অন্য কালী

দশমুণ্ডাকালী:
শঙ্কর বোস রোডের মণি সান্যাল সিটি পার্কে দশমুণ্ডাকালী পুজোর আয়োজন করে দক্ষিণ চেতলা সর্বজনীন মহাকালী পুজো কমিটি। কালীর দশটি মাথা, হাত এবং পা। কমিটি সূত্রে খবর, এলাকার বাসিন্দা তান্ত্রিক শ্রদ্ধানন্দ সরস্বতী এই পুজোর প্রবক্তা। তিনিই পুজো করতেন। তাঁর মৃত্যুর পরে তারাপীঠের তান্ত্রিক পুজো করেন। প্রতিমার সামনে মাটি খুঁড়ে হোম করা হয়। থাকে ফল-বলির আয়োজন।

হাজার হাত কালী: রাখালদাস আঢ্য লেনের চেতলা ফিজিক্যাল কালচার অ্যাসোসিয়েশনের এই পুজো ৩০ বছরে পা দিল। মূল প্রতিমার দু’টি হাত। চালিতে থাকে ৯৯৮টি হাত। প্রতিমার বাঁ পা থাকে সিংহের উপরে। ডান পা পদ্মের উপরে। প্রতিমার ডান দিকে থাকে ধ্যানরত শিবের মূর্তি।

জীবন্ত কালী: চেতলা দুর্গাপুর ব্রিজ লাগোয়া আলিপুর রোডের উপরে দুর্গাপুর জাগরণী সঙ্ঘের এই পুজো ১৯ বছরে পা দিল। শ্যামাকালী ছাড়াও কামাক্ষ্যা, উগ্রকালী, অষ্টভূজা সিংহবাহিনী, ত্রিপুরেশ্বরী, জয়দুর্গা এবং ললিতাসুন্দরী এই ছ’রূপেও দেবীর পুজো হয়। ছ’জন বালিকাকে এই ছয় দেবীর রূপে সাজিয়ে পুজো হয়।
হাজার হাত কালী দশমহাবিদ্যা
দশমহাবিদ্যা: পিয়ারীমোহন রোডের ২৪ পল্লির চেতলা সর্বসাধারণের কালীপুজো কমিটির পুজো ৯৮ বছরে পা দিল। আদিকালী এবং শ্যামাকালীর পাশাপাশি কালী, তারা, ষোড়শী, ভুবনেশ্বরী, ভৈরবী, ছিন্নমস্তা, ধূমাবতী, বগলা, মাতঙ্গী এবং কমলা এই দশমহাবিদ্যার পুজো হয়। কালীপুজোর দিন শ্যামাকালীর পুজো হয়। পরের দিন আদিকালী এবং দশমহাবিদ্যার পুজো হয়।

চামুণ্ডা: এ বার ৬৬তম বর্ষ। দুর্গাপুর ব্রিজের কাছে আলিপুর আরাধনা সমিতি এই পুজোর আয়োজন করে। প্রতিমার চামুণ্ডা রূপ। পুরাণ অনুসারে, দুর্গার কপাল থেকে উদ্ভূতা এই দেবী চণ্ড ও মুণ্ড দুই দৈত্যকে বধ করে তাদের মুণ্ড দুর্গাকে দান করেন। তাই নাম চামুণ্ডা। এখানে প্রতিমার জিভ আলোর ব্যবহারে জীবন্ত বলে মনে হবে।
দশমুণ্ডাকালী রক্তচামুণ্ডা
রক্তচামুণ্ডা: চেতলা শান্তি আশ্রমের স্বামী সত্যানন্দ গিরির উদ্যোগে শুরু হয় চেতলা মিলন সঙ্ঘের পুজো। প্রতিমার রূপ রক্তচামুণ্ডা। পুরাণ অনুসারে, চিতা থেকে পুনর্জন্ম পাওয়া দানবরাজ রম্ভের আর একটি রূপ রক্তবীজ। যুদ্ধের সময় রক্তবীজের দেহ থেকে যত বিন্দু রক্ত মাটিতে পড়ত, ততগুলি দৈত্যের জন্ম হত। শম্ভু-নিশুম্ভের সঙ্গে যুদ্ধের সময় দেবরাজ ইন্দ্র বজ্র দিয়ে এদের ধ্বংস করতে গেলে শতসহস্র রক্তবীজের জন্ম হয়। মহাশক্তির অঙ্গ থেকে নির্মিত কালী এবং চামুণ্ডা রক্তবীজদের খেয়ে বিনাশ করেন। রক্তবীজ খাওয়ার জন্য দেবীর রং লাল হয়ে যায়। তাই নাম রক্তচামুণ্ডা। এ বার ৩২তম বর্ষ।

ডাকাতকালী: চেতলা রোডের উপর পাঁচ বছর ধরে প্রতিষ্ঠিত এই ডাকাত কালীর পুজো হয়। আগে মাটির প্রতিমায় পুজো হত। প্রতিমার উচ্চতা ২৪ ফুট।
জীবন্ত কালী
পঞ্চমুণ্ডা: চেতলা হাট রোডের প্রদীপ সঙ্ঘের এই পুজোর বয়স ২৬ বছর। প্রতিমার ধূমাবতী, শ্যামা, বগলা, রক্ষাকালী এবং চামুণ্ডা এই পাঁচটি মাথা। সব আয়োজন করেন পুরুষরা। পুজো করেন তারাপীঠের তান্ত্রিকেরা। পুজো শেষ হয়ে গেলেই ঘট বিসর্জন হয়ে যায়। ফল বলি হয়। উদ্যোক্তারা জানান, আগে এখানে শ্যামাকালীর পুজো হত। পরে বীরভূমের তান্ত্রিক শঙ্করাচার্য পঞ্চমুণ্ডার পুজো শুরু করেন।

এ ছাড়াও এই অঞ্চলে শিবকালী, চন্দ্রঘণ্টা, আদি চামুণ্ডা, শ্বেতকালী, কৃষ্ণকালী, জহুরা কালী, গোল্ডেন স্টারের কালী পুজো, সিংহবাহিনী, ব্লুস্টার, চেতলা পার্ক, অগ্রণী ক্লাবের পুজোও বিখ্যাত।


বাঘাযতীনের চিত্তরঞ্জন কলোনির সঙ্ঘমিত্র ক্লাবের এ বছরের কালীপুজোর থিম
‘ফিরে এসো শৈশব’। সম্প্রতি তারই খুঁটিপুজো হয়ে গেল ক্লাবের মাঠে। —নিজস্ব চিত্র




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.