|
|
|
|
|
|
|
বাড়ছে চাহিদা |
অম্লান শিখা
বিভূতিসুন্দর ভট্টাচার্য |
|
রাইস, এলইডি, লেজারের দাপটেও ম্লান হয়নি শিখা! নানা নতুন রূপে আর দু’দিন বাদেই, দীপাবলির রাতে জ্বলে উঠবে তারা। নতুন নতুন প্রদীপের পসরা নিয়ে হাজির বিক্রেতারা।
লক্ষ্মীপুজোর পরেই জমে ওঠে দীপাবলির আলোর বাজার। অবাঙালিদের মধ্যে প্রদীপের চাহিদা থাকলেও বাঙালিরা নানা বৈদ্যুতিন আলোই বেশি কিনতেন। কিন্তু এখন প্রদীপের চাহিদা বাড়ছে। কুমোরটুলির প্রদীপ ব্যবসায়ী সুবীর পাল বললেন, “বৈদ্যুতিন আলোর জন্য প্রদীপের চাহিদা কমে আসছিল। কিন্তু গত তিন-চার বছরে ছবিটা পাল্টেছে।”
কেন?
সুবীরবাবুর কথায়: “আগে সাদামাটা সাবেক প্রদীপ তৈরি হত। ক্রেতারা তা পছন্দ করছিলেন না। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে নানা ধরনের ফ্যান্সি প্রদীপ তৈরি শুরু হয়েছে। এখন অবাঙালিদের পাশাপাশি বাঙালিরাও ফ্যান্সি প্রদীপ কিনছেন। দীপাবলির পাশাপাশি গৃহসজ্জার কাজেও অনেকে প্রদীপ ব্যবহার করছেন।” যেমন, এ বারের চমক ‘ম্যাজিক প্রদীপ’। প্রদীপ উল্টো করে নীচের ফুটো দিয়ে তেল ভরতে হবে। কিন্তু প্রদীপ সোজা করলেও তেল পড়ে যাবে না। বিক্রেতাদের দাবি, এ প্রদীপ জ্বলতে পারে দু’ঘণ্টারও বেশি। এ ছাড়াও রয়েছে চাটনি প্রদীপ, মটকা প্রদীপ, হাতি প্রদীপ, স্টোন প্রদীপ, কচ্ছপ প্রদীপ ইত্যাদি নানা ধরনের প্রদীপ। প্রদীপ ব্যবসায়ী কল্পনা দাস বলেন, “প্রায় একশোর বেশি ডিজাইনের প্রদীপ পাওয়া যায়। এ বছর মোমের প্রদীপের
চাহিদা বেশি।”
|
|
দীপাবলির দিন দশেক আগেই কুমোরটুলি অঞ্চলের ট্রামলাইনের ধারে বসে যায় সারি সারি প্রদীপের দোকান।
এ ছাড়াও শিয়ালদহ, বৌবাজার, জগুবাবুর বাজার, লেকমার্কেট, গড়িয়াহাটেও বিক্রি হয় এই ফ্যান্সি প্রদীপ। শপিং মলগুলিতেও বিক্রি হয় নানা ধরনের সুসজ্জিত মাটির ও সুগন্ধি মোমের প্রদীপ।
নিউ আলিপুর থেকে কুমোরটুলিতে প্রদীপ কিনতে এসেছিলেন অনুরাধা রায়। তাঁর কথায়: “প্রদীপের বিকল্প নেই। বাড়তি আকর্ষণ হল এখন নানা ধরনের ফ্যান্সি প্রদীপ পাওয়া যাচ্ছে। দীপাবলির পরে ঘর সাজাতেও ওগুলো কাজে লাগে।” আর এক ক্রেতা রণজিৎ দত্ত বলেন, “নতুন ধরনের প্রদীপ তাড়াতাড়ি তেল শুষে নেয় না। জ্বলে দীর্ঘ ক্ষণ। দেখতেও সুন্দর।”
ব্যবসায়ীরা জানালেন, বেশির ভাগ প্রদীপ দত্তপুকুর, বনগাঁ, বারাসত, বারুইপুর ও বিধাননগরের খালপাড়ে তৈরি হয়। তার পরে কুমোরটুলিতে নিয়ে এসে চলে রং করার কাজ। বসানো হয় চুমকি, পুঁতি, কাচ ও রোলেক্স ডাস্ট। প্রদীপের আকার এবং সজ্জার উপরে দাম নির্ভর করে। আগে এ ধরনের প্রদীপ কলকাতায় পাওয়া যেত না। দিল্লি, পটনা, মুম্বই থেকে আনতে হত। এখন বিদেশেও রফতানিও হচ্ছে। প্রদীপ ব্যবসায়ী প্রদীপ মাঝি বললেন, “এ বার আমেরিকা, দুবাই ও মালয়েশিয়ায় প্রদীপ পাঠিয়েছি। বিদেশে রফতানির শুরু হয় এপ্রিল-মে থেকেই। চাহিদা এমনই যে কালীপুজোর ১৫ দিন পর থেকেই পরের বছরের কাজ শুরু হয়ে যায়।”
|
|
|
|
|
|