সুদৃশ্য এক কাগজে মোড়া পাত্রের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসা সোনালী বর্ণের আলোচ্ছটা ছাড়া দীপাবলির কথা ভাবাই যায় না। তুবড়ি, রংমশাল, মহাতাপ, কদম গাছ, হাঁস, হাউই, চরকি এই আতসবাজিগুলি ভিন্ন দীপাবলির আনন্দ অনেকটাই যেন ম্লান হয়ে যায়। কিন্তু দিন তিনেকের টানা বৃষ্টিতে কালীপুজো ও দীপাবলির আগে বাজি শিল্প অনেকটাই ব্যাকফুটে। অর্ডার সরাবরাহ নিয়ে চিন্তিত বাজি শিল্পীরা। ১৩ নভেম্বর কালীপুজো। তার মধ্যে রাত-দিন কাজ করলেও শেষ হবে কিনা তা জানা নেই তাঁদের।
রেজিনগরের ফরিদপুর গ্রামের রামপাড়ায় গিয়ে দেখা গেল এখনও বৃষ্টির রেশ যেন কাটেনি। আতসবাজির কারবারীদের বাড়ির সামনে জল ও কাদা। বাজির সরঞ্জামগুলি ঘর ও বারান্দায় ছড়ানো। কিন্তু বৃষ্টিতে কিভাবে তৈরি হবে বাজি? বাজি ব্যবসায়ী লালু শেখের কথায়, ‘‘কালীপুজোর আগে টানা বৃষ্টিতে ব্যবসা নিয়ে পথে বসার অবস্থা আমার। কারখানায় ১৩ জন কাজ করেন। সঙ্গে তাঁদের পরিবার। বৃষ্টিতে কাজ বন্ধ থাকলেও প্রত্যেককে দৈনিক দু’শো টাকা করে মজুরি দিতে হচ্ছে। বৃষ্টিতে কাজ করার জায়গা নেই। তাই বসে বসে ক্ষতির হিসাব করছি। আশা করি বৃহস্পতি- শুক্রবার নাগাদ আবার কাজ শুরু করতে পারব।”
বাজির কারিগর মতেলা বিবি বলেন, ‘‘প্রতিবছর এই সময় ব্যবসায় কিছুটা লাভের মুখ দেখা যায়। কিন্তু এ বছর বৃষ্টিতে তা মাটি হয়ে হয়ে গেল।’’ বাজি কোথায় কোথায় বিক্রি হয়? বাজি ব্যবসায়ীদের কথায়, ‘‘রেজিনগর, দোপুকুর, শক্তিপুর, বেলডাঙা, বহরমপুর, কান্দি সবখানেই যায়। তবে বাইরে পাঠাতে গেলে জেলাশাসকের অনুমতি লাগে।’’ এ বছর বাজির দাম কেমন যাচ্ছে? উত্তরে বাজি ব্যবসায়ী বিল্লাল শেখ জানান, “সাধারণভাবে কদম গাছ ১৫০০-২০০০ টাকা, হাঁস ৮০০-১০০০ টাকা, ভাল তুবড়ি ১০-৫০ টাকা, মহাতাপ ৩-৫ টাকা , ভাল চরকি ৪০০-৭০০ টাকা, হাউই ৮০-১০০ টাকা দরে বিকোচ্ছে।”
রেজিনগরের মানুষ তাই দিনরাত এক করে বাজি তৈরি করে কিছুটা লাভের মুখ দেখতে চাইছেন। তবে আগামি দিনগুলোর আকাশ তাঁদের চিন্তায় রেখেছে। |