|
|
|
|
দলের ‘বিগ বস’-এর নির্দেশে ইনিংস ছাড়ছেন সিধু
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
টানা এক মাস ধরে ক্রিজে টিকে ছিলেন। কখনও ঠুকে ঠুকে। কখনও লোপ্পা বল সপাটে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে।
কিন্তু এ বার মাঠের বাইরে যেতে হচ্ছে নভজোৎ সিংহ সিধুকে। কোনও চোট ছাড়াই। ‘বিগ বস’-এর ডেরায় আর নয়। সিধুকে এই নির্দেশ দিয়েছেন তাঁর দল বিজেপির ‘বিগ বস’রা।
হিমাচলে ভোট হয়ে গেল। গুজরাতে ভোট আসন্ন। অথচ দলের তারকা প্রচারক মাসের পর মাস মহারাষ্ট্রের এক বিলাসবহুল বন্ধ ভিলায় নামী-অনামী ‘সেলিব্রিটি’দের সঙ্গেই শুধু ঘর করবেন, তা কী করে হয়! ক্রিকেটার-ধারাভাষ্যকার ছাড়াও সিধুর রাজনৈতিক পরিচয়টাও তো যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। ফলে দলের নেতারা মনে করছেন, সুবক্তা সাংসদের এখন ভোট প্রচারেই মন দেওয়াটা বেশি জরুরি। বিজেপি সূত্রের খবর, সিধু আজই বিগ বস থেকে বেরিয়ে এসেছেন। আগামিকাল সেই এপিসোডটি সম্প্রচারিত হতে পারে।
নিজে যতই দুর্নীতির অভিযোগে বিব্রত থাকুন, এ ক্ষেত্রে বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ীর সক্রিয়তা ছিল দেখার মতো। তিনি স্বয়ং সিধুর স্ত্রী নভজোৎ কৌরকে ফোন করে বলেছিলেন, স্বামীকে যেন তিনি প্রতিযোগিতা থেকে বার করে আনেন। হিমাচলে হয়নি, অন্তত গুজরাতে সিধু দলের হয়ে প্রচারটা করুন। নরেন্দ্র মোদীও চাইছেন, সিধু গুজরাতে যান। গুজরাত থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে তারকা প্রচারকদের যে তালিকা পাঠানো হয়েছে, তাতে সিধুর নামও রয়েছে। স্বভাবতই এই অবস্থায় দিনের পর দিন সিধুর বিগ বস-এ মজে থাকাটা ভাল ভাবে নিচ্ছেন না বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ।
যদিও এর আগে বিভিন্ন কমেডি-শোয়ে বিচারকের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে সিধুকে। গত বছরই বিগ বস-এ যোগ দিতে পা বাড়িয়ে রেখেছিলেন। সে বার সামনে পঞ্জাবের নির্বাচন থাকায় দল তাঁকে নিরস্ত করেছিল। কিন্তু এ বার তিনি সটান বিগ বস-এ ঢুকে পড়ায় আর ক্ষোভ গোপন করেননি বিজেপি শীর্ষ নেতারা। বেঙ্কাইয়া নাইডু যেমন সাফ বলেছেন, “টুকটাক কোনও শো-এর বিচারক হওয়া এক কথা। আর টানা তিন মাস বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করে এক বন্ধ ঘরে কাটানো কি সক্রিয় রাজনীতিকদের শোভা দেয়? সিধুর উচিত ছিল পত্রপাঠ এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা।”
দলের নেতৃত্বের এই মনোভাব দেখেই সিধুর স্ত্রী চ্যানেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, যাতে অবিলম্বে তাঁকে প্রতিযোগিতা থেকে বার করে আনা যায়। তবে দলের অনুমতি নিয়েই সিধু বিগ বস-এ গিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, সিধু ভেবেছিলেন বিগ বসের ঘরে তিনি বেশি দিন টিকবেন না। ঘরের সতীর্থরা তাঁকে পছন্দ করবেন না। কিন্তু এত দিন যে তিনি সেখানে থেকে যাবেন, সেটা হয়তো সিধু নিজেও ভাবেননি।
তবে বিজেপি শিবিরেরই অনেকে মনে করেন, সিধু যে ভাবে রয়েছেন, তাতে তাঁর ভাবমূর্তি উজ্জ্বলই হচ্ছে। পঞ্জাবে তাঁর জনভিত্তিতে ভাটা পড়ছিল। এই সুযোগে সিধু সে দিকটাও ঝালিয়ে নিলেন। বিগ-বস-এ তিনিই সবথেকে প্রবীণ ও অভিজ্ঞ হওয়ার সুবাদে শো-এর জীবনরেখাও হয়ে উঠেছেন। এর আগে রাজনীতির দুনিয়া থেকে সঞ্জয় নিরুপমও এই খেলায় যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু শুরুতেই বেরিয়ে এসেছেন। সেই তুলনায় এখানেও কংগ্রেসকে টেক্কা দিয়েছেন বিজেপির সাংসদ। কিন্তু একই সঙ্গে নেতারা বলছেন, সিধুর বোঝা উচিত, মনোরঞ্জন দুনিয়ার বিগ বস-এর থেকে রাজনীতির দুনিয়ার বিগ-বস অনেক বেশি প্রভাবশালী! |
|
|
|
|
|