পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের উত্তপ্ত হচ্ছে শাসন। সোমবার সন্ধ্যায় শাসন বাজারে তৃণমূলের দুই নেতা-কর্মীর উপরে দলেরই বহিষ্কৃত এক নেতার মদতে সিপিএম-আশ্রিত কিছু দুষ্কৃতী হামলা চালায় বলে অভিযোগ। শাসনের তৃণমূল পর্যবেক্ষক শহিদুল ইসলাম এবং দলের কর্মী মোহন পালকে ভর্তি করা হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে। থানায় লিখিত অভিযোগে শহিদুল দাবি করেছেন, দলের বহিষ্কৃত নেতা আমিনুদ্দিন সশস্ত্র কিছু লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এই ঘটনা তৃণমূলেরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ। সিপিএম নেতৃত্বও সেই দাবি করেছেন। যদিও তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পর্যবেক্ষক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “সামনে পঞ্চায়েত ভোট। সিপিএম-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এলাকায় ঢুকতে শুরু করেছে। ভোটের আগে ওরা এলাকা উত্তপ্ত করতে চাইছে। সোমবারের ঘটনায় তারাই জড়িত।”
অভিযোগ অস্বীকার করে সিপিএমের জেলা নেতা অমিতাভ নন্দী বলেন, “শাসন তথা বারাসত ২ ব্লকে বিধানসভা ভোটের পর থেকেই আমাদের দলের বহু নেতা-কর্মী এলাকা ছাড়া। তৃণমূল হুমকি দিয়েছে, হয় ওদের দলে যোগ দিতে হবে, না হলে এলাকায় থাকা যাবে না।”
অমিতাভবাবুর আরও দাবি, “বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের নিজেদের মধ্যেই বিবাদ আছে। শাসনেও আছে। ওদের নিজেদের মধ্যে মারামারি হয়ে থাকতে পারে।” অমিতাভবাবু আরও বলেন, “শাসন থেকে আমাদের দলের কিছু কর্মী-সমর্থক গত শনিবার জেলা পার্টি অফিসে এসেছিলেন। তাঁরা ফিরতেই তৃণমূলের লোকজন তাঁদের মারধর করেছে।” এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ হয়নি। মারধরের কথা অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
সোমবার শাসনে যাঁর মদতে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ, সেই আমিনুদ্দিনকে দলবিরোধী কাজে যুক্ত থাকায় লোকসভা ভোটের আগেই সাসপেন্ড করা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু। আমিনুদ্দিন এ দিন বলেন, “দল বহিষ্কার করার পর থেকে আমি তো বাড়ি থেকেই বেরোই না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।” তৃণমূল সূত্রের খবর, ভোটের আগে শাসনে বহিরাগতদের আনাগোনা বাড়ছে কিনা, তা লক্ষ্য রাখতে একটি ‘নজরদারি টিম’ তৈরি করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসে ‘শাসন চলো’র ডাক দিয়েছে তৃণমূল। সব মিলিয়ে ভোটের আগে ফের সরগরম হতে চলেছে শাসন। |