগ্রামে প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দাবি করেছেন, পঞ্চায়েত ভোটে ৯০ শতাংশেরও বেশি ভোটে তাঁরা জিতবেন। কংগ্রেস ও সিপিএম উভয়কেই কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “কংগ্রেস সিপিএমের বি-টিম নয়। কংগ্রেস ও সিপিএম সুপারটিম। ওই সুপারটিমের বিরুদ্ধে লড়েই পঞ্চায়েতে আমরা ৯০ শতাংশেরও বেশি ভোটে জিতব।”
বিধানসভা ভোটের হিসাব অনুযায়ী দক্ষিণবঙ্গের একটি জেলা পরিষদও বামেদের দখলে থাকার কথা নয়। শুধু তাই নয়, অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিও তৃণমূলেরই জেতার কথা। কিন্তু তৃণমূল সরকারের বিভিন্ন কাজে দেড় বছরেই রাজ্যবাসীর একাংশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন বলে মনে করছে সিপিএম। প্রশ্ন হচ্ছে, সেই ক্ষোভকে কি কাজে লাগানো যাবে? সিপিএমের একাংশের আশঙ্কা, পঞ্চায়েত ভোট অবাধ হবে না। তৃণমূলের ভয়ে বহু জায়গাতেই বামেরা প্রার্থী দিতে পারবে না। সেক্ষেত্রে কর্মী-সমর্থকেরা কী করবেন, সে পথই বাতলে দিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বুদ্ধবাবু যে ‘গণ-প্রতিরোধের’ কথা বলেছেন, তারজন্য প্রয়োজন মানুষকে পাশে পাওয়া। তাই জন-সংযোগের উপরে জোর দিচ্ছে সিপিএম। বুদ্ধবাবু বলেন, “আমরা এক কোটি মানুষের বাড়ি যাব। এর জন্য একটি বিশেষ ফর্ম ছাপানো হয়েছে। সেই ফর্ম অনুযায়ী মানুষের রায় জানতে চাইব।” এ দিনই এন্টালিতে এক দলীয় সভায় সূর্যবাবুও মানুষের কাছে যাওয়ার কথা বলেন।
এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৫০% আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। বুদ্ধবাবু বলেন, “যখনই ভোট হোক, তার জন্য এখন থেকে প্রস্তুত হতে হবে। কোথায় কত জন মহিলা প্রার্থী প্রয়োজন, তা এখন থেকেই চিহ্নিত করুন।”
ত্রি-ফলা বাতি নিয়ে দুর্নীতি, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, বেতন না পেয়ে পরিবহণ কর্মীদের আত্মহত্যার কথাও তুলে ধরেন বুদ্ধবাবু। মুখ্যমন্ত্রীর নানা কাজে সামজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট হচ্ছে বলেও তাঁর অভিযোগ। তিনি বলেন, “কি অদ্ভুত সরকার! রাস্তায় বাতি লাগানো হচ্ছে। তা-ও চুরি হচ্ছে।” রাজ্য সরকারকে ‘অমানবিক’ বলে সমালোচনা করে বুদ্ধবাবু বলেন, “পরিবহণ কর্মীদের মাইনে, পেনশন বন্ধ হয়ে যাবে ৩৪ বছরে আমরা কোনও দিন ভাবতে পারিনি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.