কথা চলছিল বেশ কিছু দিন ধরে। শেষ পর্যন্ত ইউনাইটেড স্পিরিট্স-এর সিংহভাগ শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েই নিলেন বিজয় মাল্য। ইউবি গোষ্ঠীর ওই সংস্থার ৫৩.৪% অংশীদারি কিনছে বিশ্বের বৃহত্তম মদ বহুজাতিক ডিয়াজিও। ফলে ১১,৫৫০ কোটি টাকা ঢুকছে মাল্যের ভাঁড়ারে। যা চলতি বছরে এ পর্যন্ত কোনও বিদেশি সংস্থার ভারতে বৃহত্তম অধিগ্রহণ।
তবে প্রায় ডুবন্ত কিংফিশারকে বাঁচাতে ইউনাইটেড স্পিরিটস-কে বেচে দিচ্ছেন, এই জল্পনা শুক্রবার উড়িয়ে দেন মাল্য। তিনি বলেন, “এই অর্থের এতটুকুও কিংফিশার চাঙ্গা করতে খরচ হবে না।” তবে এই মুহূর্তে কিংফিশারের কাছে এই অর্থই একমাত্র রুপোলি রেখা হয়ে দেখা দেবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল ও ঋণদাতারা। |
এক যৌথ বিবৃতিতে শুক্রবার ব্রিটেনের বহুজাতিক সংস্থাটি জানিয়েছে, ইউনাইটেড ব্রুয়্যারিজ হোল্ডিং (ইউবিএইচএল) ও ইউনাইটেড স্পিরিট্স (ইউএসএল)-এর সঙ্গে তাদের চুক্তির কথা। সেখানে বলা হয়, প্রাথমিক ভাবে ভারতের বৃহত্তম মদ প্রস্তুতকারক ইউএসএল-এর ২৭.৪% শেয়ার কিনবে তারা। শেয়ার পিছু দেবে ১,৪৪০ টাকা। যা বৃহস্পতিবার সংস্থার বাজার বন্ধকালীন দরের থেকে ৭% বেশি। এর পর নিয়ম মাফিক বাকি ২৬% বাজার থেকে কেনার জন্য খোলা প্রস্তাব দেওয়া হবে। ডিয়াজিও জানিয়েছে, সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে ওই অংশটুকু নিতেও শেয়ারে ১,৪৪০ টাকাই দেবে তারা। চুক্তিতে সই করেন মাল্য ও ডিয়াজিও-র সিওও ইভান মেনেজেস। অবশ্য সংস্থার চেয়ারম্যান মাল্যই থাকছেন।
শুক্রবার সেনসেক্স ১৬৩ পয়েন্ট পড়লেও, বেড়েছে কিংফিশার, ইউএসএল ও ইউবিএইচএল-এর শেয়ার দর। বিজয় মাল্যের সংস্থার রাহুমুক্তির সম্ভাবনাই যার কারণ বলে বাজারের একাংশের ধারণা। যেমন, কিংফিশারের ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলির কনসোর্টিয়ামের প্রধান ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছে। কনসোর্টিয়াম নতুন মূলধন জোগানো বা লগ্নিকারী জোগাড়ের জন্য সংস্থাকে ৩০ নভেম্বরের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল।
এই অধিগ্রহণের ফলে অবশ্য কম লাভবান হবে না স্মার্নঅফ বা জনি ওয়াকারের মতো ব্র্যান্ডের অধিকারী ডিয়াজিও। ম্যাকডাওয়েল’স নম্বর ওয়ান, রয়্যাল চ্যালেঞ্জ, হোয়াইট মিসচিফ বা ব্ল্যাক ডগ-এর মতো ব্র্যান্ড আসবে তাদের হাতে। ভারতের বিশাল বাজারে দখল দ্রুত বাড়াতে পারবে তারা।
৩০ সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ইউএসএলের নিট মুনাফা ৭৩.৪৬% কমে ৩৯.২৭ কোটি টাকা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থা। |