|
|
|
|
সমীক্ষা আবার ইঙ্গিত দিল মোদী-ঝড়েরই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
তিনি যে হ্যাটট্রিক করতে চলেছেন সে ব্যাপারে রাজনীতির কারবারিদের মনেও বিশেষ সংশয় ছিল না। আজ এবিপি-এসি নিয়েলসেনের প্রাক ভোট সমীক্ষাও জানিয়ে দিল, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে গুজরাত বিধানসভা ভোটে ফের ঝড় তুলতে চলেছে বিজেপি। শুধু তাই নয়, গত বারের ১১৭টির থেকে এ বার আরও সাতটি আসন বেশি জেতার সম্ভাবনা রয়েছে বিজেপি-র। বিপরীতে মাত্র ৫১টি আসন পেতে পারে কংগ্রেস। যা কি না গতবারের থেকেও আটটি কম।
তৃতীয় বার জয়ের ব্যাপারে মোদীর আত্মবিশ্বাসে এখন পর্যন্ত কোনও ঘাটতি দেখা যায়নি। কিন্তু একটা বিষয়ে উদ্বেগে রয়েছেন তিনি। সেটা কী? তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতারা জানাচ্ছেন, মোদী ভয় পাচ্ছেন, গত বারের তুলনায় না এ বার আসন কমে যায়! তা হলে যেমন সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তাঁর ও বিজেপি-র বিরুদ্ধে প্রচারে কংগ্রেস অক্সিজেন পাবে। তেমনই বিজেপি-তে মোদী-বিরোধীরা উল্লসিত হয়ে সর্বভারতীয় স্তরে তাঁর উত্তরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবেন। ওই সব নেতা তখন বলতে পারেন, নিজের খাসতালুকেই জনপ্রিয়তা কমছে মোদীর। এর পর তাঁকে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে তুলে এনে বিশেষ লাভ হবে না। তাই এ বারের গুজরাত ভোটে মোদীর কাছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা ৯২ নয়, বরং ১১৭-র থেকে বেশি।
সে দিক থেকে আজ এবিপি-এসি নিয়েলসেন জনমত সমীক্ষা মোদীকে কিছুটা হলেও স্বস্তি জুগিয়েছে। শেষমেশ গুজরাত ভোটে এই ফলাফল হলে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হওয়ার প্রধান দাবিদার হয়ে উঠবেন মোদী।
স্বাভাবিক ভাবেই, জনমত সমীক্ষার ফল দেখে কংগ্রেস কিছুটা হতাশ। সমীক্ষায় যেমন তাদের আসন কমার ইঙ্গিত করা হয়েছে, তেমনই মোদী ফের জিতলে লোকসভা ভোটের আগে সামগ্রিক ভাবে বিজেপি নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত হবেন, এটাও বুঝতে পারছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে একটি বিষয় নিয়েই আশায় বুক বাঁধছে কংগ্রেস। তা হল, মোদী যদি শেষ পর্যন্ত বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদ প্রার্থী হয়ে ওঠেন, তা হলে এনডিএ-র সমীকরণে জটিলতা দেখা দেবে। অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলি বিজেপি-র থেকে দূরত্ব রাখার চেষ্টা করবে। তেমনই লোকসভা ভোটে সংখ্যালঘু ভোট কংগ্রেসের অনুকূলে আসবে।
তবে জনমত সমীক্ষা থেকে স্পষ্ট, গুজরাতে উন্নয়ন ও সুশাসনের মন্ত্রেই ফের সোনা ফলাতে চলেছেন মোদী। সেই উন্নয়ন যজ্ঞ গোটা রাজ্যে যে সমানুপাতে হয়েছে, তা-ও বোঝা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, শহর থেকে গ্রাম, এমনকী আদিবাসী এলাকাতেও ভাল ফল করার সম্ভাবনা রয়েছে বিজেপি-র। যদিও এ বারের ভোটে সংখ্যালঘু ভোট পাওয়ার বিশেষ সম্ভাবনা নেই মোদীর। কেন না, গুজরাত দাঙ্গার ঘটনায় আদালতের রায় এবং একের পর এক বিজেপি নেতা গ্রেফতারের ফলে দাঙ্গার সঙ্গে দলের যোগ আবার সামনে এসে যাচ্ছে। রাজনৈতিক সূত্রে বলা হচ্ছে, এই অবস্থায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একাংশ নেতা মোদীকে এই বার্তাও দিচ্ছেন যে, দাঙ্গার ঘটনা নিয়ে মোদী যদি প্রকাশ্যে ক্ষমা চান, তা হলেই পরিস্থিতি বদলাতে পারে। তাতে গোটা দেশের কাছেও বার্তা যাবে। তবে মোদী ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, তা করলে মোদীর কট্টর ভাবমূর্তি লঘু হওয়ার আশঙ্কা।
মোদীর এই বিপুল প্রভাবের সামনে কংগ্রেস দৃশ্যতই কিছুটা কোণঠাসা। রাজ্যে কংগ্রেসের সব থেকে বড় সমস্যা হল, মোদীর সামন রাজনৈতিক উচ্চতার নেতা তাঁদের নেই। উপরন্তু রাজ্যে দলের মধ্যে অন্তর্কলহ অব্যাহত। তা ছাড়া, গুজরাত বিধানসভা ভোটে এ বার মায়াবতী ও মুলায়ম প্রার্থী দিচ্ছেন। ফলে কংগ্রেসের কিছু দলিত ভোট ও সংখ্যালঘু ভোটে তাঁরা ভাগ বসাবেন, এমন আশঙ্কাও রয়েছে।
তবে যা প্রকাশ হয়েছে, তা প্রাক ভোট সমীক্ষা মাত্র। গুজরাত ভোটের প্রথম দফার ভোট গ্রহণের এখনও প্রায় তিন সপ্তাহ বাকি। শেষ পর্যন্ত কী ফল হয় এবং সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তার কী প্রভাব পড়ে, তার দিকেই এখন সকলের নজর।
|
সম্ভাব্য গুজরাত |
বিজেপি |
১২৪ (+৭) |
কংগ্রেস |
৫১ (-৮) |
অন্যান্য |
৭ |
ব্র্যাকেটে গত ভোটের চেয়ে কত আসন বেশি বা কম |
|
|
|
|
|
|