|
|
|
|
চাপানউতোরে উন্নয়নেই প্রশ্ন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
কংগ্রেস-তৃণমূলের চাপানউতোরে শহরের উন্নয়ন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে খড়্গপুরে। রেলশহরের ৩৫টি ওয়ার্ডের উন্নয়নে সব মিলিয়ে বরাদ্দ হয়েছে ৫ কোটি ৫৪ লক্ষ ৯৩৭ টাকা। তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার দাবি, আগে কখনও এত টাকা বরাদ্দ হয়নি। তবে এতে সব ওয়ার্ডে কাজ হবে কি না, তা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে। কংগ্রেসের কাউন্সিলদের সিদ্ধান্ত, বরাদ্দ অর্থে নিজেদের ওয়ার্ডে কোনও কাজ করবেন না।
কেন এমন সিদ্ধান্ত? প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পান্ডে বলেন, “ওই অর্থে কাজ করার প্রশ্নই নেই। যে মিটিং থেকে ওয়ার্ড উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, সেটি অবৈধ।” কিন্তু উন্নয়ন? রবিশঙ্করবাবুর বক্তব্য, “ক’দিনের তো ব্যাপার। আমরাই পুরসভার ক্ষমতায় আসছি। তখন কাজ হবে।” চলতি মাসের ১৮ তারিখ পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে ওয়ার্ডের উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ হয়। সেই মিটিংয়ে অবশ্য যোগ দেননি কংগ্রেস-শিবিরের কাউন্সিলরেরা। মিটিং ডেকেছিলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরপ্রধান তৃণমূলের তুষার চৌধুরী। কংগ্রেসের বক্তব্য, তিনি মিটিং ডাকতে পারেন না। জনসংখ্যার ক্রম অনুযায়ী ( বেশি থেকে কম) খড়্গপুরের ওয়ার্ডগুলি তিন ভাগে বিভক্ত। ৩৫টির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে ২২টি ওয়ার্ড। ‘বি’তে ৪টি ও ‘সি’তে ৯টি ওয়ার্ড রয়েছে। বোর্ড মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ‘এ’ ক্যাটাগরির ওয়ার্ডগুলির জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৫ লক্ষ টাকা। ‘বি’ ক্যাটাগরির ওয়ার্ডগুলির জন্য সাড়ে ১১ লক্ষ টাকা। আর ‘সি’ ক্যাটাগরির ওয়ার্ডগুলির জন্য প্রায় ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা।
বরাদ্দ অর্থে নতুন রাস্তা তৈরি, রাস্তা সংস্কার, নিকাশির উন্নয়ন, আলোর কাজ করা যেতে পারে। খড়্গপুরে কংগ্রেস-শিবিরে কাউন্সিলর ১৫ জন। এই ১৫টি ওয়ার্ডে উন্নয়ন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রবিশঙ্করবাবুর বক্তব্য, “পুর-আইন মেনে আগেই ৩ জন কাউন্সিলর বোর্ড মিটিং ডেকেছিলেন। তাতে আমাকে পুরপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। তারপরও দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরপ্রধান মিটিং ডাকেন কী ভাবে?” তুষারবাবু অবশ্য বলেন, “বৈধ ভাবেই বোর্ড মিটিং হয়েছে। সেখানে ১৮ জন কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরের উপস্থিতিতেই ওয়ার্ড উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।” বরাদ্দ অর্থে উন্নয়নের কাজে আপত্তি নেই বাম কাউন্সিলরদের। পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের অনিতবরণ মণ্ডল বলেন, “আমরা সব সময় উন্নয়নের পক্ষে। অনেকদিন ধরেই উন্নয়নের অর্থ এসে পড়েছিল। তবে কাজ হচ্ছিল না।” তাঁর কথায়, “মূলত দু’টি কারনেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এক, পুরবোর্ডের পরিকল্পনার অভাব। দুই, নিজেদের মধ্যে টানাটানি। এ বার অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। কাজ হলেই আমরা খুশি। তাতে শহরেরই উন্নয়ন হবে।”
খড়্গপুর পুরসভা নিয়ে পুর- দফতরের একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছনো উচিত বলে মনে করে বামফ্রন্টও। তাদের বক্তব্য, এ ভাবে পুরসভা চলতে পারে না। |
|
|
|
|
|