কান্দি-বহরমপুর রাজ্য সড়কের পাশে অবস্থিত গোকর্ণ গ্রামীণ হাসপাতালে ঢুকতেই দেখা গেল ইতিউতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। প্রথম দর্শনে অনেকেই হাসপাতাল না ভেবে নরক ভাবতেই পারেন। ওই হাসপাতালের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করলেই একটি পানীয় জলের নলকূপ। নলকূপের পাশেই জমা রয়েছে হাসপাতালের সমস্ত নোংরা-আবর্জনা। সেখান থেকে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। ওয়ার্ডের ভিতরের দিকটা ঝকঝকে থাকলেও বাইরে আগাছায় ভর্তি। বিনা বাধায় যথেচ্ছভাবে বেড়েও উঠছে ওই আগাছা। সব মিলিয়ে হাসপাতাল চত্বর পরিণত হয়েছে ছোটখাটো একটা ঝোড়-জঙ্গলে। ৩০ শয্যার ওই হাসপাতালে ৪ জন সাফাইকর্মী থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ২ জন। তাই হাসপাতাল চত্বরে নোংরার এত ছড়াছড়ি। ওই হাসপাতালে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। সূর্য ডুবলেই হাসপাতালের মধ্যেই বসে মদ-গাঁজার ঠেক। স্থানীয় বাসিন্দা অমিত মুখোপাধ্যায় বলেন, “সন্ধ্যার পর হালপাতালে নিরাপত্তা বলে কিছুই থাকে না। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা জরুরী।” চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগও রয়েছে ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সামান্যতেই ১০ কিলোমিটার দূরের বহরমপুর সদর হাসপাতালে রেফার করা ওই হাসপাতালের প্রধান কাজ। তাই অনেকেই একে ‘রেফার হাসপাতাল’ বলতে শুরু করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা নিপু বাগদি বলেন, “সামান্য কোনও রোগ নিয়ে গেলেই বহরমপুরে পাঠিয়ে দেয়। আমরা গরীব মানুষ অত দূরে যাওয়ার টাকা কোথাই পাবো?” এক্স-রে করার কোনও ব্যবস্থা নেই হাসপাতালে। তবে লাইগেশন ঠিকঠাক হয় বলে দাবি চিকিৎসকদের। শিশুদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড থাকলেও তা চালু হয়নি।
কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংগ্রেসের সেনেহার বিবি বলেন, “ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভাবখানা এমন যে, তাঁরা অনেক কিছুই করছেন। কিন্তু বাস্তবে সামান্যতেই রেফার করাই ওখানকার চিকিৎসকদের কাজ।” কান্দি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বিধানচন্দ্র মজুমদার বলেন, “স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমাদের এখানে মাসে ৬০-৮০টি প্রসব হয়। আর সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে উন্নত পরিষেবার জন্য প্রসূতীকে রেফার করলে সমস্ত খরচ দেয় স্বাস্থ্য দফতর। এটা তো ভালো।” তিনি বলেন, “মাত্র ২ জন সাফাইকর্মী থাকায় কেবলমাত্র ওয়ার্ডের ভিতরটাই পরিষ্কার করা যায়। বাইরের দিকটা করা যায় না। আলোর জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। মদের আসর বসলে তা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানায়।” |