|
|
|
|
বনগাঁয় উৎসবের মধ্যে দিয়ে অনগ্রসরদের আন্দোলনকে স্মরণ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বনগাঁ |
অনগ্রসর জাতিভুক্তদের আন্দোলনের ফলে ১৮৭৩ সালে ব্রিটিশ সরকার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে অনগ্রসর জাতির মানুষের মর্যাদা ও সাম্যের অধিকার রক্ষায় উদ্যোগী হয়েছিল। সেই ঘটনার স্মরণে রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের উদ্যোগে বনগাঁ এক উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। নামকরণ করা হয়েছে ‘মর্য্যাদা ২০১২’। |
|
বাছাড়ি বাইচ। |
বৃহস্পতিবার ওই অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস, খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, উদ্বাস্তু দফতরের প্রতিমন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর, বনগাঁর সাংসদ গোবিন্দচন্দ্র নস্কর প্রমুখ। উৎসবে থাকছে বাইচ প্রতিযোগেতিা, কবিগান, ভাটিয়ালি, পুতুল নাচ এবং লাঠিখেলা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাছাড়ি নৌকা প্রস্তুতকারী তিনজনকে এবং ঢালি (ঢোলবাদক) ও লাঠিয়ালদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বনগাঁ থানা সংলগ্ন ইছামতী নদীর ঘাটে বাছাড়ি বাইচের উদ্বোধন করেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। উৎসব শেষ হচ্ছে আজ, শনিবার।
বাছাড়ি বাইচ প্রতিযোগিতায় ধুপগুড়ি, কোচবিহার, বনগাঁ, বাগদা, মুর্শিদাবাদ, কলকাতা, নদিয়া থেকে ১৬টি দল যোগ দিয়েছে। আকারে ৪০ ফুট লম্বা ও সামনে-পিছনে সরু নৌকায় এই প্রতিযোগিতা হয়। এ বার প্রতিদলে রয়েছেন ১২ জন প্রতিযোগী। পুরুষ, মহিলাদের পৃথক দল ছাড়াও পুরুষ-মহিলা একসঙ্গে এই প্রতিযোগিতায় থাকছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিযোগীরা মার্চপাস্টে যোগ দেন। এই প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে গোটা বনগাঁতেই উৎসাহ তৈরি হয়েছে। উৎসবকে ঘিরে সেজেছে গোটা শহর। |
|
উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল লাঠি খেলা। |
অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮৭৩ সালে গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ এলাকার পূর্বাঞ্চলের আদি বাসিন্দারা মর্যাদা ও আইনের কাছে সাম্যের দাবিতে জমিদার, ভূস্বামীদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। আন্দোলনকারীদের মূল দাবি ছিল তাঁদের প্রতি সরকারের বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে যাঁরা কারাবন্দী তাঁদের প্রতি। উপেনবাবু বলেন, “১৮৭৩ সালের ওই আন্দোলন একটি অন্যন্য ঘটনা। গোটা দেশের কাছে এটি দৃষ্টান্ত। আন্দোলনের জেরে বাংলার লেফটেন্যান্ট গর্ভণর এলসি অ্যাবট এক সরকারি আদেশনামায় কারবন্দিদের প্রতি বৈষম্যমূলক কার্যকলাপ বাতিল করেন। রাজ্যে পরিবর্তমনের সরকার আসার পরে তৃণমূল এই ঘটনাকে মর্যাদা দিতে উদ্যোগী হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, রাজ্য সরকার এই মর্মে গত বছর ১৬ ডিসেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিও বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছিল। মন্ত্রী বলেন, “অনগ্রসর শ্রেণির নিজস্ব সংস্কৃতিকে সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যেই এই উৎসবের আয়োজন। এখন থেকে প্রতি বছর এই অনুষ্ঠান হবে।”
|
ছবি: পার্থসারথি নন্দী। |
|
|
|
|
|