নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সেট-টপ বক্স বসানো নিয়ে সময়সীমার কোনও পরিবর্তন হবে না বলে জানিয়ে দিল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মণীশ তিওয়ারি জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে, কমিটি গড়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়ার প্রশ্নই নেই। এ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতের পথে হাঁটছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
মমতা এ দিন বলেন, “আমি সি এম জাটুয়াকে (প্রাক্তন কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী) ফোন করেছিলাম। উনি বললেন তাঁর কিছু জানা নেই। তাঁর কাছে এটা আনা হয়নি।”
কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, ২০১২-এর ২১ অগস্ট লোকসভায় এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে জাটুয়া বলেছিলেন, সেট টপ বক্স চালুর শেষ সময়সীমা ৩১ অক্টোবর ধার্য হয়েছে। ডিজিটাইজেশনের জন্য ২০০৪ সাল থেকে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানিয়ে জাটুয়া বলেছিলেন, রাজ্য সরকারগুলির সহযোগিতা চেয়ে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হয়েছে।
|
আর এক দিন পরেই চালু হচ্ছে ডিজিটাল পরিষেবা। সল্টলেকের
একটি কেবল সংস্থার অফিসে কাজে ব্যস্ত কর্মী। —নিজস্ব চিত্র |
এখন কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বে কিছুটা হলেও বিপাকে জি, সোনির মতো সম্প্রচার ও মাল্টি সার্ভিস অপারেটর (এমএসও) সংস্থাগুলি। জি নেটওয়ার্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জহর গোয়েলের বক্তব্য, তাঁরা এই দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়তে চান না। তাঁদের লাইসেন্স নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্র। সংসদে পাশ হওয়া আইন না মানলে তাঁদের ও এমএসওদের লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। তাঁর প্রশ্ন, লাইসেন্স বাতিল হলে কে তাঁদের সাহায্য করবে।
সোনি, জি, স্টারের মতো ব্রডকাস্টার সংস্থাগুলির প্রশ্ন, টেলিভিশনে সম্প্রচারের গোটা বিষয়টিই বৈদ্যুতিন ব্যবস্থায় পরিচালিত হয়। বুধবারের পর বিভিন্ন পে-চ্যানেলের সদর দফতর থেকে কলকাতা-সহ চার মেট্রো রাজ্যে অ্যানালগ সিগন্যাল বন্ধ করে দেওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে কলকাতায় বসে রাজ্য সরকার কী ভাবে তা আটকাবে? তাঁদের আশঙ্কা, এমএসওদের উপর জোর খাটিয়ে ডিজিটাল সম্প্রচারকে ‘স্টেপ ডাউন’ পদ্ধতির মাধ্যমে অ্যানালগ করাতে পারে রাজ্য সরকার।
সেট-টপ বক্স লাগানো বাধ্যতামূলক করার নির্দেশে দুর্নীতিরও গন্ধ পেয়েছে রাজ্য। দুটি চিনা সংস্থার সেট-টপ বক্স তৈরির ‘বরাত’ পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। ঘটনা হল, এই যন্ত্র কেনায় কেন্দ্রীয় সরকার কোনও দিনই ‘বরাত’ দেয়নি। সারা দেশেই যন্ত্রগুলি কেনে এমএসও সংস্থাগুলি। তাদের কাছ থেকে কেবল অপারেটরেরা নিয়ে গ্রাহককে বিক্রি করেন। রাজ্যের এক এমএসও সংস্থার কর্তা জানিয়েছেন, বাজারে যে-যন্ত্র সস্তায় পাওয়া যায়, সেটাই কেনা হয়। এ ক্ষেত্রে চিনা যন্ত্র সস্তা। তাই তা আমদানি করা হয়। এ নিয়ে কেন্দ্র কোনও দিনই কোনও নির্দেশ দেয়নি। |