রাস্তার কাজ করানো নিয়ে আপত্তির জেরে সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদককে মারধরের অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে পুরুলিয়া শহরের উপকণ্ঠে তেলকলপাড়া এলাকায়। গুরুপদ মাহাতো নামে ওই সিপিএম নেতা বৃহস্পতিবার রাতেই পুরুলিয়া সদর থানায় ওই তৃণমূল নেতা-সহ চার জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
সিপিএমের পুরুলিয়া ২ জোনাল কমিটির সম্পাদক সুলতান আনসারির অভিযোগ, “তেলকলপাড়ার একটি চায়ের দোকানে পিঁড়রা লোকাল কমিটির সম্পাদক গুরুপদ মাহাতো চা খাচ্ছিলেন। সেই সময় ওই পঞ্চায়েত এলাকারই তৃণমূল নেতা আয়ুব আনসারি ও তাঁর দলবল গুরুপদকে ঘিরে ধরে মোটরবাইকে করে তুলে নিয়ে যান। তার পর তাঁকে খানিকটা দূরে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়।” ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে সিপিএম ওই ব্লকেরই গোপাল মোড়ে একটি প্রতিবাদ সভা করে। দলের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কৌশিক মজুমদারের দাবি, “গুরুপদবাবুকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের পাশাপাশি হুমকিও দেওয়া হয়। তিনি হাসপাতালে ভর্তি।” |
স্থানীয় সূত্রের খবর, পিঁড়রা পঞ্চায়েতটি সিপিএম পরিচালিত। এলাকার পালনঝা গ্রামে একটি রাস্তার কাজ করানো নিয়ে এলাকার নিবার্চিত তৃণমূল সদস্য আয়ুব আনসারির সঙ্গে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের মতান্তরের শুরু। পিঁড়রার পঞ্চায়েত প্রধান শশাঙ্ক কুইরি বলেন, “আমি পঞ্চায়েতের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক পালনঝা গ্রামের একটি রাস্তা সংস্কারের কাজ স্থানীয় এক জনকে দিয়েছিলাম। কিন্তু, আয়ুব আনসারি তাতে আপত্তি করেন। তাঁর দাবি ছিল, কাজ কাকে দেওয়া হবে তা তিনি ঠিক করবেন।”
স্থানীয় সূত্রেই জানা যাচ্ছে, পঞ্চায়েত প্রধানের হয়ে গুরুপদবাবুই মূলত আয়ুব আনসারির দাবিতে আপত্তি করেছিলেন। গুরুপদবাবুর অভিযোগ, “যে এলাকায় ওই রাস্তার কাজ হবে, সেটি ওই তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের এলাকায় হলেও তিনি চাইছিলেন কাজ তিনি করবেন। আয়ুব আনসারিই রাস্তার কাজ করবেন, এই মর্মে আমাকে লিখিত বয়ান দেওয়ার জন্য আমাকে চাপ দেওয়া হয়। আমি ওঁদের বলি, লিখে দিলেও কোনও কাজ হবে না। আমি তো পঞ্চায়েত সদস্য নই। পঞ্চায়েত যা সিদ্ধান্ত নেবে তা আমাকেও মানতে হবে। এ কথা শুনে ওরা আমাকে মারধর করে।” পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।
আয়ুব আনসারির অবশ্য দাবি, “ঘটনার সময় আমাদের দলের ব্লক সভাপতির সঙ্গে পুরুলিয়া ২ ব্লক অফিসে ছিলাম। ওই ঘটনায় আমরা কোনও যোগ নেই। আমাদের অপদস্থ করার জন্য সিপিএম মিথ্যা অভিযোগ রটাচ্ছে।” ব্লক তৃণমূল সভাপতি কাঞ্চন দিগরও বলেন, “ওই সময় আয়ুব আমার সঙ্গেই ব্লক অফিসে ছিলেন।” তাঁর কটাক্ষ, “আসলে সামনে পঞ্চায়েত নিবার্চন। তাই সিপিএম এ সমস্ত কথা বলে নজর অন্য দিকে ঘোরাতে চাইছে।” |