পশ্চিমে ইন্দিরা আবাস
তিন মাসে অগ্রগতি নামমাত্রই, ক্ষোভ
২ থেকে বেড়ে ৩৪ শতাংশ। তিন মাসে অগ্রগতি বলতে এটুকুই। বৈঠক হচ্ছে। দ্রুত কাজ শেষের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। অথচ ইন্দিরা আবাস যোজনায় কাজের অগ্রগতি সে ভাবে হচ্ছে না। পশ্চিম মেদিনীপুরের জন্য বরাদ্দ টাকার ৬৬ শতাংশই পড়ে রয়েছে। এই পরিমাণ টাকা ঠিকমতো খরচ হলে ১০ হাজারেরও বেশি বাড়ি তৈরি হতে পারত। ইন্দিরা আবাস যোজনার কাজ কেমন চলছে, তার পর্যালোচনা করতে গিয়ে এই তথ্যই পেয়েছেন জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। এমন গড়িমসি চলতে থাকলে চলতি আর্থিক বছরে প্রকল্পের বরাদ্দ পেতে বেশ সমস্যায় পড়তে হতে পারে বলেই আশঙ্কা। সমস্যার কথা মেনে জেলা পরিষদ সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়ের অভাব দেখা দিচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে। প্রশাসনে সমন্বয় না থাকলে সমস্যা হবেই। এ ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। পরিস্থিতি দেখে বিডিওদের দ্রুত পদক্ষেপ করতে বলেছি।”
জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ প্রকল্পের শেষ পর্যালোচনা করেছেন অক্টোবরের গোড়ায়। তাতেই দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন ব্লকে ইন্দিরা আবাস যোজনার ৫৭ কোটি ৭২ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা পড়ে রয়েছে। নারায়ণগড়ে পড়ে রয়েছে ৪ কোটি ৬৭ লক্ষ ৩ হাজার, মোহনপুরে ২ কোটি ২৮ লক্ষ ৬৯ হাজার, ঘাটালে ৩ কোটি ৭০ লক্ষ ৮৮ হাজার, ঝাড়গ্রামে ২ কোটি ৩০ লক্ষ ৪৬ হাজার, খড়্গপুরে ১ ব্লকে ৪ কোটি ৪৪ লক্ষ ১৯ হাজার। জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, তিন মাস আগে একবার প্রকল্পের পর্যালোচনা করা হয়েছিল। তখন দেখা গিয়েছিল, মোট বরাদ্দের মাত্র ২২.৩ শতাংশ টাকা খরচ হয়েছে। আর শেষ পর্যালোচনায় দেখা গিয়েছে, মোট বরাদ্দের মাত্র ৩৩.৫১ শতাংশ টাকা খরচ হয়েছে। এই প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য একজন উপভোক্তার ক্ষেত্রে ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ হয়। দু’ভাগে টাকা দেওয়া হয়।
প্রকল্পের কাজ এগোতে ঠিক কী কী সমস্যা হচ্ছে? জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ইট-বালি-স্টোনচিপস্ বাড়ি তৈরির যাবতীয় সরঞ্জামের দাম বেড়েছে। কিন্তু প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়েনি। নিয়ম অনুযায়ী ইন্দিরা আবাসে পাকা বাড়ি তৈরির কথা। কিন্তু অনেক উপভোক্তাই জানিয়েছেন, বরাদ্দ টাকায় পাকা বাড়ি তৈরি সম্ভব নয়। ফলে একাংশ উপভোক্তা বাড়ি তৈরি করতেই নারাজ। সেই সঙ্গে গ্রামস্তরে ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা’র জন্যও প্রকল্পের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এই প্রকল্প নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আবার নানা অভিযোগ ওঠে। তালিকায় নাম নেই, এমন কাউকে বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে অর্থ আদায়, প্রথম ভাগের টাকা আত্মসাতের মতো অভিযোগ নতুন নয়। কিছু ক্ষেত্রে আবার অনেক ভূমিহীন ইন্দিরা আবাসের তালিকায় থেকে যেতেন। টাকা পেলেও জমির অভাবে বাড়ি বানাতে পারতেন না। কখনও অন্য কোনও একটি জমিতে তাঁর বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হত। প্রাপ্য অর্থে বাড়ি হলেও গরিব মানুষটি তাঁর প্রকৃত মালিক হতে পারতেন না। সেই জমি খাস বা অন্য কারও হত।
অভিযোগ, প্রকল্পের কাজ এগোতে তৎপর হচ্ছে না পঞ্চায়েত সমিতিগুলি। ফলে, বরাদ্দ অর্থ পড়ে থাকছে। কাজে গড়িমসি হচ্ছে। জেলা পরিষদের অবশ্য বক্তব্য, এখন বিডিওদেরই বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে বলেছে রাজ্য। এই প্রকল্পেও বিডিওদের দায়িত্ব রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের সঙ্গে তাঁদের সমন্বয়ের ‘ঘাটতি’ থেকে যাচ্ছে। এর ফলে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। জেলা পরিষদের এক আধিকারিক বলেন, “প্রকল্পের গতি বাড়ানো প্রয়োজন। এ ভাবে কাজ চলতে থাকলে চলতি আর্থিক বছরের বরাদ্দ পেতে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে আবার ইউ সি (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) চেয়ে রাজ্য থেকে চাপ আসছে।” জেলা পরিষদের সভাধিপতিও মানছেন, “প্রকল্পের কাজ স্বাভাবিক গতিতে এগোচ্ছে না, এটা ঠিক। ব্লকে ব্লকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। অনেক পঞ্চায়েত সমিতিই ভাল কাজ করছে। তবে কয়েকটি এলাকায় কিছু সমস্যা রয়েছে। সমস্যার কথা রাজ্য সরকারকেও জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সরকার নিশ্চয়ই পদক্ষেপ করবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.