মরসুমের মাঝে দলের দায়িত্ব ছাড়ায় সালগাওকর তাঁর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে। মোহনবাগানে আবার পাহাড়প্রমাণ প্রত্যাশার চাপ। দু’বছর ন’মাস পর সবুজ-মেরুনে দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর আগের দিন টিম হোটেলে বসে করিম বেঞ্চারিফা সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তাই প্রচণ্ড রকম সতর্ক। |
প্রশ্ন: ওডাফার সঙ্গে ঝামেলা কী ভাবে মিটল?
করিম: ওডাফা গত ছ’বছরে অনেক বদলে গিয়েছে। আমিও তো বদলেছি। চার্চিলে যখন আমার সঙ্গে ছিল, তখন ও সবে বিয়ে করেছে। একাই সব করতে চাইত। এখন ও ছেলে-মেয়ের বাবা। অনেক দায়িত্ব বেড়েছে। সেটা ওর জীবনে প্রভাব ফেলেছে। ওকে বদলে দিয়েছে। ওকে যত দেখছি তত অবাক হচ্ছি।
(হেসে) আমিও মনে হয় গত ছ’বছরে অনেক সহনশীল হয়েছি। তাই তো?
প্র: মাঠে নামার আগেই মোহনবাগান সদস্য-সমর্থকরা আপনার কাছে আই লিগ আশা করছে! পারবেন এই চাপ সামলাতে?
করিম: আমার উপর কেউ কখনও চাপ তৈরি করতে পারেনি। পারবেও না। আমিই আমার উপর চাপ তৈরি করি। সব সময় মনে করি আগের বার মোহনবাগানে যে সাফল্য পেয়েছি, এ বার তার চেয়ে বেশি দিতে হবে। এটা বলছি, সব ঠিকঠাক চললে এখনও আই লিগ জেতা অসম্ভব নয়। আমার দলের এখন সবথেকে বড় শত্রু চোট। তবে এই তিনটে পরপর বাইরের ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
|
প্র: খুব কঠিন সময় নতুন দলের দায়িত্ব নিলেন। কলকাতায় ফিরেই ডার্বি। কত পয়েন্ট আশা করছেন এই চারটে ম্যাচ থেকে।
করিম: কঠিন মনে করলেই কঠিন। কোচের জীবনের প্রতিটা মুহূর্তই চ্যালেঞ্জের। আমি একটা করে ম্যাচ ধরে ভাবি। পয়েন্টের কোনও অঙ্ক আগে করি না। যেমন কাল মুম্বই এফসি ম্যাচটা জেতা খুব দরকার। তা হলে সব ঠিকঠাক চলবে। ডার্বি তো অনেক দূর। এখন থেকে ভেবে রাতের ঘুম নষ্ট করতে যাব কেন?
প্র: ইস্টবেঙ্গল আজ কলকাতায় পাঁচ গোলে জিতেছে, শুনেছেন? এটা তো আপনার নতুন ইনিংস শুরুর মুখে চাপ আরও বাড়াল?
করিম: শুনলাম প্রথমার্ধে মাত্র এক গোল হয়েছে। ওএনজিসি-র সেন্টার ব্যাক লাল কার্ড দেখে বেরিয়ে যেতেই গোলগুলো হয়েছে। তা ছাড়া ওরা জিতেছে তো আমার উপর চাপ কীসের? আমি আমার দল নিয়ে আছি। ওরা ওদের নিয়ে।
প্র: পরিসংখ্যান বলছে ট্রেভর মর্গ্যানের সামনে পড়লেই আপনার যত সমস্যা। কেন বলুন তো?
করিম: মর্গ্যানকে শ্রদ্ধা করি। এক টিম ধরে রেখেছে। তবে পরিসংখ্যান নিয়ে আমি কখনও মাথা ঘামাই না। বহু পরিসংখ্যান ওলটপালট হয়ে যায় মাঠে এসে। কলকাতা ডার্বি বরাবরই স্পেশ্যাল। ম্যাচটা আসুক। তার পর ভাবা যাবে।
প্র: টোলগের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ আছে আপনার। টোলগে-ওডাফা জুটি মাঠে কবে দেখা যাবে?
করিম: সময় লাগবে। কত দিন, এখনই বলা কঠিন। আমি তাড়াহুড়ো করতে চাই না। এখন রিহ্যাব চলছে টোলগের। সুস্থ হয়ে কলকাতায় ফিরে মাঠে নামুক। তার পর তো জুটি।
প্র: স্ট্যানলি খুব ভাল খেলছেন। টোলগে এলে কি ফর্মেশন বদলে ৪-৪-২?
করিম: টোলগে ফেরার পরে ওকে কিন্তু নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে দলে ঢুকতে হবে। আমার টিমে সবার ক্ষেত্রে একই ফর্মুলা। কেউই অপরিহার্য নয়। যে ভাল খেলবে সে প্রথম এগারোয় জায়গা পাবে।
প্র: বাগানে যাঁর জায়গায় আপনি, সেই সন্তোষ কাশ্যপের সঙ্গে দেখা গেল স্টেডিয়ামে অনেকক্ষণ কথা বলছেন। মোহনবাগান নিয়ে আলোচনা....
করিম: কোচেদের জীবন নিয়ে কথা হল। কিছু ব্যক্তিগত কথাবার্তা। (হেসে) সব বলব কেন?
প্র: সালগাওকর আপনাকে ঘুরিয়ে মিথ্যাবাদী বলেছে। সামনের বুধবার ডেম্পো ম্যাচ খেলতে গিয়ে গোয়ায় বিক্ষোভের সামনে পড়বেন না তো?
করিম: সালগাওকর আমার কাছে অতীত। মোহনবাগান বর্তমান। আর গোয়ায় আমারও প্রচুর বন্ধু আছে। ব্যারাকিং নিয়ে ভাবি না। সব কিছু সাময়িক। থেমে যাবে।
প্র: দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর মুখে মোহনবাগান সমর্থকদের উদ্দেশে আপনার বার্তা।
করিম: সবাই ধৈর্য ধরুন। প্রিয় দলের উপর আস্থা রাখুন। করিম তাঁর সেরাটা দেওয়ার চেষ্টাই করবে। |