শহরে রবীন্দ্র ভবন, ভাবনা আর্ট গ্যালারি তৈরির
ংস্কৃতি-চর্চার প্রসারে ‘রবীন্দ্র ভবন’ তৈরি হতে চলেছে মেদিনীপুর শহরে। বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা। অর্থ দেবে তথ্য সংস্কৃতি দফতর। প্রস্তাবিত ভবনেই আর্ট গ্যালারি তৈরির ভাবনা রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “রবীন্দ্র ভবন তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” শহরের অরবিন্দনগরে প্রস্তাবিত ভবন তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এখানে সরকারি জমি রয়েছে। ফলে জমি পেতেও সমস্যা হবে না।
মেদিনীপুরে বেশ কয়েকটি সভাগৃহ রয়েছে। জেলা পরিষদ চত্বরে রয়েছে ‘প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদন’, অদূরে ‘বিদ্যাসাগর হল, রবীন্দ্রনগরে ‘ফিল্ম সোসাইটি হল’। রয়েছে স্পোর্টস কমপ্লেক্সও। এক বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে শহরের সুভাষনগরে এই কমপ্লেক্সটি তৈরি হয়েছে। তবে অত্যাধুনিক পরিকাঠামোয় ‘রবীন্দ্র ভবন’ তৈরি হলে তা মেদিনীপুরের সংস্কৃতি-চর্চায় নতুন পালক হিসেবে যুক্ত হবে বলেই মনে করছেন সকলে।
গ্রামেগঞ্জে সংস্কৃতি-চর্চার প্রসারে এক সময় জেলার বিভিন্ন ব্লকে সভাগৃহ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই মতো পিংলা, কেশিয়াড়ি প্রভৃতি এলাকায় ইতিমধ্যে সভাগৃহ তৈরি হয়েছে। এখানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যেতে পারে। একসঙ্গে অনেক দর্শক অনুষ্ঠান দেখতে পারেন। কেশিয়াড়ির সভাগৃহের নামও ‘রবীন্দ্র ভবন’, পিংলার সভাগৃহের নাম দেওয়া হয়েছে ‘রবীন্দ্র সদন’। কেশিয়াড়ির ক্ষেত্রে ভবন তৈরিতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা। পিংলার ক্ষেত্রে প্রায় ২ কোটি টাকা। মেদিনীপুরের প্রস্তাবিত ভবনে অত্যাধুনিক পরিকাঠামোর পরিকল্পনা রয়েছে।
ঠিক কেমন হবে এই ভবন?
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি বলেন, “রবীন্দ্র ভবনে প্রায় দেড় হাজার আসন রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আর্ট গ্যালারি তৈরির কথাও ভাবনায় রয়েছে। পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়নি। তবে ভবন তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রস্তাব আসছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” তাঁর কথায়, “প্রস্তাবিত ভবন তৈরির জন্য প্রায় ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে।”
এক সময় মেদিনীপুর শহরের অধিকাংশ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানই হত জেলা পরিষদ চত্বরে থাকা ‘প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনে’। প্রায় দেড় হাজার আসন রয়েছে এখানে। শহরের বাকি সভাগৃহে আসন সংখ্যা এর চেয়ে কম। পরে অবশ্য মেদিনীপুর জেলা স্পোটর্স ডেভেলপমেন্ট অ্যাকাডেমির উদ্যোগে স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরি হয়। জেলা পরিষদের ‘প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনটি’ দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কারের অভাবে ধুঁকছিল। বৃষ্টি হলেই ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ত। পরিস্থিতি দেখে বছর খানেক আগে এই সভাগৃহ সংস্কারের কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। গত বছরের শেষের দিকে সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনের এখন নতুন চেহারা। পুরো ভবনটি বাতানুকূল করা হয়েছে। বসানো হয়েছে নতুন চেয়ার। সব মিলিয়ে ভবনটিকে অত্যাধুনিক করারই চেষ্টা করেছেন কর্তৃপক্ষ।
‘রবীন্দ্র ভবন’ তৈরির ক্ষেত্রেও এমন চেষ্টা থাকবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। ওই সূত্রের খবর, প্রকল্পটি নিয়ে ইতিমধ্যে জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্তর সঙ্গে কথা বলেছেন জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের আধিকারিক কৌশিক নন্দী। কী ভাবে প্রকল্পের কাজ এগোবে, ঠিক কী কী পরিকাঠামো রাখা যেতে পারে, এ সব নিয়েই আলোচনা হয়েছে। এরই মধ্যে আবার মেদিনীপুর লিটল ম্যাগাজিন অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকেও মেদিনীপুরের বিধায়কের কাছে একটি আবেদনপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। যেখানে দুই মেদিনীপুর থেকে প্রকাশিত লিটল ম্যাগাজিনগুলি সংগ্রহ করে রাখার জন্য রবীন্দ্র ভবন চত্বরে একটি ঘর বরাদ্দের আবেদন করা হয়েছে। অ্যাকাডেমির পক্ষে ঋত্বিক ত্রিপাঠি বলেন, “লিটল ম্যাগাজিনগুলি সংগ্রহ করে রাখার পাশাপাশি আমরা আর্ট গ্যালারি তৈরির প্রস্তাবও রেখেছি। এর ফলে চিত্রশিল্পীরা প্রদর্শনী করতে পারবেন।” তাঁর কথায়, “দুই মেদিনীপুর থেকে প্রায় ৩০০টি লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়। এগুলি সংগ্রহ করে রাখার ব্যবস্থা হলে ম্যাগাজিনের সম্পাদক-সংগঠক থেকে পাঠক, সকলেই উপকৃত হবেন।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.