|
|
|
|
নৈশভোজে মৈত্রী-বার্তা মুলায়মকে
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ইউপিএ থেকে তৃণমূল সমর্থন প্রত্যাহারের পর সংসদের উভয় কক্ষেই এখন সংখ্যালঘু সরকার। পরিবর্তিত সেই রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বিরোধীরা যখন আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে সরকারকে আরও কোণঠাসা করার কৌশল নিচ্ছে, তখন ইউপিএ-র শরিক ঐক্য এবং সমর্থক দলগুলির সঙ্গে আস্থা বাড়ানোর প্রয়াসে নেমে পড়লেন সনিয়া গাঁধী ও মনমোহন সিংহ।
সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের আগে আজ সমাজবাদী পার্টি নেতা মুলায়ম সিংহ ও তাঁর পুত্র অখিলেশ যাদবকে নৈশভোজে নিমন্ত্রণ করেন প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেস সূত্রে খবর, পরশু, রবিবার ইউপিএ-র শরিক দলগুলির নেতাদেরও নৈশভোজে নিমন্ত্রণ জানাবেন মনমোহন। বহুজন সমাজ পার্টি, আরজেডি-র মতো সমর্থক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী ও ইউপিএ সভানেত্রী। যদিও এর পরেও শীতকালীন অধিবেশন যে সুষ্ঠু ভাবে চালানো সম্ভব হবে সেই আশা করছেন না কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। বরং কংগ্রেসের কাছে স্পষ্ট যে, বিজেপি ও বামেদের পাশাপাশি এ বার তৃণমূলও সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হয়ে সংসদ অচল করতে সক্রিয় হবে। মূলত খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি, রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি ছাঁটাই, ডিজেল এবং সারের মূল্যবৃদ্ধি নিয়েই সরকারকে কোণঠাসা করতে চাইবে তারা। কিন্তু কংগ্রেসের প্রধান উদ্বেগ হল, তামাম বিরোধী দল যদি একত্রিত হয়ে কোনও বিষয়ে আলোচনা ও ভোটাভুটি দাবি করে তা হলে সরকার বিপদে পড়ে যাবে। সেই পরিস্থিতিতে ইউপিএ-র বর্তমান শরিকদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখা যেমন প্রয়োজন, তেমনই প্রয়োজন মুলায়ম-মায়াবতীর মতো সমর্থক দলের নেতাদের পাশে পাওয়া। এঁদের ছাড়া সংসদের উভয়কক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাতে পারবে না সরকার। মুলায়ম ও অখিলেশকে নৈশভোজে ডাকার তাৎপর্য সেখানেই।
কংগ্রেস শীর্ষ নেতাদের মতে, মায়াবতী মুখে যা-ই বলুন, উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পর তিনি এমন কিছু করবেন না যাতে কেন্দ্রে ইউপিএ সরকারের পতন হয়। কিন্তু লোকসভা ভোট এগিয়ে এলে মুলায়মের লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। আর সেই কারণে এই বর্ষীয়ান সমাজবাদী নেতাকে নিয়েই এখন বড় চিন্তা কংগ্রেসের।
সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে শুধু সরকার টিকিয়ে রাখা নয়, প্রধানমন্ত্রীর আরও চিন্তার বিষয় রয়েছে। তা হল, জমি বিল ও খাদ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত বিল সংসদের চলতি অধিবেশনে পাশ করানো। এ ব্যাপারে সরকার দীর্ঘদিন ধরে প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছে। তা ছাড়া লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে এই দু’টি বিল পাশ করানো অপরিহার্য বলে মনে করেন দলের নেতারা। কংগ্রেস চাইছে সে ক্ষেত্রে বিরোধীরা বাধা দিলেও শরিক ও সমর্থকদের পাশে নিয়ে বিল দু’টি পাশ করাতে।
তবে বিল দু’টি পাশ করাতে সরকার কতটা সফল হয়, তাও দেখার। কারণ বিপরীত রণকৌশল সাজাচ্ছে বিজেপি তথা বিরোধীরাও। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে লোকসভার অন্তর্বর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সংসদে সরকার একাধিক বিল পাশ করিয়ে নিয়ে রাজনৈতিক কৃতিত্ব নিলে বিজেপি-র লাভ কিছু হবে না। তাই সংসদ অচল করতে চেষ্টার কসুর করছে না তারা। তাই তাদের লক্ষ্য, গ্যাস ও খুচরো নিয়ে বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলা, যাতে সরকারের সংখ্যালঘু অবস্থাটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া যায়। |
|
|
|
|
|